মেসির জোড়া গোলে সেমিতে বার্সেলোনা
শেষ ১২টি কোয়ার্টার ফাইনালে গোল করতে পারেননি লিওনেল মেসি। ১০৯৫ মিনিট গোলশূন্য। গোল খরা কাটালেন জোড়া গোল করেই। এদিন লিভারপুলে থাকাকালীন সময় যেন ফিরে পেয়েছিলেন ফিলিপ কৌতিনহোও। আর তাতেই রীতিমতো উড়ে যায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। এ দুই তারকার নৈপুণ্যে ৩-০ গোলে জয় পায় বার্সেলোনা। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-০ ব্যবধানে জিতে সেমি ফাইনালে নাম লেখায় স্প্যানিশ জায়ান্টরা।
ম্যাচের শুরুতেই গোল করার দারুণ সুযোগ পেয়েছিল ইউনাইটেড। বাঁ প্রান্তে ফাঁকায় বল পেয়েও লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি রাশফোর্ড। একাদশ মিনিটে পেনাল্টি পায় বার্সেলোনা। তবে ভিএআরে টিকেনি সে সিদ্ধান্ত। দুই মিনিট পর আবার সুযোগ আসে অতিথিদের। অ্যান্থনি মার্শিয়ালের দুর্বল শট সহজে ধরে ফেলেন বার্সা গোলরক্ষক মার্ক টের স্টেগান।
১৫তম মিনিটে মেসির জাদুতে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। ডিফেন্ডারের ভুলে ডিবক্সের বাইরে বল পেয়ে যান মেসি। এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দারুণ এক দূরপাল্লার শট বল জালে জড়ান আর্জেন্টাইন তারকা। পাঁচ মিনিট পর আবার গোল পান মেসি। তবে এবার অনেকটা ইউনাইটেড গোলরক্ষক দাভিদ দি হেয়ার উপহারই বলা চলে। বার্সার আক্রমণ ঠিকভাবে ফেরাতে না পারলে ডি বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান মেসি। তবে জোরালো শট নিতে পারেননি। কিন্তু কোন এক অবিশ্বাস্য কারণে দি হেয়ার হাত ফসকে বল চলে যায় জালে।
২৬তম মিনিটে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করতে পারতেন মেসি। বাঁ প্রান্ত থেকে জর্দি আলবা কাছ থেকে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন মেসি। কিন্তু তার শট লক্ষ্যে দেখেনি। ৪০তম মিনিটে রাশফোর্ডের দূরপাল্লার শট ধরে নিতে কোন সমস্যা হয়নি টের স্টেগানের। পরের মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে নেওয়া মেসির শটে দারুণ হেড দিয়েছিলেন জেরার্দ পিকে। তবে সে বল দক্ষতার সঙ্গেই ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক দি হেয়া।
ম্যাচের যোগ করার সময়ের শেষ দিকে অবিশ্বাস্য এক সেভ করেন ইউনাইটেড গোলরক্ষক দি হেয়া। মাঝ মাঠ থেকে একক দক্ষতায় কাটিয়ে বাঁ প্রান্তে আলবাকে বল দিয়েছিলেন মেসি। আলবার আড়াআড়ি ক্রসে দারুণ শট নিয়েছিলেন সের্জিও রবার্তো। তবে গোল মুখ থেকে সে বল ফিরিয়ে দেন ইউনাইটেড গোলরক্ষক দি হেয়া।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই হ্যাটট্রিক পূরণ করার সুযোগ ছিল মেসির। বাঁ প্রান্ত থেকে সুয়ারেজের ক্রসে জোরালো শট নিয়েছিলেন এ আর্জেন্টাইন। কিন্তু তা ঠেকিয়ে দেন ইউনাইটেড অধিনায়ক অ্যাশলে ইয়ং। ৬০তম মিনিটে রাশফোর্ডের নেওয়া দূরপাল্লার শট লক্ষ্যে থাকেনি।
পরের মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে ব্যবধান আরও বাড়ান কৌতিনহো। নিজেদের অর্ধ থেকে মেসির নেয়া নিখুঁত শট ধরে কৌতিনহোকে পাস দেন আলবা। দূরপাল্লার দুর্দান্ত এক শটে ইউনাইটেড গোলরক্ষক দি হেয়াকে পরাস্ত করেন এ ব্রাজিলিয়ান। লিভারপুলের জার্সিতে এমন অনেক গোল দিয়েছেন তিনি।
৬৪তম মিনিটে গোল পেতে পারতেন মেসি। ডি বক্সে অসাধারণ এক ব্যাকভলি নিয়েছিলেন পাঁচ বারের ব্যলন ডি'অর জয়ী এ তারকা। কিন্তু অল্পের জন্য তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৭৯তম মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে জেসে লিংগার্ডের শটও কিন্তু অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। নয় মিনিট পর আলবার পাস থেকে লুইস সুয়ারেজের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
নির্ধারিত শেষ সময়ের শেষ সময় তো অবিশ্বাস্য টের স্টেগান। দিয়াগো ডালটের ক্রসে দুর্দান্ত এক হেড দিয়েছিলেন অ্যালেক্স সানচেজ। কিন্তু তার চেয়েও দুর্দান্তভাবে সে বল ফিরিয়ে দেন বার্সা গোলরক্ষক। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে মেসিকে আবারও গোল বঞ্চিত করেন দি হেয়া। আর্জেন্টাইন তারকার জোরালো শট ঠেকিয়ে দেন তিনি।
Comments