ফুটপাত দখল
রাস্তা ও ফুটপাত দখল করা যেনো একটি সাধারণ ব্যাপার। যে যার ইচ্ছামতো ফুটপাত দখল করেন। কেউ আবার ফুটপাত ভাড়া দিয়ে টাকাও তোলেন।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রাস্তা বা ফুটপাতের উপরে বিভিন্ন দোকান বসানো হয়, আবার বাড়ির নির্মাণ সামগ্রী রাখা হয় রাস্তা দখল করে।
কোনো কোনো জায়গায় তো রাস্তার উপরেই নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত রড সোজা করা এবং সিমেন্ট এবং বালু মাখানোর কাজও করা হয়।
এতে যেমন পথচারীদের হাঁটায় বিঘ্ন সৃষ্টি হয় আবার গাড়ি চলাচলের গতিও কমে যায়।
সিটি কর্পোরেশন বহুবার রাস্তা ও ফুটপাতের উপর দোকান সরানোর জন্য অভিযান পরিচালিত করেছে। কিন্তু, ফলাফল শূন্যই থেকে গেছে।
শূন্য থাকার পেছনে অবশ্য কিছু কারণও রয়েছে। বড় কারণ প্রভাবশালীদের প্রভাব। কেননা, তারাই টাকার বিনিময়ে ফুটপাতে হকার বসার সুযোগ করে দেন।
কিন্তু, যারা আবাসিক বা বাণিজ্যিক ভবন বানান, তারা নিজেরা প্রভাবশালী। তাই রাস্তা-ফুটপাত দখল করে নির্মাণ সামগ্রী রাখতে তাদের কারো কাছে জিজ্ঞাস করতে হয় না।
বরং কেউ কিছু বলতে গেলে নিজেরাই বিপদে পরেন।
ফলে এই ধরনের দখলের সংখ্যাও প্রচুর বাড়ছে। যেমনটি দেখা গেলো মধ্য বাসাবো এবং মিরপুরের ষাট ফিট রাস্তায়।
বাসাবো খেলার মাঠের একটু আগেই রকভিল এবং রেইনবো নামে পাশাপাশি দুটো ডেভেলপারের ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। তাদের নির্মাণ সামগ্রীগুলো ফুটপাত দখল করে রাখা হয়েছে। ফলে পথচারীদের রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হয়।
এই জায়গা দিয়ে গাড়িগুলো দ্রুত গতিতে চলে। অনেক লেগুনা ও হিউম্যান হলার চলে এই রাস্তায়, যেগুলোর নিয়ন্ত্রণ খুবই কম। ফলে যেকোনো সময় এখানে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
মিরপুরের ষাট ফিট রাস্তা ঘুরেও এই চিত্র দেখা গেছে। পীরেরবাগের মাইকের দোকানে ফুটপাতের উপর রড এবং ইট রাখতে দেখা গেছে। সেখানে ফুটপাত দখল করে রড সোজা করার কাজও করতে দেখা যায়।
এতে পথচারীরা নিরাপদ চলাচলের জন্যে ফুটপাত ব্যবহার করতে পারছেন না। আবার রডের আঘাত পাওয়ার আশঙ্কাও থাকে নির্মাণ কাজের পাশ দিয়ে চলার সময়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নির্বাহী প্রকৌশলী খোন্দকার মাহবুবুল আলম আজ (৮ জুন) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “সিটি করপোরেশনের অনুমতি ছাড়া ফুটপাত বা রাস্তা দখল করে কোনো কিছু রাখা একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। অথচ এখন এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে যে ঢাকায় এটি অহরহ দেখা যায়।”
করপোরেশন থেকে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে অনেককে জরিমানা করা হয় বলেও জানান তিনি।
ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানগুলো এই কাজ বেশি করে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “আমরা এ সমস্যা নিয়ে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) এর সঙ্গে কথা বলার পরিকল্পনা করছি যাতে এর একটি সমাধান বের করা যায়। আমরা চাই ফুটপাত দখল না করেই যাতে তারা নির্মাণ কাজ চালিয়ে যেতে পারেন।”
“করপোরেশনের লোকবলের অভাব রয়েছে তাই এ বিষয়ে নাগরিকরা সচেতন হলে করপোরেশনের কাজ সহজ হবে,” যোগ করেন ডিএসসিসি নির্বাহী প্রকৌশলী।
মো. ফয়সাল আহাম্মেদ, ট্রেইনি রিপোর্টার, দ্য ডেইলি স্টার
Comments