মৌলভীবাজারে নারী আইনজীবীর মৃতদেহ উদ্ধার
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় আবিদা সুলতানা (৩৫) নামে এক নারী আইনজীবীকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। আজ (২৭ মে) ভোররাত আড়াইটার দিকে উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নের মাধবগুল গ্রামের পৈতৃক বাড়ি থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
গতকাল দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে যেকোনো সময় তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
এদিকে, আজ (২৭ মে) মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ আইনজীবী আবিদা সুলতানার অকাল মৃত্যুতে জেলা জজশিপ, ম্যাজিস্ট্রেসি এবং জেলা আইনজীবী সমিতি ‘ফুল কোর্ট ডেথ রেফারেন্স’ পালন করছে বলে জানান মৌলভীবাজার বার এসোসিয়েশনের কার্যকরী কমিটিার সদস্য সুবিমল লিন্ডকিরি।
নিহত আবিদা উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নের মাধবগুল গ্রামের মৃত আব্দুল কাইয়ুমের মেয়ে।
খবর পেয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও বড়লেখা থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এদিকে ঘটনার পর থেকে আবিদার পৈতৃক বাড়িতে থাকা ভাড়াটিয়া তানভীর আহমদ (৩০) পলাতক রয়েছেন।
থানা পুলিশ, স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আব্দুল কাইয়ুমের তিন মেয়ে রয়েছে। স্ত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন এবং তিনি দ্বিতীয় মেয়ের কাছে বিয়ানীবাজারের বাড়িতে থাকেন।
আব্দুল কাইয়ুমের তিন মেয়ে বিবাহিত। তাদের মধ্যে আবিদা সুলতানা (৩৫) বড়। আবিদা মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী। আবিদার স্বামী শরীফুল ইসলাম একটি ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরত রয়েছেন। তিনি স্বামীর সঙ্গে মৌলভীবাজারে শহরে বসবাস করতেন।
এদিকে, তাদের পৈতৃক বাড়িতে ভাড়া থাকতেন উপজেলার চরকোনা গ্রামের মনির আলীর ছেলে তানভীর আহমদ। গতকাল সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টায় আবিদা বিয়ানীবাজারে বোনের বাড়িতে থেকে জরুরি প্রয়োজনে বাবার বাড়িতে যান। বিকেল আনুমানিক চারটার দিকে আবিদার বোন তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাচ্ছিলেন না।
পরে আবিদার বোনেরা তাকে খুঁজতে বাবার বাড়িতে আসেন। বাড়িতে এসে তারা কাউকে পাননি। এসময় ঘরের একটি কক্ষে তালা দেখতে পেয়ে তাদের সন্দেহ হয়। পরে তারা পুলিশ সঙ্গে নিয়ে তালা ভাঙ্গেন এবং বোনের লাশ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন।
নিহত আবিদার বোনের স্বামী মারুফ আহমদ বলেন, “আবিদা মৌলভীবাজারে যাওয়ার জন্য সকালে আমাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। দুদিন আগে তিনি আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। গতকাল সকালে সেখান থেকে বাবার বাড়িতে যান। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ মিলছিলো না। পরে আমার স্ত্রী খুঁজতে এখানে (মাধবগুলে) আসেন। এখানে ঘরে প্রবেশ করে একটি কক্ষ তালাবন্ধ অবস্থায় পান। পরে পুলিশ নিয়ে গিয়ে তালা ভেঙে তার লাশ উদ্ধার করেছে।”
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক বলেন, “নিহতের মাথায় ও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। তানভীরের মা ও স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”
Comments