মাঠে আছেন মাশরাফিদের ইংরেজ ভক্তরাও
খেলার তখন মধ্য বিরতি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আগে ব্যাট করতে গিয়ে বাংলাদেশ প্রত্যাশিত রান করতে পারেনি। ম্যাচটা একপেশে হতে পারে আভাস পেয়ে ওভাল মাঠের পানশালায় ইংলিশ আর কিউইদেরই ভিড় বেশি, আলাপও তা নিয়ে। বাংলাদেশ আসলে কত রান কম করেছে এই নিয়ে প্রবাসী বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা চলছিল। ওখানেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের তিন ইংরেজ সমর্থক যোগ দিলেন। দুজনের পরনে আবার লাল সবুজ টি-শার্ট। ওভালে এসেই ৩৫ পাউন্ড দিয়ে নাকি টি-শার্ট কিনে গ্যালারিতে ঢুকেছেন তারা।
বাংলাদেশের জন্য চিৎকার করে গলা শুকিয়ে গিয়েছিল। গলা ভেজাতে এসেছেন। বাংলাদেশ থেকে আসা ক্রীড়া সাংবাদিক জেনে প্রশ্ন- ‘এই রানে কি বাংলাদেশ জিততে পারবে না?’ ‘জেতাটা কঠিন’, এমন জবাব পেয়ে তারা যারপরনাই হতাশ। কথা না ফুরোতেই আবার বললেন, ‘কামঅন বাংলাদেশ, দে উইল উইন।’ যেন তীব্রভাবে বিশ্বাস ছড়িয়ে দিতে চাইছেন বাংলাদেশের হয়ে।
খানিকক্ষণের আলাপে বাংলাদেশের সংস্কৃতি নিয়ে টুকটাক ধারনার কথা জানালেন জন, অ্যান্ড্রু, রিগ্যানরা। আগের ম্যাচে বাংলাদেশের জয় আর টাইগার সমর্থকদের উদ্দীপনা দেখে লাল-সবুজ রঙ নাকি বেশ ভালো লেগে গেছে। একজন জানালেন সৎ বাবার কাছ থেকে টিকেট পেয়ে বন্ধুদের নিয়ে ছুটে এসেছেন মাঠে। বাংলাদেশে ক্রিকেট যে কত জনপ্রিয় তার খবর জানেন। এ'কদিন ওভালে লাল-সবুজের উত্তাপও দেখছেন। বাংলাদেশের বৈচিত্রময় সংস্কৃতির প্রতি আরও জানার আগ্রহ আর ‘সাবাশ বাংলাদেশ’ বলে তারা বিদায় নিলেন।
ওভাল মাঠে বাংলাদেশের এরকম ইংলিশ ভক্তদের দেখা মিলেছে আরও। কয়েকজন এসেছেন একদম টাইগার সেজে। বাংলাদেশের আইকনিক ফ্যান ‘টাইগার শোয়েব’ বিশ্বকাপে আসেননি। কিন্তু তার অভাব পূরণে চেষ্টা কয়েকজন ইংরেজের। এক কথায়, বাংলাদেশের ক্রিকেট তারা পছন্দ করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ যেভাবে জিতেছে। এই ওভাল মাঠে সেই ম্যাচ দেখে তাদের মনে ধরেছে সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকারদের।
এমনিতে ইংরেজ তরুণরা উদার সংস্কৃতি, সমন্বয়বাদে বিশ্বাসী। ছুটি বের করে ক্রিকেট দেখেন নিখাদ বিনোদনের নেশায়। খেলা দেখা, বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে হুল্লোড় করা, গলা ভেজানোতে পুরো এক দিন পার করতে চান নির্ভেজালভাবে। তাতে কট্টর জাতীয়তাবোধের বাধন নেই। খেলায় যে খেলোয়াড় আনন্দ দেন তার পক্ষেই তালি বাজে তাদের।
Comments