এসএম হলে হামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা, প্রক্টর বলছেন ‘তদন্ত চলছে’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে (এসএম হল) ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর ও তার সঙ্গীদের ওপর হামলা-ডিম নিক্ষেপের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা হয়েছে।
SM Hall
২ এপ্রিল ২০১৯, ছাত্রলীগের হামলার বিচার ও হল থেকে বহিরাগতদের উচ্ছেদের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ডাকসুর ভিপি নুরুলসহ শিক্ষার্থীদের অবস্থান ধর্মঘট। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে (এসএম হল) ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর ও তার সঙ্গীদের ওপর হামলা-ডিম নিক্ষেপের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা হয়েছে।

গত ৭ মে হল প্রাধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম জোয়ার্দারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের কাছে ওই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক সাব্বীর আহমেদ।

তদন্তে প্রতিবেদনে উঠে আসা তথ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে এসএম হলের আবাসিক এই শিক্ষক গত ১৫ মে দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বলেন, “আমাদের কাজ ছিলো পুরো ঘটনাটির তদন্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করেছি। এ নিয়ে এর বাইরে আর কোনো তথ্য প্রদানের এখতিয়ার আমার নেই।”

ওইদিন এ বিষয়ে জানার জন্য ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সফল হওয়া যায়নি। এর পরদিন ১৬ মে রাতে তিনি জাপানের নারা উইমেনস বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকা ত্যাগ করেন।

জাপানে তিনদিন কাটিয়ে গতকাল রাতে উপাচার্যের দেশে ফেরার খবর জানার পর আজ (২০ মে) দুপুরে তার সঙ্গে ফের যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হতে হয়। প্রতিবার ফোন করার পর তার ব্যক্তিগত সহকারী জানান যে, উপাচার্য ব্যস্ত রয়েছেন।

তবে, ঢাবির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ বলেছেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমার পর সিন্ডিকেটে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সিন্ডিকেটে গিয়েই খোলা হয়, তার আগে কেউ দেখেন না। তবে তদন্ত প্রতিবেদন দেখার একমাত্র এখতিয়ার রয়েছে উপাচার্যের। প্রতিবেদন খুলে দেখার পর উনি যদি মনে করেন যে, এই জায়গায় সমস্যা রয়েছে, সেখানে কাজ করার বা ব্যবস্থা নেওয়ার উপায় আছে, তাহলে তিনি সংশ্লিষ্টদের কাছে তা পাঠিয়ে দেন বা দিতে পারেন।”

“আমার জানা মতে, উপাচার্য প্রতিবেদনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে মার্ক করে দিয়ে দিয়েছেন এবং দেখতে বলেছেন যে এর মধ্যে কী রয়েছে”, যোগ করেন তিনি।

তার ভাষ্যে, “এসব একটি-দুটি হামলার সত্য অনুসন্ধান করে জড়িতদের সঠিকভাবে শাস্তি দেওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভালো হয়। একটি হামলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আরও পাঁচটি হামলা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। পরবর্তীতে আর কেউ সাহস পায় না।”

এসএম হলে হামলার ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাবি প্রক্টর একেএম গোলাম রব্বানী বলেছেন, “এসএম হলে হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিকভাবে তদন্ত চলছে ও তদন্ত প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।”

তদন্ত কমিটির প্রধান বলেছেন যে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে আর আপনি বলছেন তদন্ত চলছে, কোনটি বিশ্বাসযোগ্য? জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, “তদন্ত প্রক্রিয়া বলেছি আপনাকে। কারণ- এটি একটি প্রসেস তো। এর পরবর্তী...প্রক্রিয়াধীন আছে। কী হবে, সেটি আমরা দেখছি।”

এরপর, একটি জরুরি মিটিংয়ে রয়েছেন জানিয়ে তিনি মুঠোফোন সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।

এসব বিষয়ে হামলার শিকার ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা একটা অশুভ তৎপরতা লক্ষ করছি। প্রশাসন বরাবরই ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের সন্ত্রাসী কার্যক্রমকে প্রশ্রয় দিয়ে আসছে। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার যে গতানুগতিক প্রবণতা, তাদের মধ্যে সেটিই প্রকট হয়ে উঠছে।”

“এই ঘটনায় এর আগে যেহেতু উপাচার্য আমাদের জানিয়েছিলেন যে, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। সেহেতু আমরা তাদের প্রতি আস্থা রাখতে চাই। যদিও তাদের দ্বারা কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া আদৌ সম্ভব কী-না, তা আমরা নিশ্চিত নই”, মন্তব্য নুরের।

তবে নুর জানান যে, শীঘ্রই এ বিষয়টির অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করবেন তারা। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুততর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের বাধ্য করবেন।

আরও পড়ুন:

এসএম হলে হামলা: দু-একদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে তদন্ত কমিটি

অন্তত ১৩ জন ছাত্রলীগের পদধারী হামলাকারীকে চিহ্নিত করেছি: নুর

খালি ওদের ওপর ডিম মারেনি, ডিম তো আমিও খেয়েছি: প্রাধ্যক্ষ

ভিপি নুরুলের ওপর হামলা: উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ

‘ছাত্রলীগের’ হাতে অবরুদ্ধ ভিপি নুর, প্রাধ্যক্ষের হস্তক্ষেপে উদ্ধার

Comments

The Daily Star  | English

3 quota protest leaders held for their own safety: home minister

Three quota protest organisers have been taken into custody for their own safety, said Home Minister Asaduzzaman Khan

16m ago