মশক নিবারণী দপ্তর: যেখানে মশার নিরাপদ আবাস

‘মশক নিবারণ দপ্তর’ লেখা সাইনবোর্ড দেখতে চাইলে আসতে হবে পুরনো ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দির এলাকায়। মশক এবং সাইনবোর্ড মিলেমিশে বসবাস করছে অনেক বছর ধরে। মশার পাশাপাশি এমন একটি সাইনবোর্ড মানুষের বাড়তি যন্ত্রণা ছাড়া কোনো স্বস্তি দিতে পারেনি।
mosquito

‘মশক নিবারণ দপ্তর’ লেখা সাইনবোর্ড দেখতে চাইলে আসতে হবে পুরনো ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দির এলাকায়। মশক এবং সাইনবোর্ড মিলেমিশে বসবাস করছে অনেক বছর ধরে। মশার পাশাপাশি এমন একটি সাইনবোর্ড মানুষের বাড়তি যন্ত্রণা ছাড়া কোনো স্বস্তি দিতে পারেনি।

ঢাকা মশা নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, মশা নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো ১৯৪৮ সালে।

দুই তলার এই ভবনটিতে রয়েছে ১৭টি কক্ষ। এগুলোর কোনোটি আবার বন্ধ। খোলা কক্ষে প্রবেশ করলে দেখা যাবে মশার বংশবিস্তার জন্যে উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে সেখানে। যেনো এটি একটি নির্মম রসিকতা।

এখানে রয়েছে মশা মারার ওষুধের অন্তত ৫০০ খালি ড্রাম। কাজ নেই বলে ভবনটিও বেশ শান্ত।

স্টোরকিপার গিয়াসউদ্দিন বললেন, “সেসময় ম্যালেরিয়া মোকাবিলা করতে ঢাকায় মশা মারার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছিলো। তখন সংস্থাটি বেশ জমজমাট ছিলো। অনেক লোক কাজ করতেন। মশা নিয়ন্ত্রণে বেশ ভালো ভূমিকা পালন করতো।”

তিনি আরো জানান, মশক নিয়ন্ত্রণ স্কিমের আওতায় ৩৩৮ জনের মতো লোককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিলো। তাদেরকে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে নেওয়া হয় ১৯৭২ সালে। তারপর, মশা নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে অনেক কাজ হয়।

১৯৮১-৮২ সালে এই বিভাগটিকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসা হলে তা সরাসরি ঢাকা সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে চলে আসে। যে কাজে এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো তা গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে।

“আমাদের কাজ হলো মশা নিধন করা। কিন্তু, আমাদের কোনো ক্ষমতা নেই। আমরা শুধু ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্দেশনা অনুযায়ী মশা মারার ওষুধ বিভিন্ন জোনে বিতরণ করি।”

ভবনটি এখন গোডাউন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে উল্লেখ করে গিয়াসউদ্দিন বললেন, “আমাদের এখন কর্মী সংখ্যা ২৮১ জন। তাদের মধ্যে মাত্র ১৩ জন অফিসে কাজ করেন। বাকি ২৬৯ জন দুটি সিটি করপোরেশনে মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন।”

এই অফিসের কর্মীরা বেতন পান স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে। তবে গত বছরের জুলাইয়ে তারা সাহায্য মঞ্জুরি খাতের মাধ্যমে বেতন নিতে অস্বীকার করেন। তারা দাবি করেন, বেতন দিতে হবে ইন্টিগ্রেটেড বাজেট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম প্লাস প্লাস এর মাধ্যমে। এই সফটওয়ারের মাধ্যমে সরকার সব সরকারি চাকুরেদের বেতন দিয়ে থাকে।

এই বিভাগের সুপারভাইজার নূরুল হক বলেন, “আমাদেরকে সাহায্য মঞ্জুরি খাতের মাধ্যমে বেতন দিতে চেয়েছিলো কিন্তু, আমরা সেসময় তা প্রত্যাখ্যান করি। কেননা, আমরা সরকারি কর্মচারী হয়ে অন্য কোডে বেতন পেতে পারি না।”

বেতন দেওয়ার বিষয়টি শীঘ্রই সমাধান করা হবে বলে সেসময় জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব এএনএইচ ফাইজুল হক। পরবর্তীতে বিষয়টি পুরোপুরি সমাধান না হলেও কর্মচারীরা সাহায্য মঞ্জুরি খাত থেকেই বর্তমানে বেতন নিচ্ছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, মশক নিয়ন্ত্রণ বিভাগটির কার্যক্রম আরো জোরদার করা হবে। এর কর্মীর সংখ্যাও বাড়ানো হবে বলে তিনি জানান। তারা যেনো সিটি করপোরেশেনের কর্মী হিসেবে কাজ করতে পারেন যে বিষয়ে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

5h ago