নৌপথে যাত্রা একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে: ভারতের হাইকমিশনার

Riva Ganguly Das
রিভা গাঙ্গুলি দাশ। ফাইল ছবি

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চমৎকার সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে নৌপথে ক্রুজ সার্ভিস চালু হওয়ার পর সেই সম্পর্ক আরও গভীর হচ্ছে। নৌ যাত্রা একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।

শনিবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পাগলা মেরি এন্ডারসনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে বিকেল ৫টায় ভারতের কলকাতা থেকে পর্যটকদের নিয়ে জাহাজ আর ভি বেঙ্গল গঙ্গা মেরি এন্ডারসনে পৌঁছলে পর্যটকদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, “ভালো একটি সূচনা হয়েছে ভ্রমণের। অনেকেই এখন এসব ক্রুজ যাত্রা পছন্দ করে। এটাকে আমাদের নিয়মিত করতে হবে। ইতোমধ্যে ভিসা প্রদানও বেশ সহজ হয়েছে।”

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের সৌন্দর্য তুলে ধরার জন্য শুধুমাত্র ঢাকা-কলকাতা না, ঢাকা-গুহাটি, ভুটান এসব জায়গাও আমরা চিন্তা করছি। অচিরেই এগুলো আমরা পরীক্ষামূলক চালু করবো। আশা করছি এটা ধারাবাহিক ভাবে চলতে থাকবে।

তিনি আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা যে পর্যায়ে আছে তাতে আমরা কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা দেখছি না। আমাদের সম্পর্ক ভালো, আমরা পরীক্ষিত বন্ধু।

নদীপথে প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের অবকাঠামোগত কিছু দুর্বলতা আছে। ভবিষ্যতে আমরা এটা কাটিয়ে উঠব। নৌপথের দিকে এর আগে কোন সরকার দৃষ্টি দেয়নি। আমরাই প্রথম নৌ পথকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরার জন্য চেষ্টা করছি। বর্তমান সরকার যেহেতু আগ্রহী তাতে ছোট খাটো যে ত্রুটিগুলো আছে সেগুলো সারিয়ে তুলে একটি ভালো মানের ক্রুজ সার্ভিস চালু করতে পারবো।

জার্নি ওয়ালেট লিমিটেড ব্যবস্থাপনা পরিচারক মতিউর রহমান জানান, মেরি এন্ডারসনে আসা ভারতের জাহাজটিতে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ইতালি ও অস্ট্রেলিয়ার ছয়জন পর্যটক সহ ১৯ জন যাত্রী ও ৩০ জন ক্রু ছিল। এদের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া দীপক বড়–য়া, ইন্ডিয়া ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট অথোরিটির (আইডব্লিউআই) সাবেক চেয়ারম্যান নোটন গুহ বিশ্বাস, আর ভি বেঙ্গল গঙ্গার চেয়ারম্যান রাজ সিং সহ বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মীও রয়েছেন।

তিনি আরও জানান, গত ২৯ মার্চ দুপুর সাড়ে ১২টায় ভারতের কলকাতার খিদিরপুর বন্দর থেকে জাহাজটি বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। সুন্দরবন হয়ে ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় খুলনার আংটিহারা বন্দরে জাহাজটি কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপর মোংলা, বরিশাল ও চাঁদপুর হয়ে নারায়ণগঞ্জে এসে নোঙর করে। শনিবার সকালে পর্যটকেরা সোনারগাঁয়ের জাদুঘর, বড় সরদার বাড়ি, পানামনগরী, জামদানী পল্লীসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করেন।

কলকাতা থেকে আসা ইতালির পর্যটক মার্কো রোসা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তাকে মুগ্ধ করেছে। এই ভ্রমণ তাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

আর ভি বেঙ্গল গঙ্গার চেয়ারম্যান রাজ সিং জানান, স্বাধীনতার পূর্বে ভারতের সাথে বাংলাদেশের নৌ-পথে যোগাযোগ থাকলেও এক সময় তা বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ ৭০ বছর পর পুনরায় এই যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে সব ধরনের সম্পর্ক অরও উন্নত হবে বলে মনে করছেন তিনি। বাংলাদেশের মানুষের আতিথেয়তায়ও মুগ্ধ তিনি।

তিনি আরও বলেন, ভারত থেকে বাংলাদেশে নৌ পথের এ ভ্রমণ আনন্দদায়ক হয়েছে। ভ্রমণ নিরাপদ ছিল।

প্রসঙ্গত ২৯ মার্চ ৬১ জন পর্যটকসহ ১৩৭ জনের প্রথম বহর নিয়ে বাংলাদেশ থেকে কলকাতা যায় এমভি মধুমতি। পাগলায় মেরি এন্ডারসনের ভিআইপি ঘাট থেকে ওই জাহাজ ছেড়ে ৩১ মার্চ দুপুরে কলকাতা পৌঁছায়।

Comments

The Daily Star  | English

Central bank at odds with BPO over Nagad’s future

The discord became apparent after Faiz Ahmed Taiyeb, special assistant to the chief adviser with authority over the Ministry of Posts, Telecommunications and IT, sent a letter to the BB governor on May 12 and posted the letter to his Facebook account recently

2h ago