চাঁদপুরে ধর্ষিত শিশু অন্তঃসত্ত্বা, টাকা দিয়ে ঘটনা চাপা দেওয়ার চেষ্টা

violence childern
ছবি: স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়নের ডাটরা গ্রামে ১২ বছরের এক শিশুকে একই গ্রামের চার যুবক মিলে ‘গণধর্ষণ’ করার পর শিশুটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নির্দেশে এ ঘটনার সমাধান স্থানীয়ভাবে করার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। তাছাড়া, পুলিশ এর কিছুই জানে না।

এদিকে, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চার যুবকের কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা আদায় করে অন্তঃসত্ত্বা শিশু ও তার পরিবারকে এলাকা থেকে বিতাড়নের চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, উপজেলার ১০ নম্বর দক্ষিণ গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়নের ডাটরা গ্রামের এক দরিদ্র নারী ওই শিশুকে দত্তক এনে লালন-পালন করেন। শিশুটির বর্তমান বয়স ১২ বছর। তবে, গত ৮ মাস আগে একই বাড়ির চার যুবক- ইসমাইলের ছেলে রাব্বি (১৯), বিল্লালের ছেলে মেরাজ (২২), রফিকের ছেলে ইসমাইল (২১) ও সিরাজের ছেলে আরফিন ওরফে আমিনুল (২০) মিলে শিশুটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

স্থানীয়রা জানান, ধর্ষণের শিকার শিশুটি গত ৩ মাস আগে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তার মা শিশুটিকে হাজীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক শিশুটির অন্তঃসত্ত্বার খবর জানান।

বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলে স্থানীয় লোকজন তা সমাধানের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান মো. গিয়াস উদ্দিনকে অবহিত করেন। পরে চেয়ারম্যান স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেন। এ নিয়ে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের পরিবারকে নিয়ে এলাকায় সালিশ বসে। সালিশে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হওয়ার কথা জানায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, চার ধর্ষককে বাঁচাতে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন তাদের পক্ষ নেন। তারা অভিযুক্ত প্রত্যেকের কাছ থেকে জরিমানা বাবদ দেড় লাখ টাকা করে ৬ লাখ টাকা আদায় করে ইউপি সদস্য ওয়াহেদুল ইসলামের কাছে জমা দেন। কিন্তু, সেই টাকা আর অন্তঃসত্ত্বা শিশুটিকে দেওয়া হয়নি।

এলাকার প্রভাবশালী সালিশদার মো. মোস্তফা কামাল বলেন, “এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমরা এলাকায় সালিশ করেছি। অভিযুক্ত চার যুবককে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সে অর্থ বর্তমানে ইউপি সদস্য ওয়াহেদুল ইসলামের কাছে রয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে শিশুটির হাতে তুলে দেওয়া হবে। এছাড়া প্রকৃত দোষী ব্যক্তির সঙ্গে শিশুটির বিয়ের ব্যবস্থাও করা হবে।”

দক্ষিণ গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, “আমি শিশুটির অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি জেনে স্থানীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। তবে প্রশাসনকে জানাইনি।”

হাজীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, “এ ঘটনায় আমার কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে বিষয়টি যেহেতু শুনেছি, সেহেতু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Comments

The Daily Star  | English

ICT case: Hasina charged with crimes against humanity

ICT prosecution pressed formal charges against Sheikh Hasina in a case filed over crimes against humanity committed during July mass uprising

1h ago