টটেনহ্যামকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা লিভারপুলের
পার্থক্যটা কে গড়ে দিলেন? মোহাম্মদ সালাহ না-কি লিভারপুল গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার? শুরুতেই দলকে এগিয়ে দিয়েছেন সালাহ। আর একের পর এক দুর্দান্ত সেভ করে গেছেন অ্যালিসন । তবে ম্যাচের নায়ক যেই হোন না কেন ২০০৫ সালের পর আবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা ঘরে তুলেছে লিভারপুল। শনিবার রাতে (২ জুন) টটেনহ্যাম হটস্পারকে ২-০ গোলে হারিয়ে ইউরোপ সেরার মুকুট পড়েছে দলটি।
গত আসরেও ফাইনাল খেলেছিল লিভারপুল। সের্জিও রামোসের আঘাতে ম্যাচের শুরুতেই মাঠ ছেড়েছিলেন সালাহ। এবার আর এমন কিছু হয়নি। এছাড়া গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকারও করেননি গতবারের গোলরক্ষক লরিস ক্যারিয়াসের মতো করেননি কোনো হাস্যকর ভুল। উল্টো একের পর এক অবিশ্বাস্য সেভ করেছেন। আর তাতেই জয় পায় অলরেডরা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এটা ছিল ইয়র্গেন ক্লপের তৃতীয় ফাইনাল। লিভারপুলের হয়ে গত মৌসুমে হয়নি। এর আগে পারেননি বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে ফাইনালে উঠিয়েও। তবে এবার পারলেন। তৃতীয়বারে শিরোপায় চুমু খেতে পারলেন হালের অন্যতম সেরা এ কোচ। অন্যদিকে, পাঁচ বছরের প্রচেষ্টায় টটেনহ্যামকে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে তুলে খালি হাতেই ফিরতে হলো মাউরিসিও পচেত্তিনোকে।
ওয়ান্দা মেত্রোপলিতনে এদিন ম্যাচের প্রথম মিনিটেই পেনাল্টি পায় লিভারপুল। সাদিও মানের শট ডি-বক্সের মধ্যে মৌসা সিসোকোর হাতে লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। আর তা থেকে সফল স্পটকিকে দলকে এগিয়ে দেন সালাহ। প্রথম মিশরীয় ফুটবলার হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে গোল করার কৃতিত্ব দেখান তিনি।
এরপর পানসে ফুটবলই হয় ম্যাচের শেষ ১০ মিনিটের আগ পর্যন্ত। ভালো কোনো আক্রমণ হয়েছে খুব কমই। ১৭তম মিনিটে অ্যালেকজান্ডার-আর্নল্ডের দূরপাল্লার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট না হলে ব্যবধান বাড়াতে পারতো লিভারপুল।
৩৮তম মিনিটে অ্যান্ড্রিউ রবার্টসনের দূরপাল্লার জোরালো শট দারুণ দক্ষতায় কর্নারের বিনিময়ে টটেনহ্যাম গোলরক্ষক হুগো লরিস না ফেরালে তখনও ব্যবধান বাড়তে পারতো। ৫৪তম মিনিটে নিজেদের অর্ধ থেকে উড়ে আসা বলে সমতায় ফেরার ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন ডেলে আলি। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি। ৬৯তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন লিভারপুলের বদলি খেলোয়াড় জেমস মিলনার। মানের পাস থেকে সালাহর পা ঘুরে আসা বলে দারুণ শট নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অল্পের জন্য বার পোস্ট ঘেঁষে তা বাইরে চলে যায়।
৭২তম মিনিটে আলি দুর্বল শট হাতে তুলে দেন অ্যালিসনের। সাত মিনিট পর কিয়েরান ট্রিপিয়ারের ক্রসে ভালো হেড নিয়েছিলেন আলি। কিন্তু লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। স্পার্সরাও পারেনি গোল শোধ করতে। পরের মিনিটে লিভারপুলের ত্রাতা অ্যালিসন। দুই দফা দারুণ সেভ করেন তিনি। প্রথমে সন হিউং-মিনের দূরপাল্লার জোরালো শট বাঁ প্রান্তে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন। এরপর বদলি খেলোয়াড় লুকাস মোউরার শটও ফেরান। পরের মিনিটে আবার সনকে হতাশ করেন অ্যালিসন।
৮৫তম মিনিটে আরও একটি দুর্দান্ত সেভ করেন অ্যালিসন। ফ্রি-কিক থেকে নেওয়া ক্রিস্টিয়ান এরিকসনের কোণাকুণি শট দারুণ দক্ষতায় বাঁ প্রান্তে ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক। ধারার বিপরীতে দুই মিনিট পর ব্যবধান বাড়ায় লিভারপুল। কর্নার থেকে আসা বলে সৃষ্ট জটলায় জোয়েল ম্যাটিপের পা থেকে ফাঁকায় বল পেয়ে যান বদলি খেলোয়াড় দিভোক ওরিগি। দারুণ এক কোণাকুণি শটে বল জালে জড়ান এ বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড।
ম্যাচের যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ডেনি রোজের শট ফেরান অ্যালিসন। পরের মিনিটে সনের বাঁ পায়ের শট তো অ্যালিসন ফেরান অবিশ্বাস্য দক্ষতায়। ২০ সেকেন্ড যেতে না যেতেই হ্যারি কেইনকেও হতাশ করেন এ ব্রাজিলিয়ান। ফলে ক্লিনশিট রেখেই মাঠ ছাড়েন অ্যালিসন।
Comments