বাংলাদেশের নদীগুলোও বিশ্বের সর্বোচ্চ মাত্রায় এন্টিবায়োটিক দূষণের শিকার
বিশ্বের যেসব দেশের নদীতে সর্বোচ্চ মাত্রার এন্টিবায়োটিকের উপস্থিতি রয়েছে, তার মধ্যে নদীমাতৃক বাংলাদেশ অন্যতম। গতকাল প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে যে, কেনিয়া, ঘানা, পাকিস্তান ও নাইজেরিয়ার মতো বাংলাদেশের নদীগুলোও মারাত্মকভাবে এন্টিবায়োটিক দূষণের শিকার।
ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকির এক সম্মেলনে প্রকাশিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের একটি স্থানে বহুল ব্যবহৃত এন্টিবায়োটিক মেট্রোনিডাজলের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়েও ৩০০ গুণ বেশি পাওয়া গেছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী নদীগুলো যে হারে এন্টিবায়োটিক দূষণের শিকার হয়েছে, তাতে করে পরিবেশগত ঝুঁকির মাত্রাও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০০ গুণ।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বিশ্বের ৭২টি দেশের নদী থেকে ৭১১টি নমুনা সংগ্রহের পর তা পরীক্ষা করে এর দুই তৃতীয়াংশের মধ্যেই এক বা ততোধিক পরিচিত এন্টিবায়োটিক খুঁজে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
এছাড়াও, কয়েক ডজন স্থানে মানুষ ও গবাদিপশুর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয় এমন ওষুধের মাত্রা পরীক্ষা করে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় থাকার কথা জানানো হয়েছে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এর জন্য বিশ্বের শতাধিক জৈব প্রযুক্তি ও ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোর একটি জোট ‘এএমআর ইন্ডাস্ট্রি অ্যালায়েন্স’-কে দায়ী করা হয়েছে।
ইয়র্ক এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনিবিলিটি ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী অ্যালিস্টেয়ার বোক্সাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, “গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলের দিকে তাকালে বিশ্বের এন্টিবায়োটিক দূষিত নদীগুলোর করুণ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে এবং যা খুবই উদ্বেগজনক।”
ইতিমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করে দিয়ে বলেছে যে, রোগ প্রতিরোধে সঠিকভাবে কার্যকর এমন এন্টিবায়োটিকের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। ফলে সংস্থাটির পক্ষ থেকে নতুন প্রজন্মের ওষুধ আবিষ্কারের ওপর জোর দিতে সরকার ও প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
Comments