নৈতিক স্খলন: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার চাকরিচ্যুত
উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্যেই নৈতিক স্খলনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চাকরিচ্যুত হলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম।
অভিযোগ ওঠার পর মনিরুল ইসলামকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। তদন্তের দায়িত্ব দিয়ে গঠন করা হয়েছিল তিন সদস্যের একটি কমিটি। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে সিন্ডিকেটের বৈঠকে মনিরুল ইসলামকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এস এম ইমামুল হক আজ বুধবার এসব কথা জানিয়েছেন।
বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন ড. হাসিনুর রহমান নতুন রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।
রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, চাকরিপ্রার্থী এক তরুণীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন তিনি। গত বছর এর একটি ভিডিও ফুটেজ ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি মনিরুলকে চাকরিচ্যুত করার দাবি তোলে।
অন্যদিকে উপাচার্য ইমামুল হকের পদত্যাগের দাবিতে ১৬তম দিনের মতো বিক্ষোভ করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা আজ সকাল ১১টার দিকে কালবৈশাখীর তাণ্ডব উপেক্ষা করেই বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন। উপাচার্যের পদত্যাগের লিখিত প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভেস্তে গেছে সমঝোতা, লিখিত প্রতিশ্রুতির দাবিতে অনড় ববি শিক্ষার্থীরা
গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে এক অনুষ্ঠানে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বললে পরদিন থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি আসে।
আন্দোলন স্তিমিত করতে ২৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই সঙ্গে হল ছাড়ারও নির্দেশ দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। এর পর গত ৬ এপ্রিল আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষক, প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে সমঝোতা বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “উপাচার্য এস এম ইমামুল হকের পদের মেয়াদ রয়েছে প্রায় দুই মাস। এই দুই মাসে তিনি যাতে কর্মস্থলে না আসেন, সে লক্ষ্যে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়ে একটি লিখিত সুপারিশ পাঠাব। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন।”
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শনিবার রাতে হল ও ক্যান্টিন খুলে দেওয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে আর ক্লাস শুরু হতে পারেনি। উপাচার্যের পদত্যাগের লিখিত প্রতিশ্রুতির দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন তারা।
Comments