নিউজিল্যান্ডে মিষ্টি ব্যবসায়ী বাংলাদেশি দম্পতির কারাদণ্ড
বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়ে গিয়ে পাসপোর্ট আটকে রেখে ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত করা ও দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করানোর মতো অভিবাসন ও শ্রম আইনের লঙ্ঘনের অভিযোগে নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে মিষ্টি ব্যবসায়ী এক বাংলাদেশি দম্পতিকে কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত।
এছাড়াও, বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আনার সময় মিথ্যা তথ্য, মজুরি থেকে বঞ্চিত করাসহ নিউজিল্যান্ডের শ্রম আইন লঙ্ঘনের মতো গুরুতর অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে এই দম্পতির বিরুদ্ধে।
নিউজিল্যান্ড হেরালন্ডের খবরে আজ শনিবার জানানো হয়, এসব কারণে মোহাম্মদ আতিকুল ইসলামকে সাড়ে চার বছরের ও তার স্ত্রী নাফিসা আহমদকে আড়াই বছরের সাজা শুনিয়েছেন আদালত। দণ্ডিত দুজনই নিউজিল্যান্ডের নাগরিক।
দেশটির গণমাধ্যমগুলো বলছে, নিউজিল্যান্ডে অভিবাসন ও শ্রম আইন সংক্রান্ত অপরাধ খুবই বিরল। অন্তত গত কয়েক বছরে এধরনের অভিযোগে কারও সাজা পাওয়ার নজির ছিল না। দেশটির ইতিহাসে হাতে গোনা কয়েকজনের বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগে বিচার হয়েছে।
#BREAKING 'We might die from overwork': Auckland couple jailed for exploiting migrants paid $6 an hour who suffered swollen legs, armshttps://t.co/yCv6bSQPjD
— nzherald (@nzherald) May 9, 2019
তবে এই দম্পতির বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগ থাকলেও শেষ পর্যন্ত আদালতে তা প্রমাণিত হয়নি।
আতিকুল ও নাফিসা দম্পতি অকল্যান্ডের রয়্যাল সুইটস ক্যাফে নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালাতেন। এখানকার কর্মীদের দিনের পর দিন শোষণ চালিয়েছেন তারা। প্রতিষ্ঠানটির দুজন শেফ নিউজিল্যান্ডের কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ জানানোর পর পুরো ব্যাপারটি সামনে আসে।
অভিযোগকারীরা জানান, বাংলাদেশের একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রবাসী শ্রমিক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেখে তারা প্রলুব্ধ হয়েছিলেন। কিন্তু নিউজিল্যান্ডে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়। এর পর প্রায় দুই বছর স্বল্প বেতনে কাজ করানো হয়। ঘণ্টায় ছয় ডলার মজুরি দেওয়ার কথা থাকলেও তারা সেটা পাননি। এমনও হয়েছে কাজ করিয়ে কোনো বেতনই দেওয়া হয়নি। অতিরিক্ত কাজের চাপে তাদের মধ্যে কয়েকজনের হাত পা ফুলে গিয়েছে।
বিচারক বলেন, অভিযুক্ত দম্পতি নিউজিল্যান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী। তারা খুব ভালো করেই জানেন এদেশের শ্রম আইন কেমন ও কর্মীদের ন্যূনতম কত ডলার মজুরি দিতে হয়। এর পরও তারা শুধুমাত্র ব্যবসায়িক লাভের জন্য পরিকল্পিতভাবে নিজের সম্প্রদায়ের মানুষের শ্রম শোষণ করেছেন।
Comments