পশ্চিমবঙ্গে ৩৯ বাম প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বামফ্রন্টের বিপর্যয় বললে ভুল হবে। বলা ভালো, জনরায়ের বিবেচনায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যটিতে বামফ্রন্টের প্রতি মানুষের আর কোনও সমর্থন বা আগ্রহই নেই।
লোকসভা নির্বাচনের ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে ৪২ আসনের মধ্যে ৪০ আসনে বামফ্রন্টের দেওয়া প্রার্থীর ৩৯ জন তাদের জামানত খুইয়েছেন।
২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে ৪২ আসনে প্রার্থী দিয়ে দুজন সাংসদ নির্বাচিত করতে পেরেছিলেন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রর মতো বাম নেতৃত্ব। এবার তাদের পক্ষে একজন জনপ্রতিনিধিকেও জিতিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।
ভোটের হিসাব বলছে, যাদবপুর লোকসভা আসনের বামফ্রন্ট প্রার্থী প্রাক্তন মেয়র বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য ছাড়া বাকি সবাই নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রদেয় ২৫ হাজার রুপি আর ফেরত পাবেন না অর্থাৎ তাদের এই জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
কমিশনের আইন বলছে, লোকসভা কেন্দ্রের ভোটাদের গড় ভোটের ১৬.৬ শতাংশ না পেলে প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত করবে নির্বাচন কমিশন। এই হিসাব ধরলে এবার ৩৯ জন বামফ্রন্ট প্রার্থীর সর্বমোট ৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকার জামানত খুইয়েছে দলীয়ভাবে বামফ্রন্ট।
শুধু তাই নয়, রাজ্যের শীর্ষস্থানীয় বামফ্রন্ট নেতাদের মধ্যে যারা প্রার্থী হয়েছেন, সবাই মোটামুটি গোহারা হেরেছেন ভোটের বিচারে।
বামফ্রন্টের পলিটব্যুরোর সদস্যরা মহম্মদ সেলিমও হেরেছেন এবার লোকসভা নির্বাচনে। ২০১৪ সালে দেশজুড়ে বিজেপির পক্ষে হাওয়ার সময়ও মহম্মদ সেলিম জিতেছিলেন রায়গঞ্জ আসন থেকে। তবে এবার তিনি ছাড়াও মুর্শিদাবাদ থেকে আরেক জয়ী সাংসদও হেরেছেন। তার নাম বদরুদ্দজা খান। এই দুজন সাংসদও এবার হেরেছেন।
এছাড়াও হেরেছেন শীর্ষ বাম নেতা নেপাল দেব ভট্টাচার্য, হরিপদ বিশ্বাস, আভাস রায় চৌধুরী, ডাক্তার রেজাউল করিম, শক্তিমোহন মল্লিক, নন্দিনী মুখার্জি, ভগীরথ রায়, বিপ্লব ভট্টা, বীর সিং মাহাতো, মাসসুতা খাতুন, ডাক্তার ফুয়াদ হালিম, পল্লব সেনগুপ্ত, রমেণ বর্মনের মতো বাঘা বাঘা বাম নেতা তথা প্রার্থীরা। তারা কোথাও তৃতীয়, কোথাও বা চতুর্থস্থান লাভ করেছেন।
ভোটের ফল নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ‘দলীয়ভাবে এই বিপর্যয়কে ভয়াবহ বলে’ আখ্যা দিয়েছেন বামফ্রন্টের বিধানসভার দলনেতা ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্র। তিনি বলেন, “এই বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে বৈঠক ডাকা হবে শিগগিরই।”
Comments