সুবর্ণচরে নির্বাচনী দ্বন্দ্বে এবার ৬ সন্তানের জননীকে গণধর্ষণের অভিযোগ

rape logo
প্রতীকী ছবি। স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে এবার উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ছয় সন্তানের জননীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বহুল আলোচিত চার সন্তানের জননী ধর্ষণ মামলার অন্যতম অভিযুক্ত রুহুল আমিনের মৎস্য খামারে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগে জানানো হয়েছে।

ওই নারীর স্বামী আজ সোমবার বিকেলে চরজব্বার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আট জনের নাম উল্লেখ করে আরও কয়েকজন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে আবুল বাশার ও ইউসুফ মাঝী নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহেদ উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওই নারী বলেন, ৩১ মার্চ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট চলছিল। স্বামীসহ তিনি চশমা প্রতীকের প্রার্থী তাজ উদ্দিন বাবরের পক্ষে প্রচারণায় অংশগ্রহণ করে এবং তাকেই ভোট দেন। এ নিয়ে প্রতিপক্ষ তালা প্রতীকের প্রার্থী ফরহাদ হোসেন চৌধুরী বাহার এর সমর্থকদের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

অভিযোগকারী দম্পতি বলেন, প্রতিপক্ষের ভয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তারা। সন্ধ্যায় ঝড়-বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বাড়িতে রেখে আসা সন্তানদের কথা চিন্তা করে ৭টার দিকে দুজনেই মোটরসাইকেলে করে বাগ্গা গ্রামে নিজেদের বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে তালা প্রতীকের প্রার্থী ফরহাদের সমর্থক ইউসুফ মাঝি, আরমান, হেলাল, বেচু মাঝি, ফজল, আবুল বাশার, রুবেল ও রায়হানসহ ১০-১২ জন তাদের মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে মারধর করে। এসময় বেচু মাঝি, বজলু ও আবুল বাশার তাকে পাশেই রুহুল আমিনের মৎস্য খামারে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে। স্বামীর চিৎকারে লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

এ ব্যাপারে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তাজ উদ্দিন বাবর বলেন, তাকে ভেট দেওয়ায় ওই নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এরা সন্ত্রাসী। আমি এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

অপর ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ফরহাদ হোসেন চৌধুরী বাহার বলেন, যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের কোনো দল নেই। তারা প্রকৃতপক্ষেই সন্ত্রাসী। আমি চাই প্রকৃত অপরাধীদের যেন শাস্তি হয়।

উল্লেখ্য, এই দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীই আওয়ামীলীগ সমর্থক।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সৈয়দ মহিউদ্দিন আজিম জানান, এক নারী ও তার স্বামীকে রাতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই নারী ধর্ষিত হয়েছেন বলে তাকে জানিয়েছেন। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার ডাক্তারি পরীক্ষা করা হবে।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। হাসপাতালে ধর্ষণের অভিযোগকারী নারীকে দেখতে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক জ্যোতি খিষা। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নির্যাতনের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চর জব্বর থানার ওসি সাহেদ উদ্দিন বলেন, গণধর্ষণের ঘটনাটি ভোটকেন্দ্রিক নয়। এটা তাদের পারিবারিক বিরোধের জের ধরে ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Comments