জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ গ্রেপ্তার

বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের গোপন খবর প্রকাশ করে সারা পৃথিবীতে ঝড় তুলেছিলেন এক সাংবাদিক। অস্ট্রেলিয়ার সেই সাংবাদিক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘উইকিলিকস’ নামের একটি গোপন তথ্যভাণ্ডার।
এরপর, বহুল আলোচিত সেই উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তার করার বিভিন্ন চেষ্টা করা হলে ২০১২ সালে তিনি আশ্রয় নেন লন্ডনের ইকুয়েডরের দূতাবাসে এবং দেশটির কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন।
দীর্ঘ ছয় বছরের প্রচেষ্টা শেষে অবশেষে, আজ (১১ এপ্রিল) লন্ডনের ইকুয়েডরের দূতাবাস থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সিএনএন জানায়, উইকিলিকসের দাবি, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সম্পাদক অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তারের আগে তার নিয়ে গোয়েন্দা তৎপরতা ছিলো এবং তাকে ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছি।
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও উইকিলিকসের বর্তমান প্রধান সম্পাদক ক্রিস্টিন র্হাফনসন লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে গতকাল (১০ এপ্রিল) বলেছিলেন, দূতাবাসের ভেতরে লোকজনদের কথাবার্তা ভিডিও এবং অডিও রেকর্ডিং করে গোয়েন্দারা অ্যাসাঞ্জের ওপর নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে।
সেসময় তিনি অ্যাসাঞ্জকে দূতাবাস থেকে বের করে দেওয়া হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তরের জন্যে কাজ করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়।
এর আগে লন্ডনে ইকুয়েডরের সাবেক কনসুল ফিডেল নারভায়েজ বলেছিলেন, তার মনে হয় না যে ইকুয়েডর অ্যাসাঞ্জকে রক্ষা করতে পারবে।
অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তারের পর লন্ডন পুলিশ এ সংক্রান্ত একটি ঘোষণা দিয়েছে বলেও জানায় সংবাদমাধ্যমটি।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ইকুয়েডরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র সিএনএন-কে বলেন, “আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। পরে সংবাদমাধ্যমগুলোকে বিষয়টি জানানো হবে।”
২০১২ সালের দিকে সুইডেনে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা করা হয়। পরে সেই মামলা খারিজ করে দেওয়া হলেও অ্যাসাঞ্জের ভয় ছিলো তাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া চক্রান্ত চলছে।
২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ইকুয়েডরের ক্ষমতায় লেনিন মোরেনো এলে অ্যাসাঞ্জ অভিযোগ করেন যে তাকে দূতাবাস ছাড়ার জন্যে চাপ দেওয়া হচ্ছে। তবে, দেশটির সরকার সেই অভিযোগকে নাকচ করে দেয়।
শেষে অ্যাসাঞ্জের অভিযোগটিই যেনো সত্য হলো। ইকুয়েডরের দূতাবাস থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে নিলো ব্রিটিশ পুলিশ। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানের রোষানলে পড়া এই সাংবাদিকের যে শেষ রক্ষা হলো না তা তার গ্রেপ্তার থেকে প্রমাণিত হলো।
Comments