লুকাস মৌরার অবিশ্বাস্য হ্যাটট্রিকে ফাইনালে টটেনহ্যাম

আগের রাতেই চ্যাম্পিয়ন্স লীগে নতুন ইতিহাস গড়েছিল স্বদেশী ক্লাব লিভারপুল। তাদের দেখেই হয়তো উজ্জীবিত হয়েছিল টটেনহ্যাম হটস্পার্স। এদিন ঘুরে দাঁড়ানোর আরও একটি নমুনা রেখে ফাইনালের টিকেট কেটে নিয়েছে দলটি। টুর্নামেন্টের ডাক হর্স আয়াক্সকে ৩-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে অ্যাওয়ে গোলের সুবাদে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে প্রথম বারের মতো ফাইনাল নিশ্চিত করে তারা।
ছবি: এএফপি

আগের রাতেই চ্যাম্পিয়ন্স লীগে নতুন ইতিহাস গড়েছিল স্বদেশী ক্লাব লিভারপুল। তাদের দেখেই হয়তো উজ্জীবিত হয়েছিল টটেনহ্যাম হটস্পার্স। এদিন ঘুরে দাঁড়ানোর আরও একটি নমুনা রেখে ফাইনালের টিকেট কেটে নিয়েছে দলটি। টুর্নামেন্টের ডাক হর্স আয়াক্সকে ৩-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে অ্যাওয়ে গোলের সুবাদে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে প্রথম বারের মতো ফাইনাল নিশ্চিত করে তারা।

প্রথম লেগে নিজেদের ঘরের মাটিতে ০-১ গোলে পিছিয়ে ছিল টটেনহ্যাম। লিভারপুলের মতো তিন গোলে পিছিয়ে না থাকলেও প্রতিপক্ষের মাঠে খেলা হওয়ায় কারণে কাজটা বেশ কঠিনই ছিল। তারপর প্রথমার্ধে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে তারা। তাই এক অর্থে লিভারপুলের মতোই অবস্থা হয় তাদের। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে তিনটি গোল আদায় করে নেয় দলটি। আর তিনটি গোলই দেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার লুকাস মৌরা।

তবে এক সময় মনে হয়েছিল ১৯৯৬ সালের পর প্রথমবারের মতো ফাইনালের টিকেট পাচ্ছে আয়াক্সই। শুরুতে দুর্দান্ত ফুটবল খেলে দলটি। দুই গোলে এগিয়েও যায়। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলেই বিপদ ডেকে আনে তারা। দুই মিনিটের জাদুতে দুই গোল করে টটেনহ্যামকে ম্যাচে ফেরান মৌরা। তবে তৃতীয় গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। ম্যাচের যোগ করা সময় পার হওয়ার পর বাড়তি সময়ে নাটকীয় এক গোলে দলের ইতিহাসের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফাইনাল নিশ্চিত করেন মৌরা।

ম্যাচের প্রথমার্ধে স্পষ্ট প্রাধান্য ছিল আয়াক্সেরই। আক্রমণাত্মক ফুটবলই খেলে দলটি। ম্যাচে এগিয়ে যেতে সময় নেয় পাঁচ মিনিট। পঞ্চম মিনিটে কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে দারুণ হেডে লক্ষ্যভেদ করেন অধিনায়ক মাতাইস দি লিত। অবশ্য গোল হতে পারতো আগের মিনিটেই। দুসান তাদিচের শট কিরান ট্রিপিয়ারের পায়ে লেগে জালে প্রায় ঢুকে যাচ্ছিল। ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক হুগো লরিস।

পরের মিনিটে সমতায় ফিরতে পারতো পারতো টটেনহ্যাম। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা সন হিউং-মিনের শট বার পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ২৩তম মিনিটে তার আরেকটি শট রুখে দেন আয়াক্স গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানা। ৩৫তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে আয়াক্স। ভ্যান দি বিকের পাস থেকে বা প্রান্ত থেকে জোরালো শটে লরিসকে পরাস্ত করেন হাকিম জিয়েখ। তাতে দুই লেগ মিলিয়ে ব্যবধানটা তখন হয় ৩-০। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধেই হয় মূল নাটক।

তিন গোলে এগিয়ে থাকায় দ্বিতীয়ার্ধে রক্ষণাত্মক ধাঁচের ফুটবল খেলে আয়াক্স। যদিও পাল্টা আক্রমণে এ অর্ধে গোল করার মতো সহজ পেয়েছিল তারা অনেকবারই। কিন্তু ফরোয়ার্ডের ব্যর্থতা এবং প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক হুগো লরিসের দুর্দান্ত কিছু সেভে রক্ষা পায় অতিথিরা। দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটেই গোল পেতে পারতো তারা। ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের পাস থেকে ডেলে আলির নেওয়া ভলি দারুণ দক্ষতায় রুখে দেন গোলরক্ষক ওনানা।

৫৫তম মিনিটে ব্যবধান কমায় টটেনহ্যাম। পাল্টা আক্রমণে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে এগিয়ে যান ডেলে আলি। তার কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সে দারুণ শটে বল জালে জড়ান মৌরা। চার মিনিট পর নিজের দ্বিতীয় গোল পান মৌরা। ফের্নান্দো লরেন্তের শট গোলরক্ষক ওনানা রুখে জটলার মধ্যে আলগা বল জটলার মধ্যে পেয়ে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দারুণ শটে লক্ষ্যভেদ করেন এ ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার।

৬১তম মিনিটে ডিলেয় ব্লিন্ডের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরের মিনিটে ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়েও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি জিয়েখ। ৭০তম মিনিটে দি লিতের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক লরিস। ৭৯তম মিনিটে জিয়েখের দূরপাল্লার শট গোলরক্ষককে পরাস্ত করলেও বার পোস্টে লেগে ফিরে আসে। আট মিনিট পর ইয়ান ভার্টোনেনের হেডও বার পোস্টে লাগার পর ফিরতি বলে তার শট গোললাইনে প্রতিহত হয়।

ম্যাচের যোগ করা সময়ে আসে সে মাহেন্দ্রক্ষণ। ডেলে আলি পাস থেকে ডি-বক্সে দারুণ শটে বল জালে জড়িয়ে অতিথিদের উল্লাসে মাতান মৌরা। হতাশায় মাঠে লুটিয়ে পড়েন আয়াক্স খেলোয়াড়রা। এরপর বাড়তি এক মিনিট খেলান রেফারি। কিন্তু তা থেকে গোল আদায় করে নিতে না পারলে প্রথমবারের মতো ফাইনালে খেলার ইতিহাস গড়ে টটেনহ্যাম।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago