ব্যবসায়ীদের চাপে পাকার আগেই আম পাড়ার সময় নির্ধারণ

mango harvest
রাজশাহীর একটি বাগানে ‘গুটি’ জাতের আম পাকার অপেক্ষায় রয়েছে। ছবি: স্টার/আনোয়ার আলী

রাজশাহীতে এই মৌসুমের জন্য আগামী ১৫ মে থেকে আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করেছে জেলা প্রশাসন। যদিও চাষিরা বলছেন যে চলতি মাসের শেষের আগে আম ঠিক মতো পাকবে না।

চাষিদের মতে, ১৫ মে থেকে কেবল ‘গুটি’ জাতের আম পাড়া যাবে। এর পর থেকে অন্য জাতের আম যখন পাকতে শুরু করবে তখন পাড়া যাবে।

রাজশাহী জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গোপালভোগ ২০ মে, রাণীপছন্দ ও লক্ষ্মা বা লক্ষ্মণভোগ ২৫ মে, হিমসাগর বা ক্ষীরসাপাত ২৮ মে, ল্যাংড়া ৬ আগামী জুন, আম্রপালি, ফজলি ও সুরমা ফজলি ১৬ জুন এবং আশ্বিনা আম পাড়া যাবে আগামী ১ জুলাই থেকে।

তবে এবার গুটি, গোপালভোগ এবং লক্ষ্মা বা লক্ষ্মণভোগ- এই তিন জাতের আম পাড়ার সময় গত বছরের চেয়ে পাঁচদিন এগিয়ে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক এসএম আব্দুল কাদের।

তিনি জানান, গত বছর গুটি ২০ মে, গোপালভোগ ২৫ মে এবং লক্ষ্মা বা লক্ষ্মণভোগ ১ জুলাই থেকে পাড়া শুরু হয়েছিল।

গতকাল (১২ মে) দুপরে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ফল সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ–বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেখানে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই আম পাড়ার সময় নির্ধারণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, আম চাষি ও ব্যবসায়ীদের দিক থেকে চাপ আসে বলে জানা যায়।

যদিও সভার শুরুতে আম পাড়ার জন্য কোনো সময় নির্ধারণ না করতে সুপারিশ করেন স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি ও আম ব্যবসায়ীরা। তারা যুক্তি দেখান যে, সব আম একসঙ্গে পাকে না এবং ফল পাকার বিষয়টি আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে।

এসময় আম ব্যবসায়ী ও ভায়া লহ্মীকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত আলী বলেন, “এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকলে আম শীঘ্রই পাকতে শুরু করবে। তবে বৃষ্টি হলে দেরিতে পাকবে।”

সভায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, রাজশাহী ফল গবেষণা সেন্টারের কয়েকজন কর্মকর্তা এবং কয়েকজন চাষি আম পাড়ার জন্য সময় নির্ধারণের পক্ষে কথা বলেন। তারা জানান যে, কাঁচা আম পেড়ে ক্ষতিকর কেমিক্যাল দিয়ে পাকানোর যে অসাধু প্রচেষ্টা, তা বন্ধের জন্য সুনির্দিষ্ট তদারকি প্রয়োজন।

তখন জেলা প্রশাসক উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন যে, আম পাড়ার জন্য দিন নির্ধারণের বিষয়টি যদি আম ব্যবসায়ীদের পছন্দ না হয়, তাহলে আমের বাগানগুলোতে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট দিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে। আর এতে অস্বস্তিতে পড়বেন চাষিরা।

এ কথা শোনার পর আম ব্যবসায়ীরা তাদের অবস্থান থেকে সরে আসেন এবং নির্দিষ্ট সময়ের আগেই আম পাড়ার সময় নির্ধারণের জন্য প্রস্তাব করেন। এছাড়াও, এখনই অনেক গাছের আম পাড়া যাবে বলেও জানান তারা।

সভায় উপস্থিত গোদাগাড়ী উপজেলার এক আম বাগানের মালিক ও চাষি খাইরুল ইসলাম জানান, চলতি মাসের শেষের আগে তার বাগানের কোনে গাছেই আম পাকবে না। 

বাঘার অপর এক আম চাষি বলেন, “আগামী ২০ দিনের আগে আমার বাগানের গোপালভোগ এবং ক্ষীরসাপাত আমের একটিও পাকবে না।”

তবে তিনি জানান যে, মাঝে মধ্যে বয়স্ক গাছের আমি আগেভাগেই পাকতে শুরু করে। তবে এবার সেসব গাছের আম পাড়তেও আরও এক সপ্তাহের মতো সময় লাগবে।

আগামী ঈদুল আযহার পর অর্থাৎ জুনের শুরুর দিকে তার বাগানে ক্ষীরসাপাত পাকতে শুরু করবে এবং তারও প্রায় দুই সপ্তাহ পর থেকে ল্যাংড়া জাতের আম পাড়া যাবে বলেও জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

CAAB, Biman propose fee cuts to boost air cargo

The Civil Aviation Authority of Bangladesh (CAAB) and Biman have proposed reducing landing, parking, and ground handling charges at the country’s airports to make air cargo services cost-effective and resilient amid global disruptions.

6h ago