৪০ লাখ টাকা ঘুষের অভিযোগ

দিলেন ডিআইজি মিজান, নিলেন দুদক পরিচালক বাসির

অবৈধভাবে সম্পদ আহরণের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে থাকা পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান দাবি করেছেন যে দুদকের একজন তদন্ত কর্মকর্তা তার কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে ৪০ লাখ টাকা নিয়েছিলেন।
DIG Mizan and ACC director Basir
ডিআইজি মিজানুর রহমান (বামে) এবং দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির। ছবি: সংগৃহীত

অবৈধভাবে সম্পদ আহরণের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে থাকা পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান দাবি করেছেন যে দুদকের একজন তদন্ত কর্মকর্তা তার কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে ৪০ লাখ টাকা নিয়েছিলেন।

তাকে সব অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেই টাকা নেওয়া হয়েছিলো বলেও দাবি করেন পুলিশের সেই শীর্ষ কর্মকর্তা।

গত বছরের মে মাসে দুদক এই তদন্ত শুরু করে। এক নারীকে জোর করে বিয়ে ও তাকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠায় সেই বছরের জানুয়ারিতে ডিআইজি মিজানকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেসময় তাকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পদ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাসিরকে মিজানের সম্পদ নিয়ে তদন্ত করার দায়িত্ব দেয় কমিশন।

গতকাল (৯ জুন) দ্য ডেইলি স্টারকে মিজানুর রহমান বলেন, “এ বছরের জানুয়ারিতে বাসির ফোন দিয়ে আমাকে বেতনের তথ্য দিতে বলেন। আমার ২৮ বছরের পেশাগত জীবনের বেতন তথ্য আমি জমা দেই।”

“সেসময় তিনি জানান- অফিসের ফোন দিয়ে কথা বললে তা রেকর্ড করা হয় বলে তার ব্যক্তিগত ফোনে আমাকে কল দিতে বলেন,” উল্লেখ করে মিজানের দাবি, “আমি বাসিরকে একটি মোবাইল ফোন ও সিম কার্ড কিনে দেই।”

মিজান বলেন, “জানুয়ারি ১০ তারিখের দিকে রমনা পার্কে আমার সঙ্গে বাসির দেখা করেন এবং ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। তিনি জানান যে এর ফলে আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ বাদ দিয়ে দেওয়া হবে।”

“গত ১৫ জানুয়ারি আমি তাকে ২৫ লাখ টাকা এবং ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৫ লাখ টাকা দিয়েছিলাম,” যোগ করেন অভিযুক্ত কর্মকর্তা।

সেই টাকার উৎস কী তা জানতে চাওয়া হলে মিজান জানান যে তিনি ১০ লাখ টাকা তার এক আত্মীয়ের কাছ থেকে ধার করেছিলেন। আর বাকি টাকা তার সঞ্চয় থেকে দিয়েছেন।

“গত ৩০ মে পুলিশ প্লাজায় আমার স্ত্রীর দোকানে গিয়ে বাসির বলেন যে দুদকের চাপের কারণে আমাকে অভিযুক্ত করে তিনি প্রতিবেদন দিতে যাচ্ছেন। সেসময় বাসিরের সঙ্গে আমার উত্তপ্ত বাক্যালাপ হয়।”

দণ্ডবিধি অনুযায়ী ঘুষ দেওয়াও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

বাসিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। আমি তার স্ত্রীর দোকানে গিয়েছিলাম তার সম্পদের খোঁজ নিতে।”

বাসিরের সেই দোকানে যাওয়ার দৃশ্য একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেখানো হয়।

সূত্র জানায়, এরই মধ্যে দুদকের সচিবকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সংস্থাটি।

অবৈধভাবে সম্পদ আহরণ নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় গত বছরের ২৫ এপ্রিল ডিআইজি মিজানকে তলব করে দুদক। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে সাড়ে সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ উঠে যে তিনি ২০১৭ সালের জুলাইয়ে ২৫ বছর বয়সী এক নারীকে তুলে নিয়ে তাকে জোর করে বিয়ে করেন। এছাড়াও, সেই বছরের ডিসেম্বরে অস্ত্রের মুখে এক টেলিভিশন চ্যানেলের সংবাদ পাঠককেও তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ফোনে একজন টেলিভিশন উপস্থাপকের সঙ্গে কথা বলার সময় দুটি সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকদের হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে মিজানের বিরুদ্ধে।

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

1h ago