ম্যাচ বাতিলের ব্যাখ্যায় বাফুফে

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপের পরিণতিটা যেন পূর্ণতা পেল না। সব কিছুই প্রস্তুত ছিল। মাঠও ছিলও খেলার উপযোগী। দুই দলের খেলোয়াড়রা মাঠে নেমে ওয়ার্মআপ করছিলেন। ঘূর্ণিঝড় ফণী'কে উপেক্ষা করে মাঠে এসেছিলেন প্রায় হাজার পাঁচেক দর্শক। কিন্তু ম্যাচটিই যে মাঠে গড়াল না। তাতে প্রশ্ন উঠেছে নানা ধরণের। কেন বাংলাদেশ ও লাওসকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করতে হলো বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে)?

এর আগে বঙ্গবন্ধুর মাঠে খেলা হয়েছে এর চেয়েও বাজে অবস্থায়। তুমুল বৃষ্টিতে তাজিকিস্তান ও পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এদিনের প্রেক্ষাপট ছিল অনেকটাই ভিন্ন। ম্যাচের নির্ধারিত সময়ে ঢাকায় ফণীর আঘাত কিংবা বৃষ্টি না হলেও দেশের অন্যান্য স্থানের অবস্থা এক ছিল না। বিশেষকরে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের প্রতিটা মুহূর্ত কাটছে চরম দুশ্চিন্তায়। এর মধ্যে ‘ফণী’-র অগ্রভাগ বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ করেছে ইতোমধ্যে। যদিও মূল আঘাত আসবে মধ্যরাতে।

পটুয়াখালীতে জোয়ারের পানির তোড়ে আন্ধারমানিক নদীর বন্যা রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে কমপক্ষে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এছাড়াও উপকূল অঞ্চলের অধিকাংশ জায়গায় কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই সার্বিক দিক চিন্তা করেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাফুফে। বাফুফের সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শিদি বললেন, 'লাওস ও বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের মধ্যকার ফাইনালের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও এমনকি ক্রীড়ামোদী দর্শক উপস্থিত থাকার পরও ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ম্যাচটি বাতিল করা হয়েছে। এবং দুই দলকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন করা হয়েছে।'

তবে বিস্তারিত ব্যাখ্যাটা দিয়েছেন টুর্নামেন্টের স্পন্সর কে-স্পোর্টসের চিফ এক্সিকিউটিভ ফাহাদ এ করিম, 'আমাদের বুঝতে হবে, আমরা তো একটা দেশের মধ্যেই আছি। এ যে দুর্যোগটা হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের ইতোমধ্যে সতর্ক সংকেত দেওয়া হয়েছে। পটুয়াখালী ও বাগেরহাটের অনেক জায়গা ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়ে গেছে। আমরা তো বাংলাদেশের বাইরের কেউ না। এমন একটা সময়ে যখন আমাদের দেশের একাংশ দোয়া করছে যাতে ঝড় না হয়, সে সময়ে আমরা ফুটবল উদযাপন করি এটা কারো কাম্য নয়। আমরা সবাই দেশকে ভালবাসি, আমাদের ভাবতে হবে দেশের সবার জন্য।'

গত কয়েকদিন থেকেই আবহাওয়ার পূর্বাভাস ছিল ঘূর্ণিঝড়ের। চাইলেই আগেই ম্যাচটি স্থগিত করত পারতো তারা। কিন্তু সে পথে হাঁটেনি বাফুফে। ম্যাচ শুরুর কিছুক্ষণ আগ পর্যন্তও ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘূর্ণিঝড়ের কথা মাথা রেখেও উপস্থিত ছিলে ক্রীড়ামোদী সমর্থকরা। তবে গাঁটের টাকা খরচ করে আসা দর্শকদের জন্য ভালো সংবাদ দিয়েছে তারা। টিকেটের কাটা অংশ বাফুফেকে দেখালে টাকা ফেরত দিবে দেশের ফুটবল সংস্থাটি।

উল্লেখ্য, আসরে দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়েছিল ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ লাওস। তিন ম্যাচেই আট গোল দেয় তারা। যে দলগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের জয় পেতে ঘাম ছুটে গিয়েছে, তাদের তারা গোল বন্যায় ভাসিয়েছে। তাই ঘরের মাঠ ও সমর্থক বিবেচনা ছাড়া মাঠের খেলায় পরিষ্কার ফেবারিট ছিল লাওসই। তবে ফিনিশিং বাদ দিলে খারাপ খেলেনি বাংলাদেশের মেয়েরাও। দাপট দেখিয়েও ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় পর্যাপ্ত গোল পায়নি দলটি।

Comments

The Daily Star  | English

SC orders EC to restore Jamaat's registration

The Appellate Division of the SC scrapped a High Court verdict that had declared Jamaat's registration with the EC as a political party "illegal"

1h ago