‘পরমাণু চুক্তি’ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘আংশিক’ সরে দাঁড়াচ্ছে ইরান

বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের বহুল আলোচিত ‘পরমাণু চুক্তির’ কিছু অংশ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে এসেছে ইরান।
Ali Khamenei
ইরানের সব্বোর্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের বহুল আলোচিত ‘পরমাণু চুক্তির’ কিছু অংশ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে এসেছে ইরান।

আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স আজ (১৫ মে) জানায়, দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের নির্দেশক্রমে পরমাণুশক্তি সংস্থার একজন কর্মকর্তা ইরানিয়ান স্টুডেন্টস নিউজ এজেন্সিকে (আইএসএনএ) বলেছেন যে ইরান আনুষ্ঠানিকভাবে ‘পরমাণু চুক্তির’ কিছু অংশ থেকে সরে দাঁড়িয়েছে।

ইরান তাদের এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি গত সপ্তাহে চীন, ফ্রান্স, জামার্নি, রাশিয়া এবং যুক্তরাজ্যকে জানিয়ে দিয়েছে।

২০১৫ সালে বিশ্বের ছয় শক্তিশালী দেশের সঙ্গে ইরানের সম্পাদিত ‘পরমাণু চুক্তি’ অনুযায়ী তেহরান কম-পরিশোধিত ইউরেনিয়াম ৩০০ কেজি পর্যন্ত উৎপাদন করতে পারবে। পাশাপাশি ভারী জল উৎপাদন করে মজুদ করতে পারবে ১৩০ টনের মতো।

অতিরিক্ত পরিমাণ ইউরেনিয়াম ও ভারী জল উৎপাদন করা হলে ইরানকে তা হয় বিক্রি করতে হবে, নয়তো অন্যদেশে মজুদ করতে হবে।

ইরানের কর্মকর্তারা বলছেন, এখন থেকে ইউরেনিয়াম ও ভারী জল উৎপাদনের ক্ষেত্রে তারা কোনো বাধা মানবেন না।

বিশ্লেষকদের মতে, এই নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ইরান আপাতদৃষ্টিতে পরমাণু চুক্তি লঙ্ঘন করছে না। কিন্তু, গত ৯ মে দেশটির রাষ্ট্রপতি হাসান রুহানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত বক্তব্যে যে ৬০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন তা যেনো ছয়দিনেই শেষ হয়ে গেলো।

রুহানি সেসময় বলেছিলেন যে চুক্তির অপর অংশীদার জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া এবং চীন আগামী ৬০ দিনের মধ্যে আলোচনার টেবিলে ফিরে না এলে এবং ইরানের খনিজ তেল বিক্রি ও ব্যাংকিং ব্যবস্থার নিরাপত্তা দিতে না পারলে চুক্তির কিছু অংশ থেকে তার দেশ সরে আসবে।

কিন্তু, ইরানের এই সময়সীমা বেঁধে দেওয়াকে প্রত্যাখ্যান করেছিলো চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী ইউরোপীয় দেশগুলো। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জামার্নি, ফ্রান্স এবং ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জানিয়েছিলেন তারা এখনো চুক্তির প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

পরমাণু বোমা বানাতে প্রয়োজন ইউরেনিয়ামের ৯০ শতাংশ পরিশোধন। চুক্তি অনুযায়ী ইরানকে দেওয়া হয়েছিলো ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ পরিশোধনের অধিকার। চুক্তিতে সাক্ষর করার আগে ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতো ২০ শতাংশ। চুক্তি থেকে আংশিক সরে এলে ইরান উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম শোধন করা শুরু করতে পারে বলেও অনেকে মন্তব্য করেছেন।

ইরানের সব্বোর্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি গতকাল (১৪ মে) বলেছেন যে পরমাণু বোমা এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে তার দেশ চিরশত্রু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না। তবে মার্কিনীদের সঙ্গে নতুন কোনো পরমাণু চুক্তির বিষয়ে দরকষাকষি করা হবে না।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালে সেই চুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয় এবং ইরানের তেল ও ইস্পাত বিক্রির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

আরও পড়ুন:

‘ইরানকে মোকাবিলায় লক্ষাধিক সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র’

‘বোমা বানানোর মতো ইউরেনিয়াম উৎপাদন করার কথা ভাবছে ইরান’

ইরানকে বার্তা দিতে মধ্যপ্রাচ্যে রণতরী পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের চাপ সত্ত্বেও মহাকাশে ৩টি স্যাটেলাইট পাঠাবে ইরান

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago