মোহামেডানের বিপক্ষে শাইনপুকুরের রোমাঞ্চকর জয়

DPL 2019

কাজটা তার বোলিং। আর সে কাজটা করেছেন দারুণভাবেই। একাই তুলে নিয়েছেন ৫টি উইকেট। এরপর দল যখন হারের পথে ৪৯তম ওভারে রজত ভাটিয়াকে ৩টি ছক্কা মেরে ম্যাচকে নিজেদের পক্ষে জয়ের পাল্লা নিজেদের কাছে নিয়ে আসেন দেলোয়ার হোসেন। তাতে রোমাঞ্চকর এক জয়ে সুপার লিগের স্বপ্ন ধরে রাখে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব। দেশের ঐতিহ্যবাহী দল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে ২ উইকেটে হারায় দলটি।

অবশ্য এদিন ম্যাচে ঘটেছে নানা ঘটনা। শাইনপুকুরের জয়ের জন্য শেষ ৩ বলে দরকার ছিল ৩ রান। তখন লং অনে বল ঠেলে রান নেন সোহরাওয়ার্দী শুভ। যেখানে ছিল মাত্র ১টি রান। দ্বিতীয় রান নিতে গেলে হতে পারতেন নিশ্চিত রানআউট। কিন্তু বিস্ময়করভাবে বলটি ধরে স্টাম্প না ভেঙে ছুঁড়ে মারেন উইকেটরক্ষক ইরফান শুক্কুর। তাতে উল্টো আরও একটি বাড়তি রান পায় শাইনপুকুর। ফলে উল্টো ২ বল বাকী থাকতেই নিশ্চিত হয়ে যায় দলের জয়।

এছাড়াও অধিনায়ক রকিবুল হাসানের বোলিং পরিবর্তনও ছিল চোখে পড়ার মতো। দারুণ বোলিং করেছেন স্পিনার সাকলাইন সজীব। ৭ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ২২ রান। ওভার প্রতি ৩.১৪ রান। কিন্তু তাকে দিয়ে কোটা শেষ করেননি অধিনায়ক। এছাড়াও উল্টো শুরু থেকে মার খাওয়ায় বোলার রজত ভাটিয়াকে দিয়ে কোটা পূরণ করান। যিনি ১০ ওভারে রান দিয়েছেন ৮০টি।

৩২৫ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো ছিল না শাইনপুকুরের। দলীয় ১১৭ রানেই হারিয়ে ফেলে টপ অর্ডারের পাঁচ উইকেট। এরপর ষষ্ঠ উইকেটে অমিত হাসানকে নিয়ে ১১৮ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন আফিফ হোসেন ধ্রুব। মূলত এ জুটিতেই জয়ের ভিত পায় শাইনপুকুর। অবশ্য অষ্টম উইকেটে দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে সোহরাওয়ার্দি শুভর ৫৯ রানের জুটিটিও উল্লেখযোগ্য।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯৭ রানের ইনিংস খেলেন আফিফ। ৮৬ বলে ৪টি চার ও ৫টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন তিনি। উম্মুখ চাঁদ খেলেন ৪৯ রানের ইনিংস। অমিতের ব্যাট থেকে আসে ৪৩ রান। মাত্র ১৯ বলে ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩০ রান করেন দেলোয়ার। আর ২৩ বলে অপরাজিত ৩০ রান করে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন সোহরাওয়ার্দি।

এর আগে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা প্রায় মোহামেডান। ইরফান শুক্কুরের সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে ১০১ রান করেন লিটন কুমার দাস। এরপর ইরফান ফিরে গেলে অভিষেক মিত্রর সঙ্গেও ৫৬ রানের জুটি গড়ে আউট হন লিটন। এরপর তৃতীয় উইকেটে অভিষেককে সঙ্গে নিয়ে স্কোরবোর্ডে ৮২ রান যোগ করেন অধিনায়ক রকিবুল হাসান। এরপর চতুর্থ উইকেটে সোহাগ গাজীর সঙ্গেও আসে ৪৭ রান। তাতেই বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় মোহামেডান।

কিন্তু এমন চারটি বড় জুটির পরও পূর্ণ ৫০ ওভার খেলতে পারেনি মোহামেডান। শেষ দিকে পেসার দেলোয়ার হোসেনের তোপে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে তাদের ইনিংস। স্কোরবোর্ডে মাত্র ৯ রান যোগ করতে শেষ ৬টি উইকেট হারায় তারা। তিন বল বাকী থাকতেই ৩২৪ রানে অলআউট হয় দেশের ঐতিহ্যবাহী দলটি।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৪ রানের ইনিংস খেলেন লিটন। ৮৯ বলে ৯টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। অধিনায়ক রকিবুল করেন ৭৪ রান। ৭১ বলে ১১টি চার ও ১ ছক্কায় এ ইনিংস গড়েন তিনি। ইরফান শুকুর ও অভিষেক মিত্র দুইজনই আউট হয়েছে কাটায় কাটায় ৫০ রান করে। মাত্র ২২ বলে সমান ৩টি করে চার ও ছক্কায় ৪৫ন রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন গাজী। শাইনপুকুরের পক্ষে দেলোয়ার ৪৬ রানের খরচায় নিয়েছেন ৫টি উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব: ৫০ ওভারে ৩২৪ (লিটন ৮৪, ইরফান ৫০, অভিষেক ৫০, রকিবুল ৭৪, গাজী ৪৫, ভাটিয়া ১০, আলাউদ্দিন ০, নাদিফ ০, নিহাদুজ্জামান ১*, সাকলাইন ১, শাহাদাত ০; শরিফুল ১/৬৮, দেলোয়ার ৫/৪৬, টিপু ১/৪২, শুভাগত ০/৪৩, সোহরাওয়ার্দি ২/৭২, সাব্বির ০/৫১)।

শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব: ৪৯.৪ ওভারে ৩২৫/৮ (সাদমান ২১, সাব্বির ১৭, উম্মুখ ৪৯, তৌহিদ ৯, আফিফ ৯৭, শুভাগত ৫, আমিত ৪৩, সোহরাওয়ার্দি ৩৪*, দেলোয়ার ৩৪, টিপু ১*; শাহাদাত ১/৭৫, গাজী ২/৪০, আলাউদ্দিন ১/৬৫, সাকলাইন ০/২২, নিহাদুজ্জামান ০/৪২, ভাটিয়া ২/৮০)।

ফলাফল: শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব ২ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: দেলোয়ার হোসেন (শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব)।

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

7h ago