বাংলাদেশের সামনে এভারেস্ট ডিঙানোর চ্যালেঞ্জ

David Warner
ছবিঃ রয়টার্স

ফিল্ডিংয়ে শরীরী ভাষা ছিল মাঝারি মানের। এদিনও বেশ কবার হাত ফসকে বেরিয়েছে রান, সবচেয়ে দামি ডেভিড ওয়ার্নারের ক্যাচ পড়েছে শুরুতেই। ১০ রানে জীবন পেয়ে যিনি পরে থামেন ১৬৬ রান করে। ব্যাট করার জন্য বেশ ভালো উইকেটেও সকালের আর্দ্রতা কাজে লাগানোর যেত, তাও পারা যায়নি। ফিল্ডাররা বড় মাঠে নিজেদের যেন কুলিয়ে উঠতে পারছিলেন না। কোথায় ফিল্ডার রেখে কোথায় বল করবেন বোলাররা ভেবে পাচ্ছিলেন না দিশা। হতবিহবল দশায় রান বেড়েছে তাই তরতরিয়ে।

ট্রেন্ট ব্রিজে টস জিতে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে  ৩৮১ রান করে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। এই রান তাড়া করে জিততে হলে বাংলাদেশকে ভাঙতে হবে রান তাড়ায় নিজেদের রেকর্ড। ভাঙতে হবে বিশ্বকাপের রান তাড়ার রেকর্ডও।

অসিদের হয়ে ওয়ার্নার ছাড়া খাওয়াজা করেছেন ৮৯, ফিঞ্চ ৫৩। ম্যাক্সওয়েলে ১০ বলেই করেন ৩২। ৫৮ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন সৌম্য সরকার। নিয়মিত বোলারদের করুণ অবস্থা বোঝাচ্ছে তার ফিগারই। মোস্তাফিজুর রহমান শেষ দিকে নিয়েছেন ১ উইকেট।

অথচ টস হারলেও ভিন্নরকমও হতে পারত সব কিছু। শুরুতেই ধাক্কা দেওয়া যেত অস্ট্রেলিয়ান ইনিংসে। পঞ্চম ওভারে মাশরাফির অফ স্টাম্পের বাইরের বলটা কাট করতে গিয়েছিলেন ওয়ার্নার। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট নিচু হয়ে গেল ক্যাচ, কঠিন হলেও এমন ক্যাচ নেওয়ার মতো। সাব্বির রহমান তা রাখতে পারলেন না হাতে। তখনো কিছুটা নড়বড়ে থাকা ওয়ার্নার ১০ রানে পাওয়া জীবন কাজে লাগিয়েছেন ষোলআনা। ফিঞ্চকে নিয়ে ১২১ রানের জুটির পর দ্বিতীয় উইকেটে উসমান খাওয়াজার সঙ্গে ১৯২ রানের জুটিতেই বাংলাদেশের নাগালের বাইরে চলে নিয়ে যান সব। প্রথমে রয়েসয়ে খেলে অবস্থা বুঝে ডানা মেলে এগিয়ে খেলার নাটাই ধরেছেন তিনি। ১৪৭ বলের ইনিংসে ১৪ চার আর ৫ ছক্কায় করেছেন ১৬৬।

প্রথম ১০ ওভারে অনেকবারই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনাররা পরাস্ত হয়েছেন, বাজে বল পেলে আবার পিটিয়ে নিজেদের চাঙ্গাও রেখেছেন। তবু রান ছিল ছয়ের নিচে। প্রথম ১০ ওভার থেকে এসেছে ৫৩ রান। আগেরদিন মাশরাফি ফিল্ডিংয়ে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছিলেন। এদিন শুরু থেকে দেখা গেল ফিল্ডিংয়েই ঘাটতি। ওয়ার্নার-ফিঞ্চ তাই জমে গেলেন। ১২৫ বলে ১২১ রানের জুটির পর তাদের আলগা করেন অনিয়মিত বোলার সৌম্য সরকার। দেড়শো ছাড়ান ওয়ার্নারকেও দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে আউট করেন তিনি। খাওয়াজাকেও সেঞ্চুরির আগে থামান সৌম্য।

মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের চোটে প্রথমবার নেমে খারাপ করছিলেন না রুবেল হোসেন। বেশ কবারই ব্যাটসম্যানদের ভুগিয়েছেন। কিন্তু তাকে সামলে ঠিকই রান বের করে নিয়েছেন ওয়ার্নাররা। শেষ দিকে সেই রুবেল হয়ে গেলেন উদার। দেদারসে রান বিলিয়ে ৯ ওভারেই দিয়ে দেন ৮৩ রান।

মোসাদ্দেক হোসেন না খেলায় কয়েকওভারের ঘাটতি পোষাতে মাঝের ওভারে ভালোই সামলেছেন সৌম্য। কিন্তু থামানো যায়নি ওয়ার্নারকে। ধীর লয়ে এগিয়ে ১১০ বলে পৌঁছান সেঞ্চুরিতে। ফিঞ্চের রেখে যাওয়া কাজ সারার দায়িত্ব নেন খাওয়াজা। দ্বিতীয় উইকেটে আরও বিধ্বংসী রূপে এগোয় অসিরা। দ্রুত গতিতে আসে ১৯২ রান।

৩০ ওভার শেষে রান ছিল ১৬৮। ৪০ ওভারে গিয়ে সেটা হলো ২৫০। ধারহীন বোলিং আরও হতশ্রী দশা নিয়ে এলো শেষ ১০ ওভারে। অসিরা তুলে আরও ১৩১ রান। কার্ডিফে ইংল্যান্ড করেছিল ৩৮৬ রান, অসিরা তারচেয়ে ৫ রান কম করলেও বাস্তবতার নিরিখে স্কোরটা আসলে বলা চলে বাংলাদেশের ধরাছোঁয়ার বাইরে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে  ৩৮১/৫  (ফিঞ্চ ৫৩ , ওয়ার্নার ১৬২, খাওয়াজা ৮৯ , ম্যাক্সওয়েল ৩২, স্টয়নিকস ১৭* , স্মিথ ১ ক্যারি ১১*; মাশরাফি ০/৫৬, মোস্তাফিজ ১/৬৯, সাকিব ০/৫০, রুবেল ০/৮৩, মিরাজ ০/৫৯, সৌম্য ৩/৫৮ )

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda urges unity, quick action to institutionalise democracy

She also demanded a comprehensive list of victims of abduction, murder, and extrajudicial killings

9m ago