মোদির শপথ অনুষ্ঠান নিয়ে যা বলেননি অমর্ত্য সেন
গত পাঁচদিন থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেনের একটি ‘ভাষ্য’ বেশ হৈচৈ সৃষ্টি করে রেখেছে। ভারতের বাংলাভাষী ব্লগ ‘ভারত নিউজ’ দাবি করে যে একটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে স্বনামধন্য এই অর্থনীতিবিদ বলেছেন- “মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান দেখার চেয়ে কার্টুন দেখতে বেশি পছন্দ করি।”
হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিজেপির নেতা হিসেবে লোকসভায় বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসতে যাওয়া নরেন্দ্র মোদির শপথ নিয়ে বিশ্বখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির জোরালো সমর্থক অমর্ত্য সেনের এমন মন্তব্য ভারতীয় গণমাধ্যমের দৃষ্টি কাড়বে তা স্বাভাবিক।
কিন্তু, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে-র অ্যান্টি ফেইক নিউজ ওয়ার রুম (এএফডব্লুএ) বিভাগ জানতে পারে যে মোদির শপথ অনুষ্ঠান নিয়ে প্রবীণ এই অর্থনীতিবিদ সম্প্রতি এমন কোনো মন্তব্য করেননি।
‘বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ’ এবং ‘অটোম্যান এম্পায়ার’ নামক দুটি ফেসবুক পেজে অমর্ত্য সেনের বরাত দিয়ে প্রকাশিত খবরটি শেয়ার করায় সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
গত ২৩ মে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণায় দেখা যায় প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ভালো ফল করেছে ধর্মভিত্তিক দল বিজেপি। এর ফলে মর্মাহত হয়েছেন ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষের লোকজন।
২০১৪ সালে দেশটির ক্ষমতায় বিজেপি আসার পর থেকেই দলটির তথা মোদি সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করে আসছেন অমর্ত্য সেন। এমনকী, এবার ২৩ মে বিজেপির দ্বিতীয়বারের জন্যে ক্ষমতায় আসার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরদিন অমর্ত্য সেনের একটি মতামত প্রকাশিত হয় দ্য নিউইয়র্ক টাইমসে। ‘মোদি ভোটে জয়লাভ করতে পারেন কিন্তু, ভাবনার যুদ্ধে নয়’ শিরোনামের সেই লেখায় অমর্ত্য সেন তীব্র ভাষায় মোদির সমালোচনা করেছেন।
মতামতটিতে তিনি তুলে ধরেন ভারতের বেকারত্বের ক্রমবর্ধমান হার, অর্থনীতির দুরবস্থা, দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা, ধর্মীয় উত্তেজনা, সীমান্ত-সংঘাত এবং রাজনৈতিক স্বেচ্ছাচারিতাসহ মোদি সরকারের ব্যর্থতার বিভিন্ন দিক।
বিবিসি লন্ডনের সূত্র দিয়ে ‘ভারত নিউজ’ গত ২৪ মে অমর্ত্য সেনের একটি সাক্ষাৎকার তুলে ধরছে। এতে বলা হয়েছে- অমর্ত্য সেনের মতে, “মোদি মোটেই সুশাসক নন, মোদির সরকার দেশকে অনেক পিছিয়ে দিবে।” তিনি আরও বলেন, “ভারতীয়দের বুদ্ধি লোপ পেয়েছে, তাই তারা ভালোমন্দের বিচার করতে অক্ষম।”
অমর্ত্য সেনের বরাত দিয়ে এই কথাগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে বিবিসি-তে অমর্ত্য সেনের এমন কোনো সাক্ষাৎকারের অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি ইন্ডিয়া টুডে-র এএফডব্লুএ বিভাগ।
Comments