ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক: নির্বিঘ্ন যাত্রার আশ্বাস কর্তৃপক্ষের, চালকদের দুশ্চিন্তা

Dhaka tangail Highway
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের করটিয়া এলাকায় নির্মাণাধীন আন্ডারপাসের কারণে ধীরগতিতে যান চলাচল করতে দেখা গেছে। ছবি: স্টার/মির্জা শাকিল

অন্যান্য বছরের মত এবার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ঈদযাত্রায় যানজট ভোগান্তির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন মহাসড়ক পরিচালনায় নিয়োজিত কর্তৃপক্ষ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গাজীপুরের ভোগড়া থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার চার লেনের সড়কের কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে মহাসড়কে নবনির্মিত দুটি ফ্লাইওভার (কোনাবাড়ি এবং চন্দ্রা) এবং চারটি আন্ডারপাসের (ঘারিন্দা, মির্জাপুর, দেওহাটা এবং কালিয়াকৈর) ব্যবহার শুরু হয়েছে। এছাড়াও, মহাসড়কের দুইদিকের বর্ধিত কাজেরও প্রায় ৬০ শতাংশ সমাপ্ত হয়েছে। পাশাপাশি যাত্রীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে হাইওয়ে পুলিশ এবং টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ।

অপরদিকে, গাড়ীর চালকরা মহাসড়কের অসমাপ্ত সাতটি আন্ডারপাস (তারটিয়া, করটিয়া, বাওইখোলা, নাটিয়াপাড়া, জামুর্কি, কুরনি এবং ধল্লা) নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তার কথা জানিয়ে এসব পয়েন্টে যানবাহনের ধীরগতির কারণে যানজটের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও, ট্রাফিক অব্যবস্থাপনার কারণে বিগত বছরগুলোর মত এবারও বঙ্গবন্ধু সেতুর দুই প্রান্তে বিশেষ করে পশ্চিমপ্রান্তে যানজটের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন তারা।

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক উত্তরবঙ্গের গেট হিসেবে পরিচিত। উত্তরবঙ্গের ১৬টি এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাঁচটি জেলাসহ মোট ২৬টি জেলার প্রায় ১১৬টি রুটের যানবাহন এই মহাসড়কে চলাচল করে। স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ হাজার গাড়ী এই মহাসড়কে চলাচল করে, যা ঈদের আগে ও পরের কয়েকদিন বেড়ে যায় কয়েকগুণ। ফলে যানজটের সঙ্গে সঙ্গেই বাড়তে থাকে ভোগান্তি।

ঢাকা-পাবনা রুটের যাত্রীবাহী বাসচালক সাইফুল ইসলাম নির্মাণাধীন আন্ডারপাস এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই যানজট সৃষ্টির কথা উল্লেখ করে বলেন, “ঈদের দুই-তিনদিন আগে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে এসব এলাকায় দীর্ঘ যানজট হতে পারে।”

তবে, জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা চার লেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক অমিত কুমার চক্রবর্তী আশ্বস্ত করে বলেন, “দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই, কেননা ইতিমধ্যে অসমাপ্ত আন্ডারপাসগুলো দিয়ে স্বাভাবিকভাবে যান চলাচলের জন্য অস্থায়ীভাবে কনক্রিটের রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।”

এছাড়াও, এসব পয়েন্টে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, “ঈদযাত্রার প্রতিটি লোক ঘরে না ফেরা পর্যন্ত এই মহাসড়কে মোতায়েন প্রায় এক হাজার পুলিশ কর্মকর্তা এবং সদস্য ব্যারাকে ফিরবে না। যেসব স্থানে রাস্তা বা আন্ডারপাস নির্মাণ হচ্ছে, সেসব স্থানে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা হবে।”

এদিকে, বিগত কয়েক বছরের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে, ট্রাফিক অব্যবস্থাপনার কারণে বঙ্গবন্ধু সেতুর দুইপ্রান্তে বিশেষ করে পশ্চিমপ্রান্তের সিরাজগঞ্জ অংশে এবারও তীব্র যানজটের আশঙ্কা করছেন পরিবহন শ্রমিকরা।

বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল আলম জানান, এ বছর যানজট মোকাবিলায় সিরাজগঞ্জ পুলিশের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সেতুর পশ্চিমপ্রান্ত থেকে হাটিকুমরুল মোড় পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার রাস্তাসহ বগুড়া পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে দুই লেনের রাস্তাটি সংস্কার এবং রোডমার্কিং করার জন্য বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের নিকট সুপারিশ করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের সহকারী প্রকৌশলী আহসানুল হক পাভেল জানান, বঙ্গবন্ধু সেতুর টোলপ্লাজার সফটওয়্যার সিস্টেম সচল রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। এ সিস্টেমের দায়িত্বরত প্রকৌশলীরা ২৪ ঘণ্টা তাদের দায়িত্বপালন করবেন। এছাড়াও, ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ মোকাবিলায় সেতুর দুই প্রান্তে ছয়টি করে মোট ১২টি টোলবুথের পাশাপাশি অতিরিক্ত আরও দুটি বুথ দুই প্রান্তে সংযোজন করা হবে।

Comments

The Daily Star  | English

TCB resumes sale amid price hike, low turnout

Under this mobile "Truck Sale" initiative, TCB is selling edible oil, sugar, and lentils at subsidised rates. The prices are set at Tk 135 per litre for cooking oil, Tk 85 per kg for sugar, and Tk 80 per kg for lentils

50m ago