‘কর্তৃত্ববাদী সরকারের যে আবরণ তা কি ঘোচাতে পারবে?’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মোট ছয়জন নির্বাচিত সদস্যের মধ্যে একজন ইতিমধ্যে শপথ নিয়েছেন, আরও চারজন শপথ নিতে পারেন- দেশের রাজনীতিতে এর তাৎপর্য কী? তা জানতে চাওয়া হয় সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের কাছে।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। স্টার ফাইল ছবি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মোট ছয়জন নির্বাচিত সদস্যের মধ্যে একজন ইতিমধ্যে শপথ নিয়েছেন, আরও চারজন শপথ নিতে পারেন- দেশের রাজনীতিতে এর তাৎপর্য কী? তা জানতে চাওয়া হয় সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের কাছে।

আজ (২৮ এপ্রিল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বলেন, “বিএনপির নির্বাচিতরা যদি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন, তাহলে দলীয় নীতিনির্ধারকরা প্রশ্নের মুখে পড়তে পারেন। দলের সিদ্ধান্ত না মেনে সংসদে যোগ দিলে তারা বিদ্রোহী হিসেবে গণ্য হবেন। তার মানে বিএনপির ভেতরে বিভিন্ন উপদল সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে হতে পারে। যারা শপথ নিবেন তাদের কিছু অনুসারী তৈরি হতে পারে। বিএনপির মতো রাজনৈতিক দলের জন্যে এটি ভালো হবে বলে মনে হয় না। এখন দেখতে হবে বিএনপি তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়, বা আদৌ কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে পারবে কি না- যাতে ভাগাভাগি বা উপদল বা অনুসারী ঠেকানো যায়।”

এতে আওয়ামী লীগ বা সরকার কতোটা সুবিধা পেতে পারে বলে মনে করেন?- জবাবে সাবেক নির্বাচন কমিশনার বলেন, “এটা আমি বুঝি না এতে সরকারের কী সুবিধা হবে। দেশের জাতীয় নির্বাচন বা বর্তমান সরকার নিয়ে সারা দুনিয়ায় যে কথা হচ্ছে তাতে বিএনপির এই পাঁচজন সংসদে যোগ দিলেই কী বা না দিলেই কী। হয়তো এমনটি হতে পারে যে- সরকার বলতে পারে- সংসদ অংশীদারিত্বমূলক হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, আসলেই কি তাই? আন্তর্জাতিক নিবন্ধগুলোতে বাংলাদেশের সরকারকে কর্তৃত্ববাদী সরকার বলা হচ্ছে। বিএনপি থেকে আরও চারজন সংসদে যোগ দিলো কী না দিলো- আর দিলেও তাতে ‘কর্তৃত্ববাদী সরকারের’ যে আবরণ তা কি ঘোচাতে পারবে? আমার তা মনে হয় না।”

তিনি বলেন, “দেশে নির্বাচন যে ঠিক মতো হয়নি তা তো প্রতিষ্ঠিত সত্য। এটি নিয়ে দেশে-বিদেশে কোনো বিতর্ক নেই।”

দেশের রাজনীতিতে এই সাংসদদের শপথের তাৎপর্য কী? জবাবে তিনি বলেন, “বিএনপির নির্বাচিতদের শপথ নেওয়ার বিষয়টির দেশের রাজনীতিতে কোনো তাৎপর্য আছে বলে আমি মনে করি না। দেশের রাজনীতি এখন সরকারি দল কেন্দ্রিক। সংসদে গেলে বিএনপি খুব বেশি লাভবান হবে- এমন মনে করি না।”

এটাতো গেলো আওয়ামী লীগ-বিএনপির বিষয়। এতে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের লাভ-ক্ষতি কতটুকু? সাখাওয়াত হোসেনের জবাব, “আমাদের দেশে গণতন্ত্রের ভীত যতোদিন পর্যন্ত শক্ত না হবে ততোদিন পর্যন্ত- কে এলো, কে গেলো বা পাঁচজন শপথ নিলো কী নিলো না- আমি মনে করি না যে এর মাধ্যমে গণতন্ত্রের মুখ উজ্জ্বল হবে। তৃতীয় বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে বিরোধীদলের অবস্থান কী থাকে, বা সরকারের হাতে কতোখানি ক্ষমতা থাকে তা সবাই জানেন।”

Comments