কলকাতার জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে মমতার দূরত্ব বাড়ছেই
জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন আজও (১৫ জুন) অব্যাহত থাকলো। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুই দফায় প্রশাসনিক বৈঠক করে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের কাজে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করার পরও চিকিৎসকরাও কাজে যোগ দেননি।
এর আগে রাজ্যের মুখ্য সচিব এবং স্বাস্থ্য সচিবের পক্ষ থেকে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আন্দোলনরতদের বৈঠকের আহবান জানালেও চিকিৎসকরা তাতে সাড়া দেননি।
গত ১০ জুন রাতে কলকাতার নীল রতন সরকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন জুনিয়র চিকিৎসকের রোগী-পক্ষের হাতে আক্রান্ত হওয়ার পরই সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকরা নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ওই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে কলকাতাসহ গোটা রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলোতে।
এদিকে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনে রাজ্যের সিনিয়র চিকিৎসকদের একটি বড় অংশ যুক্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৩৭ জন চিকিৎসক গণইস্তফা দিয়েছেন। যদিও রাজ্য প্রশাসন এই ইস্তফা গ্রহণ করেনি বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ সন্ধ্যায় নবান্নে জরুরি বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, গণইস্তফার সরকারি কোনও বৈধতা নেই। তিনি আন্দোলনকারী সব চিকিৎসকদের কাজে ফেরার আহবান জানান। ১০ তারিখে যারা আক্রমণ করেছিলো তাদের মধ্যে অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে চিকিৎসকরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে মুখ্যমন্ত্রীকে এনআরএস হাসপাতালে গিয়েই ক্ষমা চাইতে হবে এবং তার ভুল স্বীকার করতে হবে।
আন্দোলনরত চিকিৎসকদের সঙ্গে সহমর্মিতা জানিয়ে নদীয়ার মায়াপুরের চিকিৎসক ডাক্তার অরূপ বিশ্বাস দ্য ডেইল স্টারকে জানান, “দেখুন মুখ্যমন্ত্রীতো মায়ের মতো। তিনি আন্দোলনকারীদের এই তুচ্ছ দাবি মানতে পারছেন না কেনো? তার কি ইগোর সমস্যা রয়েছে? তিনি এসে এখানে দাঁড়িয়ে দুটো কথা বলে দিলেই মিটে যেতো এই সমস্যা।”
তিনি আরো বলেন, এই আন্দোলনে সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু, চিকিৎসকরাও তো তাদের জীবন ঝুঁকি নিয়ে সেবা করে যাচ্ছেন। রোজই তাদের মার খেতে হচ্ছে। প্রশাসনের কী কোনো দায় নেই?
এনআরএস মেডিকেল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার প্রভাষ রায় বললেন, “কোনো অবস্থাতেই আমরা আন্দোলন থেকে সরবো না। মুখ্যমন্ত্রীকে আমাদের দেওয়া ৬ দফা দাবি মানতেই হবে।”
এদিকে চিকিৎসকদের সঙ্গে এই আন্দোলনে বহু রোগীর স্বজনরাও যুক্ত হয়েছেন। এনআরএস হাসপাতালে প্ল্যাকার্ড হাতে রোগীর স্বজনদের বসে থাকতে দেখা গিয়েছে। এমনকী তারাও বলছেন, “উই ওয়ান্ট জাস্টিস।”
Comments