হাতিয়ায় মেঘনা তীরের অর্ধলক্ষ জেলে বেকার
ইলিশ রক্ষায় গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত টানা চার মাস মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে নোয়াখালী জেলা মৎস্য অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন।
কিন্তু, নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার প্রায় অর্ধলক্ষ জেলে মেঘনা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। নদীতে সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন তারা বেকার হয়ে অলস জীবন কাটাচ্ছেন। এদের মধ্যে কিছু সংখ্যক জেলে সরকারি ত্রাণ সহায়তা পেলেও, বাকিরা মহাজন থেকে ধার-দেনা করে সংসার চালাচ্ছেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ডা. মো. মোতালেব হোসেন বলেন, “জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আগামী চার মাস নদীতে সকল ধরনের জাল ফেলা ও মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এসময় ইলিশ আহরণ, পরিবহণ, বাজারজাত ও মজুদ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারি নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে মেঘনা নদীতে জেলা মৎস্য বিভাগ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে জেলেদেরকে সচেতন করতে নদী এবং উপকূলবর্তী এলাকায় মাইকিং, পোস্টার ও লিফলেট বিতরণ এবং সচেতনতামূলক সভাসহ নানা কর্মসূচী পালন করা হয়েছে।”
হাতিয়ার চেয়ারম্যান ঘাটের তিন জেলে জমির মাঝি, মোতালেব মাঝি ও হোসেন মাঝি। তারা জানান, নদীতে মাছ ধরতে না পেরে শুয়ে-বসে ও জাল বুনে অলস সময় পার করছেন তারা। এদিকে দিনে দিনে মহাজনের দেনা বেড়েই চলছে।
আক্ষেপের সুরে তারা আরও জানান, বিগত ২০ বছরেরও অধিক সময় ধরে মেঘনা নদীতে তারা মাছ ধরে আসলেও নিবন্ধিত জেলে হতে পারেননি। ফলে কোন ত্রাণ সহায়তাও পাচ্ছেন না তারা।
হাতিয়া মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি মো. ইসমাইল জানান, হাতিয়ায় মেঘনা নদীতে মাছ ধরা জেলের সংখ্যা অর্ধলক্ষাধিক হলেও নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২৫ হাজার। আর ত্রাণ সহায়তা পান মাত্র ২ হাজার ৭শ’ জন জেলে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. মোতালেব হোসেন জানান, জেলার হাতিয়া, সুবর্ণচর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মোট ৫ হাজার ৫শ’ জেলেকে ত্রাণ সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে। এদেরকে জন প্রতি প্রতি মাসে ৪০ কেজি হারে ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত মোট ৮৮০ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হবে।
Comments