‘আমার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায়, আমাকেও মারধর করে’

বগুড়ায় গতকাল ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে ছাত্রলীগের হামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরসহ আরও অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও, নুরের ওপর আক্রমণের ভিডিও ধারণ করতে যাওয়ায় বেসরকারি যমুনা টেলিভিশনের ভিডিওগ্রাফার শাহনেওয়াজ শাওনকেও মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
Shahnewaz Shawon
শাহনেওয়াজ শাওন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

বগুড়ায় গতকাল ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে ছাত্রলীগের হামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরসহ আরও অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও, নুরের ওপর আক্রমণের ভিডিও ধারণ করতে যাওয়ায় বেসরকারি যমুনা টেলিভিশনের ভিডিওগ্রাফার শাহনেওয়াজ শাওনকেও মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

বিষয়টি নিয়ে আজ (২৭ মে) শাহনেওয়াজ শাওনের সঙ্গে দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনের কথা হয়।

শাহনেওয়াজ শাওন বলেন, “বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বগুড়া জেলা শাখার পক্ষ থেকে শহরের সাতমাথা মোড়ের কাছে উডবার্ন সরকারি গ্রন্থাগার মিলনায়তনে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে বলে গতকাল আমাকে ফোন করে জানানো হয়। আয়োজকরা জানান যে, ওই ইফতার মাহফিলে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর আসবেন। সে অনুযায়ী আমরা এখানে আয়োজন শুরু করেছি কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ বলছে যে এখানে ইফতার মাহফিল করতে দেওয়া হবে না। কারণ আমাদের লিখিতভাবে অনুমতি দেওয়া হয়নি।”

“এই খবর পাওয়ার পর আমি বিকেলে অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে হাজির হই। সেখানে বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক ও টেলিভিশনের কর্মীরা ছিলেন। গিয়ে দেখি, পুলিশের কাছ থেকে বাধা পাওয়ায় আয়োজকরা ভেন্যু পরিবর্তনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ভিপি নুরের জন্য অপেক্ষা করছেন। এর কিছুক্ষণ পর, নুর এসে যখন আয়োজকদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করছিলেন, ঠিক তখনই স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসে অতর্কিতে তাদের ওপর হামলা চালায়”, যোগ করেন তিনি।

শাওনের ভাষ্য, “ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নুর ও তার সঙ্গীদের এমন বেদম প্রহার করেছে যে, তা বলার কোনো ভাষা নেই। এর মধ্যেই আমি ছবি তুলতে গেলে তারা আমার ওপরও হামলে পড়ে এবং আমার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায় ও আমাকে মারধর করে। যদিও তারা ক্যামেরাটি ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়নি এবং ততক্ষণে এক ব্যক্তি সহায়তায় আমি কোনোভাবে ওই স্থান থেকে বের হয়ে আসি।”

হামলাকারীদের চেনেন কী-না? জানতে চাইলে যমুনা টেলিভিশনের এই ভিডিওগ্রাফার বলেন, “হামলাকারীদের বেশিরভাগই স্থানীয় ছাত্রলীগের পদধারী নেতা। সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফ, বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক মুকুল ইসলাম, শাহ সুলতান কলেজ শাখাসহ জেলা শাখা ছাত্রলীগের প্রায় ২০ থেকে ৩০ জন নেতা-কর্মী হামলায় অংশ নেয়।”

“কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওরা (ছাত্রলীগ) অতর্কিতে এসে হামলা চালিয়েছে। নুরও বুঝতে পারেনি যে এখানে এসে তাকে এভাবে মার খেতে হবে”, বলেন শাহনেওয়াজ।

তবে, বগুড়া জেলা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক দাবি করেছেন, ‘হামলা নয়, ভিপি নুরের সঙ্গে হালকা ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহনেওয়াজ শাওন বলেন, “না, ছাত্রলীগের এমন দাবি সত্যি নয়। তাছাড়া, পুলিশও ছাত্রলীগের মতো করে কথা বলছে। পুলিশ আগে থেকেই জানতো যে, সেখানে ইফতার মাহফিল করতে দেওয়া হবে না। নুর আসলে ছাত্রলীগ হামলা করতে পারে এমন ধারণা ছিলো পুলিশের। এতসব জানা সত্ত্বেও পুলিশ তবে কেনো সেখানে কোনো মোবাইল টিম পাঠায়নি?”

শাওন আরও জানান, দায়িত্বপালনকালে গতকাল তিনি হামলার শিকার হওয়ায়, হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে আজ দুপুরে মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন বগুড়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা।

সেখান থেকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

আরও পড়ুন:

বগুড়ায় ডাকসু ভিপি নুরের ওপর হামলার অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

51m ago