রাব্বি-মিজানুরের সেঞ্চুরি ম্লান করে নায়ক অলক–ঈশ্বরণ
মিজানুর রহমান করলেন রানে বলে তাল মিলিয়ে সেঞ্চুরি, ফজলে মাহমুদ রাব্বি শেষ পর্যন্ত টিকে করেন ১৪৯ রান। স্লগ ওভারে ঝড় আসে ইয়াসির আলি রাব্বির ব্যাটে। বিশাল পূঁজি পেয়ে তাই ইনিংস বিরতি স্বস্তিতে ছিল ব্রাদার্স। অথচ এনামুল হক, আল-আমিনের ফিফটির পর ভারতীয় অভিমন্যু ঈশ্বরণ আর অলক কাপালীর দাপটে তাদের পাহাড় ডিঙ্গিয়েই জিতে গেল প্রাইম ব্যাংক।
আগে ব্যাট করে দুই সেঞ্চুরি আর এক ফিফটিতে ৩৩০ রান করে ব্রাদার্স। ৭ বল হাতে রেখে ওই রান টপকে ৫ উইকেটে জিতেছে প্রাইম ব্যাংক। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এবার সাত ম্যাচের মধ্যে এটি তাদের ৬ষ্ঠ জয়।
দলকে জেতাতে এনামুল হক বিজয়, আল-আমিন পেয়েছিলেন ফিফটি। তবে কাজের কাজটা করেন ঈশ্বরণ আর অলক। ঈশ্বরণ ৯৬ বলে ৯০ করে আউট হলেও অলক ৬৫ বলে ৮২ করে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন।
বিশাল রান তাড়ায় শুরুতেই সালমান হোসেনকে হারায় প্রাইম। তবে সেই ধাক্কা বুঝতে দেয়নি দ্বিতীয় উইকেটে ঈশ্বরণকে নিয়ে এনামুলের জুটি। ৪৭ বলে ৫৪ করার পর মোহাম্মদ শরিফের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরলে ভাঙে ৭৫ রানের জুটি।
তৃতীয় উইকেটে এনামুলের অসমাপ্ত কাজ শেষ করার দায়িত্ব নেন আল-আমিন জুনিয়র। ৫২ রান করে আল-আমিন ফিরে গেলে কিছুটা শঙ্কায় পড়ার পরিস্থিতি এসেছিল। কিন্তু অভিজ্ঞ অলক নেমে সেই শঙ্কা ক্ষণে ক্ষণেই উবে দেন।
ঈশ্বরণের সঙ্গে গড়েন ১০১ রানের জুটি। তাতে বেশি আগ্রাসী ছিল তার ব্যাটই। দারুণ সব ড্রাইভ আর পুলে সেরা সময় মনে করিয়ে অলক এগিয়ে নেন দলকে। তার দাপটে কমে যায় আস্কিং রানরেটের চাপও।
ঈশ্বরণ নব্বুই ছুঁয়ে ফিরে গেলেও অলক আর আউট হননি। ৬৫ বলের ইনিংসে ৮২ রান করতে ৬ বাউন্ডারি আর তিন ছক্কা মেরেছেন সাবেক জাতীয় দলের এই তারকা।
মিরপুরে প্রিমিয়ার লিগের সব ম্যাচই হচ্ছিল মন্থর উইকেটে। সকালের দিকে রান মিলছিল না জুতসই। কিন্তু এদিন দেখা গেল ভিন্ন ছবি। টস জিতে তাই প্রাইম ব্যাংক ব্যাট করতে পাঠায় ব্রাদার্সকে। উইকেটের ফায়দা নেওয়ারই চিন্তা ছিল তাদের। ১০ রানে জুনায়েদ সিদ্দিকী আউটও হয়ে গিয়েছিলেন।
কিন্তু এরপরই লাগাম পুরো নিয়ে নেন মিজানুর রহমান আর ফজলে মাহমুদ রাব্বি। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান বাড়ান দুজন। বাড়ে জুটি। তরতরিয়ে এগিয়ে চলে রানের চাকা। দ্বিতীয় ওভারে জুটি বেধে একদম ৩৮তম ওভারে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হন তারা। ততক্ষণে দলের রান পেরিয়ে গেছে দুশো। দুজনের জুটিতে এসে গেছে ১৯৩ রান।
১০৯ বলে ৮ চার আর ৫ ছক্কায় ঠিক ১০০ রান করে নাঈম হাসানের শিকার হয়ে ফেরেন মিজান। ফজলে রাব্বির সঙ্গে যোগ দেন ইয়াসির আলি রাব্বি। দুই রাব্বি মিলে আর বিচ্ছিন্নই হননি। ১২৭ রানের জুটিতে স্লগ ওভারে ঝড় তুলেন ইয়াসির।
মাত্র ৩৭ বলে ৬ চার আর ৩ ছক্কায় ৬১ রানে অপরাজিত ছিলেন দারুণ ছন্দে থাকা এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। অপরদিকে ওয়ানডাউনে নামা ফজলে রাব্বি শেষ পর্যন্ত থেকে করেন ১৪৯ রান। ১৪৭ বলের ইনিংসে মারেন ১৩ চার আর ৫ ছক্কা।
তবে দিনশেষে তাদের বোলাররা অতবড় পূঁজি পেয়েও আনতে পারেননি জয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ব্রাদার্স ইউনিয়ন: ৫০ ওভারে ৩৩০/২ (মিজানুর ১০০, জুনায়েদ ৭, ফজলে ১৪৯*, ইয়াসির ৬১* ; সাদ্দাম ০/৬৮, সালমাম ০/২১, নাঈম ১/৬২, মনির ০/৫৯, নাহিদুল ০/৪৫, রাজ্জাক ০/৪৮, অলক ০/১৬, আল-আমিন ০/১০)
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ৪৮.৫ ওভারে ৩৩১/৫ (এনামুল ৫৪, সালমান ১৩, ঈশ্বরণ ৯০, আল-আমিন ৫২, অলক ৮২*, নাজমুল ১, নাহিদুল ২৩ ; সাজেদুল ৩/৭০, হাবিবুর ০/২২, ইবাদত ০/৫৬ , শরিফ ১/৬০, শরিফুল্লাহ ০/৬৭ , নাইম জুনিয়র ১/৫২)
ফল: প্রাইম ব্যাংক ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ফজলে মাহমুদ রাব্বি।
Comments