লিভারপুলের জয়ের নায়ক ফিরমিনো
গত মৌসুমে এই পোর্তোকেই নিজের ঘরের মাঠে উড়িয়ে দিয়েই কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লিখিয়েছিল লিভারপুল। এবারও তাদের বিপক্ষে নিজেদের মাঠের সুবিধা আদায় করে নেওয়ার ব্যাপারে শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিল তারা। শেষ পর্যন্ত করে দেখিয়েছেও দলটি। দারুণ খেলেছেন রোবার্তো ফিরমিনো। একটি গোল করেছেন, অপরটি করিয়েছেন এ ব্রাজিলিয়ান। তাতেই ২-০ গোলের ব্যবধানে জয় তুলে শেষ চারের লড়াইয়ে এগিয়ে রইল ইংলিশ দলটি।
তবে কিছুটা হলেই তৃপ্তি পেতেই পারে পোর্তো। গতবার অ্যানফিল্ডে তারা হেরেছিল ০-৫ গোলের বিশাল ব্যবধানে। এবার তারা ব্যবধানটা বেশ কমিয়েছে। তাই নিজেদের মাঠে দ্বিতীয় লিগে ভালো কিছু আশা করতেই পারে দলটি। আর তার উদাহরণ দ্বিতীয় রাউন্ডেই দিয়েছিল তারা। রোমার মাঠ থেকে ১-২ ব্যবধানে হেরে নিজেদের মাঠে ৩-১ গোলে জয় তুলে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে পর্তুগালের দলটিই।
এদিন ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই এগিয়ে যায় লিভারপুল। বাঁ প্রান্তে রবার্তো ফিরমিনোর কাছ থেকে বল পেয়ে জোরালো শট নেন নেবি কেইটা। তার শট পোর্তোর এক খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে দিক বদলে গেলে বল জড়াতে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না গোলরক্ষক ইকের ক্যাসিয়াসের। ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পরের মিনিটেই মিলেছিল স্বাগতিকদের। তবে এবার ফিরমিনোর শট ফিরিয়ে দেন ক্যাসিয়াস।
২২তম মিনিটে তো অবিশ্বাস্য এক মিস করেন সালাহ। মাঝ মাঠ থেকে ব্যাক পাস দিতে গিয়ে বড় ভুল করে ফেলেন পোর্তোর এক খেলোয়াড়। ফাঁকায় বল পেয়ে যান সালাহ। নিয়ন্ত্রণেও নিয়েছিলেন। কিন্তু গোলরক্ষককে একা পেয়েও বাইরে মেরে ব্যবধান বাড়ানোর দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন এ মিশরীয় তারকা।
চার মিনিট পর অবশ্য ব্যবধান বাড়ায় লিভারপুল। দলীয় সমঝোতায় অসাধারণ এক গোল পায় স্বাগতিকরা। অধিনায়ক জর্ডান হেন্ডারসনের বুদ্ধিদীপ্ত পাস থেকে বল পেয়ে যান আলেকজান্ডার-আর্নল্ড। তার আড়াআড়ি ক্রসে আলতো টোকায় লক্ষ্যভেদ করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ফিরমিনো। ৩০তম মিনিটে ব্যবধান কমানোর দারুণ সুযোগ পেয়েছিল পোর্তো। অলিভার তোরেসের কাছ থেকে বাঁ প্রান্তে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন মৌসা মারেগা। কিন্তু গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকারকে পরাস্ত করতে পারেননি তিনি।
পরের মিনিটেও সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন মারেগা। এবারেও মিস করেন। কর্নার লিভারপুলের ডিফেন্ডাররা ঠিকভাবে ফেরাতে না পারলে এক সতীর্থের হেড থেকে ছোট ডি বক্সে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন মারেগা। তবে তার দুর্বল শট সহজেই ধরে ফেলেন বেকার। ৩৬তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়াতে পারতো লিভারপুল। বাঁ প্রান্ত থেকে হেন্ডারসনের ক্রস থেকে ফাঁকায় বল পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি ফিরমিনো।
দ্বিতীয়ার্ধেই শুরুতেই অবশ্য লক্ষ্যভেদ করেছিলেন সাদিও মানে। তবে অফসাইডের ফাঁদে পড়লে সে গোল বাতিল হয়। ৬১তম মিনিটে সালাহর সঙ্গে দেওয়া নেওয়া করে ডি বক্সের মধ্যে তা দারুণ বল পেয়ে গিয়েছিলেন আলেকজান্ডার-আর্নল্ড। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি। আট মিনিট পর মারেগার শট প্রথম দফায় ধরতে না পারলেও দ্বিতীয় দফায় ধরেন গোলরক্ষক অ্যালিসন। পরের মিনিটে সুযোগ ছিল স্বাগতিকদেরও। মানের দূরপাল্লার শট অল্পের লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৭৮তম মিনিটে নিজেদের সেরা সুযোগটি মিস করেন মারেগা। মাঝ মাঠ থেকে বাড়ানো বলে গোলরক্ষককে একা পেয়েও বাইরে মারেন এ ফরওয়ার্ড। পরের মিনিটেও সুযোগ ছিল। মারেগার কোনাকুনি শটে লক্ষ্যে থাকেনি। শেষ ১০ মিনিটে ব্যবধান কমাতে লিভারপুল সীমানায় বেশ চাপ সৃষ্টি করেছিল অতিথিরা। কিন্তু আক্রমণগুলো দানা বেঁধে উঠতে না পাড়ায় হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।
Comments