মনে হচ্ছিল মিরপুরে খেলছি: মোসাদ্দেক
ওভালে প্রথম ম্যাচেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দেখা গিয়েছিল লাল-সবুজের ঢল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও একই দৃশ্য। বাংলাদেশকে সমর্থন করতে প্রবাসী বাঙালিরা নিজেদের কাজ ফেলেই মাঠে হাজির হয়েছেন। ম্যাক্সিকান ওয়েভে তুলেছেন লাল-সবুজের ঢেউ। যখন খেলোয়াড়রাও কিছুটা নেতিয়ে পড়ছিলেন, সমর্থকরা ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ বলে আবার জাগিয়ে দিয়েছেন। প্রবাসীদের এমন সমর্থন পেয়ে মোসাদ্দেক হোসেনের মনে হয়েছে কোনো সুদূর বিদেশে নয়, খেলছেন মিরপুরেই।
বুধবার (৫ জুন) নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ করতে পারে মাত্র ২৪৪ রান। মধ্য বিরতিতে বাংলাদেশের কম রান করা নিয়ে হা-হুতাশ ছিল। কিন্তু কেউ মাঠে ছেড়ে চলে যেতে চাননি। বেশ কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ করে দেখা গেছে, তারা মনে করছেন এই রানেই জেতা সম্ভব।
সাব্বির চৌধুরী নামের এক ভক্ত তার কাজ-টাজ ফেলে বন্ধুদের নিয়ে এসেছিলেন। ইনিংস বিরতির সময় বলছিলেন, ‘২৭০ রান হলে ভালো হত। কিন্তু এই রানেই আমরা জিতব। আজ (বুধবার) জিতলে কার্ডিফে আরও উত্তাল হবে।’
নূর হোসেন নামে আরেকজন বললেন, ‘ভাই, ডাবল ডিউটি করে পুষিয়ে নিয়ে খেলার সময় ফ্রি থাকছি। দেশের খেলা সব কিছুর উপরে। বিশ্বাস আছে। বাংলাদেশ জিতবে।’
পরে সত্যিই বাংলাদেশ হারতে হারতে জিতেই গিয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেনি। তুমুল রোমাঞ্চ আর উত্তেজনা সইতে না পেরে প্রিয় দলের হারের পর সমর্থকদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিদেশ-বিভূঁইয়ে থাকলে দেশের প্রতি টান এমনিতেই বেশি থাকে। খেলার মধ্য দিয়েই যেন দেশকে কাছে পেতে চাইছেন তারা। দেশের সাফল্যের উঠা-নামার প্রতিটি বাঁক তাই তাদের ছুঁয়ে গেছে।
দুই বছর আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও এমনই সমর্থন ছিল। মোসাদ্দেকের মনে হচ্ছিল তারা খেলতে নামছেন মিরপুরেই, ‘যখন টস হলো। মনে হচ্ছিল আমরা মিরপুরে খেলতে নামছি । চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এখানে খেলেছিলাম। তখনও মানুষ আমাদের এরকমই সমর্থন করেছেন। কাজেই চমকে যাইনি। কিন্তু ভীষণ ভালো লাগা কাজ করে।’
৮ জুন কার্ডিফে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নামবে বাংলাদেশ। প্রবাসীরা ওই দেশেরই নাগরিক। ফেলে আসা শেকড়ের টান না-কি বর্তমান নাগরিকত্বের আনুগত্য- কোনটা তাদের টানবে বেশি? মোসাদ্দেক আশা করছেন, কার্ডিফেও এমনই কলরব উঠবে বাংলাদেশের পক্ষে, ‘মানুষ এরকম সমর্থন করলে সেটা দারুণ। কার্ডিফেও এরকম সমর্থন পেলে আমাদের জন্য বাড়তি প্রেরণা হবে।’
Comments