সাকিবের এমন ‘ইনভলভমেন্ট’ দিচ্ছে বড় কিছুর আভাস

Shakib Al Hasan
ছবি: এএফপি

ইংরেজি শব্দ ‘ইনভলভমেন্ট’ এতটাই ক্রিকেটের সঙ্গে মানিয়ে যায়, এর আক্ষরিক বাংলা ‘সম্পৃক্ততা’ লিখলে আসল ব্যাপারটার নির্যাস ঠিক বোঝা যায় না। বিশ্বকাপে ম্যাচের মধ্যে ও ম্যাচের বাইরে বাংলাদেশ দলে সাকিব আল হাসানের ভূমিকা বোঝাতে ‘ইনভলভমেন্ট’ শব্দটাই বেশ জুতসই।

সেদিন ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিংয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রভাব বিস্তার করে দলের জয়ে অবদান রেখেছেন তিনি, হয়েছেন ম্যাচ সেরা। সবার চোখেই এসব ফলাও করে ধরা দেওয়ার মতো ছবি। কিন্তু আরও কিছু ছোটখাটো ব্যাপার আছে যা চট করেই ধরা দেয় না, তলিয়ে দেখলেই তার খোঁজ মেলে।

যেমন ধরুন, কোনো পরিস্থিতিতে ৫০ ভাগ চেষ্টা দিলেও কাজ সেরে ফেলা যায়, সেখানে শতভাগেরও বেশি দিয়ে কাজটা নিশ্চিত করা। নিজের মধ্যে গুটিয়ে না থেকে বাকিদের সাহায্য করা, কেউ নেতিয়ে পড়লে ছুটে গিয়ে তাকে তাতিয়ে দেওয়া। গভীরভাবে দেখলে আপনার চোখেও লাগবে। কেউ একজন খেলায় জিততে কতটা মরিয়া টের পাওয়া যায় আসলে তখনই।

সাকিবের শরীরী ভাষায় যে উত্তাপের ঝাঁজ দেখা দিয়েছে, তা কেবল ম্যাচের মধ্যেই আটকে নেই। ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ জানালেন, মাঠের বাইরেও দলের সব কিছুতে সাকিব এখন ভীষণ রকম সম্পৃক্ত।

দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর পরদিন প্রত্যাশিত বিশ্রাম পেয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। সোমবার (৩ জুন) টিম হোটেলে গিয়ে দেখা গেল, সবাই যে যার মতো ঈদের কেনাকাটায় বেরিয়ে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশের জয়, বিশ্বকাপে দলের ভেতরের হালচাল জানাতে তাই সংবাদ মাধ্যমের সামনে হাজির টিম ম্যানেজার। এই ইংল্যান্ডেই ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম বিশ্বকাপের হিরো খালেদ মাহমুদ এবার দলের সেরা ক্রিকেটারের শ্রেষ্ঠ সময়ের ইঙ্গিত পেয়ে গেছেন, ‘সাকিব অনেক বড় ক্রিকেটার, সন্দেহ নেই। তবে গত কয়েক মাসের সিরিয়াসনেস আমাকে দারুণভাবে মুগ্ধ করেছে। ফিটনেস নিয়ে কাজ করাই শুধু নয়, দলে তার সম্পৃক্ততা আর ও যেভাবে কষ্ট করছে, সবমিলিয়ে।’

বিশ্বকাপের আগে অফিসিয়াল ফটোসেশনে যোগ না দিয়ে গালমন্দ শুনেছিলেন সাকিব। তখন কতই না বিতর্ক! তিনি আলাদা, দলের আরও দশজন থেকে যে ভিন্ন সেটা বোঝাতে চান, টিম স্পিরিট-টিরিটে অতো পাত্তা দিতে চান না! কিন্তু সেই সাকিবই না-কি বিশ্বকাপে একেবারে ভিন্ন মানুষ। উদাহরণ দিয়েই বোঝালেন মাহমুদ, ‘পরশু দিনের একটা ঘটনা বলি। সাকিব বসে ছিল, কয়েকজন (জুনিয়র ক্রিকেটার) প্র্যাকটিস করছিল। পানি লাগবে, সাকিব দৌড়ে পানি নিয়ে গেল। এটাই বোঝাতে চাচ্ছি যে, দলের একজন সিনিয়র ক্রিকেটার যখন এরকম করে, সবার জন্যই তা ভালো।’

এসব দেখেই খালেদ মাহমুদের মনে হচ্ছে বড় কিছুর তীব্র তাড়না বোধ করছেন সাকিব। চোট থেকে ফিরে আইপিএলে গিয়ে শরীর থেকে বাড়তি মেদ ঝরিয়েছেন। তাকে এখন দেখলে দশ বছর আগের সাকিবের মতই পলকা, ফুরফুরে লাগছে।

কেবল ফিটনেসই না। অনুশীলনে কখনোই খুব বেশি খাটুনি দিতে না চাওয়া সাকিব না-কি এখন সবকিছুতেই নিবেদিত প্রাণ। আর সেটাতেই বড় কিছুর আভাস দেখছেন মাহমুদ, ‘বলা তো যায় না আগে থেকে, তবে আমার মনে হয় সাকিব ম্যান অব দা টুর্নামেন্ট হতে চায় এই বিশ্বকাপে। আমিও সেটা বিশ্বাস করি। গত ৬ মাস ধরে নিজেকে সে সেভাবেই প্রস্তুত করেছে, ফিটনেসেড় দিক থেকে, দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে, সবকিছু মিলিয়ে। আগে হয়তো অনুশীলনে একদিন ব্যাটিং করল, আরেকদিন বোলিং...এখন সে অনেক বেশি সিরিয়াস।’

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

4h ago