বিশ্বকাপ দলে কেন আছেন, দেখালেন আবু জায়েদ

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচে নেমেছিলেন আবু জায়েদ রাহি। নিজেকে প্রমাণের পাহাড়সম চাপ ছিল মাথার উপর। অভিষেকে নেমে আলো ছড়াতে পারেননি, ব্যাটসম্যানদের ধন্দে ফেলতে পারেননি, অনেকটাই বিবর্ণ ছিলেন পুরোটা সময়। বিশ্বকাপে তার জায়গাও তাই সুতোর উপর ঝুলছিল। এমন পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় ম্যাচে হয়তবা শেষ সুযোগই পেয়েছিলেন। আর সেটা যেভাবে কাজে লাগিয়েছেন, তাতে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে তার জায়গা নিয়ে এখন প্রশ্ন তোলাই কঠিন।
Abu jayed Rahi
ছবি: AFP

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচে নেমেছিলেন আবু জায়েদ রাহি। নিজেকে প্রমাণের পাহাড়সম চাপ ছিল মাথার উপর। অভিষেকে নেমে আলো ছড়াতে পারেননি, ব্যাটসম্যানদের ধন্দে ফেলতে পারেননি, অনেকটাই বিবর্ণ ছিলেন পুরোটা সময়। বিশ্বকাপে তার জায়গাও তাই সুতোর উপর ঝুলছিল। এমন পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় ম্যাচে হয়তবা শেষ সুযোগই পেয়েছিলেন। আর সেটা যেভাবে কাজে লাগিয়েছেন, তাতে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে তার জায়গা নিয়ে এখন প্রশ্ন তোলাই কঠিন।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ ওভার বল করে ৫৮ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন জায়েদ। ওয়ানডে তো বটেই। লিস্ট-এ ক্যারিয়ারেও এর আগে কখনো পাঁচ উইকেট নেওয়া হয়নি তার। লাল বলে কার্যকারিতায় বরাবরই নির্বাচকদের ‘গুড বুকে’ ছিলেন এই পেসার। তবে সাদা বলে ঘরোয়া ক্রিকেটে অতটা জৌলুস ছিল না তার।

বিশ্বকাপে তাকে দলে নিয়ে নির্বাচক ও অধিনায়ক বলেছিলেন, দুই দিকেই বল স্যুয়িং করানোর সামর্থ্যের কারণে দলে নেওয়া হয়েছে তাকে। ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে যেটা আরও বেশি কার্যকর।

সেই সামর্থ্যের প্রমাণই দিয়েছেন ক্লনটর্ফ ওভালে। নতুন বল হাতে নিয়ে হরহামেশা ইনস্যুয়িং আর আউটস্যুয়িং করিয়ে বেশ কবার আইরিশ ব্যাটসম্যানদের ধন্দে ফেলেছেন। দিতে পেরেছেন কার্যকর স্লোয়ার।

তাতে মিলেছে ফলও। অ্যান্ডি বালবার্নিকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে প্রথম উইকেট পান। তবু কিছুটা খরুচে ৬ ওভারের প্রথম স্পেলে ওই একটাই উইকেট ছিল। পরের স্পেলে এসেই মূলত করেছেন বাজিমাত।

স্লগ ওভারে দ্রুত রান তুলার তাড়ায় বড় শট খেলছিল বটে আইরিশরা। তবে ওইসময়ও উইকেট পেতে লাগে এলেম। উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডকে ওয়াইডলেন্থে বল করে টেনে মারতে বাধ্য করে এক্সটা কাভারে ক্যাচ বানান বুদ্ধির জোরেই। কেভিন ও’ব্রায়েন তার স্লোয়ার পিক করতে না পেরেই ছোট মাঠেও বল সীমানা ছাড়া করতে না পেরে হয়েছেন কুপোকাত। সেঞ্চুরিয়ান পল স্টার্লিংও একই ভুলে ডিপ মিড উইকেটে বন্দি। গ্যারি উইলিসন কাট করতে গিয়ে সোজা দিয়েছেন পয়েন্ট ক্যাচ।

ওই পাঁচ উইকেট নিয়ে বাঁধনহারা উল্লাস করেননি তিনি। তবু নিশ্চিতভাবেই তার চেহারায় মিলেছে একটা স্বস্তির হাওয়া। তার এমন বোলিংয়ে আইরিশদের তিনশোর নিচে (২৯২) রানে আটকাতে পেরেছে বাংলাদেশ। অন্তত এখন তাকে পারফরম্যান্সের অজুহাতে বাদ দেওয়ার সুযোগ তাই সামান্যই।

অথচ তাসকিন আহমেদ বিপিএলে চোটে না পড়লে জায়েদের নাম বিশ্বকাপে আসারই কথা ছিল না। তাসকিন অবশ্য বিশ্বকাপ দল দেওয়ার আগেই সেরে উঠেছিলেন। কিন্তু ম্যাচ ফিটনেস বলে যে একটা ব্যাপার আছে, সেখানে তাকে নিয়ে ছিল বিস্তর সংশয়। সেরা ছন্দটা তো হুট করেই এসে পড়ে না।

তাসকিনের জন্য অপেক্ষা না করে জায়েদকেই বিশ্বকাপ দলে নিয়ে নেন নির্বাচকরা। তবে আইসিসির অনুমতি ছাড়াই ২৩ মে পর্যন্ত দলে বদল আনার সুযোগ থাকায় তার ভাগ্য ঝুলছিল সুতোয়। আয়ারল্যান্ডে গিয়ে প্রস্তুতি ম্যাচেও সুযোগ না মেলায় একরকম নিয়তিই দেখতে পাচ্ছিলেন সিলেটের এই পেসার।তাসকিনও আয়ারল্যান্ডে থাকায় গুঞ্জন ছিল বাদই হয়ত পড়তে যাচ্ছেন তিনি। 

মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের হালকা চোটই কপাল খোলে দেয় তার। দলে যেহেতু নেওয়া হয়েছে একটু পরখ করে নিতেই অভিষেক হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ,সেই অভিষেক ম্যাচে অবশ্য কিছুই করতে পারেননি। নিজের জায়গা আরও বেশি প্রশ্নবিদ্ধই হয়ে পড়েছিল।

আইরিশদের বিপক্ষে বাংলাদেশের আপাত গুরুত্বহীন ম্যাচটা আবু জায়েদের জন্য ছিল সত্যিকারের অগ্নিপরীক্ষা। সে পরীক্ষায় তিনি এমন মার্কস তুলেছেন, যা হয়ত নিজেও কখনো ভাবেননি।

আবু জায়েদের এমন মুন্সিয়ানার পর বিশ্বকাপ দলে অদল বদলের প্রশ্নটাই হয়ত ফিকে হয়ে গেল।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago