কারগিল যুদ্ধের সৈনিকও ‘বিদেশি’ হিসেবে আসামের কারাগারে!

প্রায় ২০ বছর আগে তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন কারগিল যুদ্ধে। অবসরে গিয়েছেন একজন অনারারি লেফটেনেন্ট হিসেবে। কিন্তু, ভারতের আসাম রাজ্যে চলমান নাগরিকপঞ্জির মারপ্যাঁচে পড়া সেই সৈনিক এখন বিদেশি বা অবৈধ অভিবাসী হিসেবে রয়েছেন কারাগারে।
গতকাল (২৯ মে) গৌহাটি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে তোলার পর ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে মোহাম্মদ সানাউল্লাহ নামের ভারতীয় সেনাবাহিনীর সেই সদস্যকে বিদেশি হিসেবে ঘোষণা দিয়ে তাকে আটক শিবিরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৮ মে সানাউল্লাহকে তলব করে সীমান্ত পুলিশ হিসেবে পরিচিত আসাম পুলিশ সীমান্ত সংস্থা। এর খানিক পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর গ্রেপ্তারের পরপরই বিদেশি চিহ্নিতকরণ আদালত সানাউল্লাহকে বিদেশি হিসেবে ঘোষণা দেয়।
আরও দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো যে ৫২ বছর বয়সী লেফটেনেন্ট সানাউল্লাহ একসময় কাজ করেছিলেন সীমান্ত পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক হিসেবে। রাজ্যের নিয়ম অনুযায়ী অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তাদের নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। সেই হিসেবে তার কাজ ছিলো অবৈধ ও সন্দেহজনক অভিবাসীদের আটক করা।
দুঃখদায়ক ঘটনা
মোহাম্মদ সানাউল্লাহর চাচাতো ভাই মোহাম্মদ আজমল হক সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, “একজন সাবেক সেনা সদস্যের বিদেশি নাগরিক হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনাটির চেয়ে দুঃখজনক, হৃদয়বিদারক আর কিছু নেই।”
আজমলের প্রশ্ন, “সেনাবাহিনীতে সানাউল্লাহর ৩০ বছর চাকরি জীবনের পুরস্কার কি এই গ্রেপ্তার? অথবা এটি কি তার কারগিল যুদ্ধের পুরস্কার?”
তার মতে, আসামে জন্ম নেওয়া সানাউল্লাহ ১৯৮৭ সালে ২০ বছর বয়সে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। কিন্তু, ভুলক্রমে ১৯৮৭ সালের জায়গায় ১৯৭৮ লেখা হয়। আর এতেই সন্দেহ হয় নাগরিকপঞ্জির কর্তাব্যক্তিদের। সন্দেহের কারণে তারা সানাউল্লাহকে বিদেশি সাব্যস্ত করে।
দুই মেয়ে ও এক ছেলের জনক সানাউল্লাহর দূরসম্পর্কীয় এক আত্মীয় জানান, তাদের আশা, উচ্চ আদালতে এ বিষয়ে সুবিচার পাওয়া যাবে।
Comments