রুহানিকে সরাতে চায় কট্টরপন্থিরা

Hassan Rouhani
গত এপ্রিলে তেহরানে ইরানের জাতীয় সেনা দিবসের কুচকাওয়াজে বক্তব্য রাখছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি হাসান রুহানি। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অবরোধ ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় ইরানের কট্টরপন্থিরা বেশ ক্ষেপেছেন দেশটির মধ্যপন্থি হিসেবে পরিচিত রাষ্ট্রপতি হাসান রুহানির ওপর। এখন দেশে-বিদেশে রুহানির বিরুদ্ধবাদীরা আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। আর এমন চাপে ক্রমশই যেনো দুর্বল হয়ে পড়ছেন- ইরানের ‘নাগরিক অধিকার সনদ’-এর প্রবক্তা রুহানি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে গতকাল (১৬ মে) বলা হয়, ২০১৩ সালে পূর্বসূরী চরম কটরপন্থি হিসেবে পরিচিত মাহমুদ আহমেদিনেজাদের কাছ থেকে ক্ষমতা নেওয়ার পর পশ্চিমের দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের সম্পর্কের তেমন কোনো উন্নতি ঘটাতে পারেননি রুহানি। ক্ষমতায় বসার দুই বছর পর অর্থাৎ ২০১৫ সালে রুহানির সরকার বিশ্বশক্তির সঙ্গে বহুল আলোচিত ‘পরমাণু চুক্তি’ করতে সক্ষম হলে আশা করা হয়েছিলো যে এর মাধ্যমে অবরোধপীড়িত ইরানের আর্থসামাজিক পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে।

কিন্তু, পরিস্থিতি এখন বড়ই বেসামাল। সবাই জানেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার আমলে স্বাক্ষরিত ইরানের ‘পরমাণু চুক্তি’ থেকে ২০১৮ সালে বের হয়ে আসেন দেশটির বর্তমান রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর তিনি ইরানের ওপর চাপাতে থাকেন একের পর এক অবরোধ। ঘোষণা দেন- ইরানের তেল রপ্তানিকে শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা হবে। শুধু তেল নয় ইরানের ইস্পাত শিল্পের ওপরও ট্রাম্প প্রশাসন চাপিয়ে দিয়েছে অবরোধ।

এতো গেলো দেশের বিষয়। ব্যক্তিগতভাবেও বেশ চাপের মধ্যে রয়েছেন রাষ্ট্রপতি রুহানি। ‘পরমাণু চুক্তি’র অন্যতম পরামর্শক ও তার ভাই হোসেন ফেরেইদুন দুর্নীতির দায়ে এখন কারাগারে। তবে তিনি কী ধরনের দুর্নীতি করেছেন তা বিচারকরা জানাননি। ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন অবরোধকে গুরুত্ব না দেওয়ার কট্টরপন্থিরা অভিযোগে বাণে বিদ্ধ করছেন রুহানির সরকারকে।

অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ- ইরানের ওপর থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার পরও রুহানি তার দেশের ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও প্রতিবেশী দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো বন্ধ করেনি।

এমন পরিস্থিতিতে রুহানির বক্তব্য, “যেসব বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে সেসব বিষয়ে (তার) সরকারকে কতোটুকু ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে- তা পরীক্ষা করে দেখা হোক।”

এর উত্তরে ইরানের বিচারব্যবস্থার প্রধান এবং সর্বোচ্চ ধর্মীয়নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উত্তরসূরী হিসেবে বিবেচিত ইব্রাহিম রাইসি বলেন, “সরকারের সব বিভাগকেই তাদের দায়িত্ব পালনের জন্যে পর্যাপ্ত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।”

রাইসির এমন বক্তব্যকে রুহানির প্রতি ধমক হিসেবে দেখছে দেশটির গণমাধ্যম। অনেক বিশ্লেষকদের মতে, রুহানির মেয়াদ শেষ হতে এখনো বাকি রয়েছে দুই বছর। কিন্তু, তাকে যদি ইরানিদের সব দুঃখ-কষ্টের জন্যে দায়ী করা হয় তাহলে হয়তো ভবিষ্যতে আরও কট্টর পশ্চিমবিরোধী কাউকে বেছে নেওয়া হতে পারে ইরানের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে।

আরও পড়ুন:

ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পাশে রয়েছে যুক্তরাজ্য

Comments

The Daily Star  | English
What’s in the new budget?

Budget to set 10 priorities

Govt puts inflation control, revenue reform, fiscal restraint at the heart of its economic plan

9h ago