নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে উৎসবে মেতেছে দেশ

চারুকলা অনুষদের আয়োজনে মঙ্গল শোভাযাত্রায় এবারের প্রতিপাদ্য 'মস্তক তুলিতে দাও অনন্ত আকাশে'। ছবিঃ তুহীন শুভ্র অধিকারী

আজ পহেলা বৈশাখ, পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হলো নতুন বছর ১৪২৬। আর বছরের প্রথম দিনটিকে স্বাগত জানাতে দেশের মানুষ মেতেছে সর্বজনীন উৎসবে। দেশের বাইরেও যেখানেই বাঙালি আছে তারাও আজ আপন সংস্কৃতিকে তুলে ধরছে বৈশ্বিক অঙ্গনে।

বর্ষবরণ উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশ জুড়ে চলছে নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন। সূর্যোদয়ের পর থেকেই শুরু হয়েছে আনন্দের বন্যা। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রার পর থেকে রাজধানীবাসী ভিড় করতে শুরু করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশপাশের এলাকাগুলোতে। 

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীসহ বাঙালিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

কৃষিকাজ ও খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য বাংলা সন গণনার শুরু মোঘল সম্রাট আকবরের সময়ে। হিজরি সন ও বাংলা সৌর সনের ওপর ভিত্তি করে প্রবর্তিত হয় নতুন এই বাংলা সন।

১৫৫৬ সালে কার্যকর হওয়া বাংলা সন প্রথমদিকে পরিচিত ছিল ফসলি সন নামে, পরে তা পরিচিত হয় বঙ্গাব্দ নামে। কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ সমাজের সঙ্গে বাংলা বর্ষপঞ্জির ইতিহাস জড়িয়ে থাকলেও এর সঙ্গে রাজনৈতিক ইতিহাসেরও সংযোগ ঘটেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রায় বাঘ ও বকের অনুষঙ্গ। ছবিঃ তুহীন শুভ্র অধিকারী

পাকিস্তান শাসনামলে বাঙালি জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের। আর ষাটের দশকের শেষে তা বিশেষ মাত্রা পায় রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজনের মাধ্যমে।

দেশ স্বাধীনের পর বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীকে পরিণত হয় বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। উৎসবের পাশাপাশি স্বৈরাচার-অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও এসেছে পহেলা বৈশাখের আয়োজনে। ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে বের হয় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর এ শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয় ইউনেস্কো।

রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিনের আনুষ্ঠানিকতা। ছবিঃ তুহীন শুভ্র অধিকারী

বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে নববর্ষ উদযাপন পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের সার্বজনীন উৎসবে। পহেলা বৈশাখের ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর আয়োজনে মেতে ওঠে সারাদেশ। বর্ষবরণের এ উৎসব আমেজে বছরের প্রথম দিন মুখরিত থাকবে বাংলার চারদিক। গ্রীষ্মের খরতাপ উপেক্ষা করে বাঙালি মিলিত হবে তার সর্বজনীন এই অসাম্প্রদায়িক উৎসবে। দেশের পথে-ঘাটে, মাঠে-মেলায়, অনুষ্ঠানে থাকবে কোটি মানুষের প্রাণের চাঞ্চল্য, আর উৎসব মুখরতা।

বর্ষ আবাহনে মূল অনুষ্ঠান: বর্ষবরণে রাজধানী জুড়ে বিভিন্ন সংগঠনের নানা আয়োজন থাকবে। প্রতিবছরের মতো দিনের প্রথম প্রভাতেই রমনার বটমূলে ‘ছায়ানট’ শুরু করেছে বর্ষবরণের মূল অনুষ্ঠান। সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদ থেকে বের করা হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা।

Comments

The Daily Star  | English

Four of a family killed in Sylhet hillock collapse

The incident occurred around 2:00am in Bakhtiarghat area under Lakshanaband Union of Golapganj upazila

20m ago