‘এটা এমন, ধর্ষণের পর কিছু লোক দেখে মেয়েটি কি পোশাক পরেছিল’
'গোলের আগে থেকেই বর্ণবাদী কথা আসছিল। ব্লাইস (মাতুইদি) এটা শুনেছে এবং রাগও করেছে। আমার মনে হয় দোষ পঞ্চাশ-পঞ্চাশ (সমান)। কারণ ময়েসের এ রকম উদযাপন করা উচিৎ হয়নি। দর্শকদেরও এমন প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিৎ হয়নি।' – ময়েস কিনের বর্ণবাদী দুয়ো শোনার কারণ উল্লেখ করে এমনটাই বলেছিলেন সতীর্থ লিওনার্দো বোনুচ্চি।
বোনুচ্চির এমন মতবাদে ক্ষেপেছে পুরো বিশ্ব। সাবেক ও বর্তমান অনেক ফুটবলারই এর প্রতিবাদ করেছেন। মারিও বালোতেল্লিতো এক হাত নিয়েছেন। ক্ষেপেছেন ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ ফ্রান্সের জয়ী সদস্য লিলিয়ান থুরামও। বোনুচ্চির এ কথার সঙ্গে মিল পেয়েছেন তাদের, যারা কোন নারী ধর্ষিত হলে তার পোশাকের দায় দেন।
ইতালিয়ান গণমাধ্যম ক্যালসিওমারকাতোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে থুরাম বলেন, ‘বোনুচ্চি যেটা বলেছেন সেটা বিশ্বের অনেকেই ভেবে থাকে। কালোরা এমনটাই পেয়ে এসেছে। বলেছে দোষ পঞ্চাশ পঞ্চাশ (সমান)। এটা অনেকটা এমন যখন কোন তরুণী মেয়ে ধর্ষিত হয় এবং কিছু শ্রেণীর লোকজন পর্যবেক্ষণ করে মেয়েটি কি ধরণের পোশাক পরেছিল। এর কারণ এ ধরণের লোকজন কখনোই বিষয়টি অনুভব করে না।’
‘বোনুচ্চি বেকুব না। তাকে নিয়ে কি বলব। সে যা করেছে তাতে তার সতীর্থকে অবিশ্বাস্য সহিংসতায় ফেলে দিয়েছে। কিন একটি গোল করেছে এবং বিপক্ষ দলের সমর্থকদের সামনে উদযাপন করেছে। তাই বলে তারা তার গায়ের বর্ণ নিয়ে অপমান করবে? বোনুচ্চির মন্তব্য লজ্জাজনক। আমাদের অবশ্যই বর্ণবাদের প্রতিবাদ করতে হবে।’ - বোনুচ্চি সম্পর্কে জানতে চাইলে এমনটাই বলেন থুরাম।
ফুটবলে বর্ণবাদী আচরণ নতুন কিছু নয়। ইতালিতে বরাবরই এমন ঘটনা ঘটে আসছে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো চোটের কারণে একাদশে সুযোগ পেয়েছিলেন ময়েস কিন। গত মঙ্গলবার ম্যাচের ২০ মিনিটে প্রতিপক্ষকে করা একটি ফাউলকে কেন্দ্র করেই বর্ণবাদী আচরণ শুরু হয়। আর গোল দেওয়ার পর ক্যালিয়ারি সমর্থকদের সামনে উদযাপনে আরও ক্ষেপে যায় তারা। তাকে লক্ষ্য করে ছুড়ে মারা হয় কলা, প্লাস্টিকের বোতল, পানি ইত্যাদি। ক্যালিয়ারি খেলোয়াড়েরা এগিয়ে কিনকে সরিয়ে দেন এবং নিজের সমর্থকদের শান্ত হতে বলেন। কিন্তু তাতেও থামেনি।
Comments