আফগান ম্যাচের আগে ‘তিন ইতিবাচক দিক’

ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইটা তবে বেশ লাভ করে দিল বাংলাদেশের? সেটা কীভাবে! শক্তিধর ভারতকে পাল্লা দিয়ে তো তাগড়া হয়ে থাকার কথা আফগানদেরই। বিদায় নিশ্চিত আগেই, টুর্নামেন্ট থেকে তাই আর কিছু হারানোরও বাকি নেই। এখন ‘কুছ পরোয়া নেহি’ ভাব তাদেরই তো মানায়। বাংলাদেশের সুবিধাটা তবে কীসে?

আগেভাগে মিলল সতর্ক সিগন্যাল 

ভাবুন, ভারতের সঙ্গে ম্যাচের আগে কে গোনায় ধরেছিল আফগানদের। ওয়ানডের রেকর্ড যাই বলুক। বিশ্বকাপে টানা হারে হতশ্রী একটা দলের সঙ্গে দাপট না দেখালে ‘জায়ান্ট’ তকমা তো থাকছে না। বাংলাদেশ হেসেখেলে জিতবে, এমন আমেজই তো চারপাশে ছড়িয়ে। আসলে এরকম প্রত্যাশাই বাড়িয়ে দেয় চাপ। ঠিক এই জায়গাতেই উপকারে এসেছে ভারত-আফগানিস্তান ম্যাচ। মানুষ দেখেছে, এই বিশ্বকাপে আসলে কেউ অজেয় নয়। নিস্তেজ, নেতিয়ে পড়ে হারতে থাকা একটা দলও নিজেদের দিনে কাঁপিয়ে দিতে পারে শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে, হারানোর মতো পরিস্থিতিও তৈরি করতে পারে।

আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচ তাই কোনভাবে ‘হেসে খেলে ছুটে চললাম’ ধারার নয়। নিজেদের নির্দিষ্ট দিনে যারা কন্ডিশনকে কাজে লাগাবে, ফল যাবে তাদের ঘরেই। আফগানদের বিপক্ষে খেলায় তাই কতটা সতর্ক থাকতে হবে, কোন কোন ভুল করা যাবে না তার একটা রূপরেখা স্পষ্ট হয়েছে। 

খেলায় যা হবার হোক ভেবে বেপরোয়া একটা মেজাজ রাখার সুযোগ থাকছে  বাংলাদেশের। হারার জন্য না খেললেও, হারার কথা বিন্দুমাত্র না ভাবলেও মানসিক এই অবস্থা দলকে রাখবে চাপমুক্ত। কোন কারণে পা হড়কালেও আত্মনিবেদন নিয়ে তো প্রশ্ন থাকার অবকাশ থাকবে না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মাঠে নামার আগে মাত্রাতিরিক্ত যে প্রত্যাশার চাপ থাকার কথা তাও আপাতত অতটা চড়া হওয়ার কথা না। এই জায়গা বাংলাদেশকে রাখতে পারে ফুরফুরে। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রখর বুদ্ধি দিয়ে ম্যাচ নিজেদের পকেটে পুরার কৌশলও তখন কাজে দিতে পারে বেশি।

সবচেয়ে বড় কথা ভারত ম্যাচের পর আফগানদের হালকাভাবে নেওয়ার ভাবনা কখনই ভর করবে না ক্রিকেটারদের উপর। 

উইকেট দেখাচ্ছে চেনা ছবি

সাউদাম্পটনে ভারত-আফগানিস্তান যে উইকেটে খেলা হয়েছিল বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচেও থাকছে সমান উইকেট। বাংলাদেশের কোচ স্টিভ রোডসের দেখে মনে হয়েছে এটা বেশ মন্থর উইকেট। ব্যবহৃত উইকেট হওয়ায় যাতে স্পিনাররা পেতে পারেন বাড়তি সুবিধা। স্পিনারদের সুবিধা মানে পেসার হয়েও মোস্তাফিজুর রহমানের জন্যও কন্ডিশন বেশ অনুকূলে। এরকম উইকেটেই তো তার কাটার ধরে ভালো। কেবল মোস্তাফিজই নন, কাটারে করায় বরাবরই মুন্সিয়ানা দেখানো অধিনায়ক মাশরফি বিন মর্তুজার কাছেও এমন সারফেস আকাঙ্ক্ষিতই হওয়ার কথা।

উইকেটে যেখানে নিজেদের বোলারদের সুবিধা, তেমনটি ব্যাটসম্যানদেরও চ্যালেঞ্জ থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু গেল ক’বছরে বাংলাদেশ ঘরের মাঠে যে মানের উইকেটে খেলেছে আর যেমনটা খেলেছে তাতে ব্যাটসম্যানদেরও অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে পড়বার কথা না। মন্থর উইকেটে কীভাবে রান বের করতে হয় তা তো ভালোই জানা তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমদের।

একাদশ নিয়ে ‘নো চিন্তা’

দুই ক্রিকেটারের আচমকা চোট থাকায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেরা একাদশ নিয়ে নামতে পারেনি বাংলাদেশ। চোটগ্রস্থ দুজন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত আর মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন এখন পুরোপুরি সুস্থ। রোববার ম্যাচের আগের দিন দুজনকেই অনুশীলনে সিরিয়াস থাকতে দেখা গেছে। সবাই সুস্থ থাকলে ছন্দে থাকা ক্রিকেটারদেরই  নামানো হবে আফগান ম্যাচে।

অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের তিন দিন পর তৈরি হওয়া দুনোমনো ভাব, অস্বস্তির কাঁটা সরে গেছে। সেরা এগারোজন আঁচও করা যাচ্ছে। একাদশ নিয়ে তাই বাংলাদেশ দলে কোন খচখচানি থাকছে না। মাঠের ক্রিকেটে পুরোটা নিংড়ে দিতে যা বেশ সহায়ক।

এই ম্যাচে যেসব মাইলফলকের সামনে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা 

- ক্যারিয়ারের ৫০তম ওয়ানডের সামনে দাঁড়িয়ে সৌম্য সরকার।

- আর ২ উইকেট পেলে অধিনায়ক হিসেবে ১০০ উইকেট হবে মাশরাফির

- বিশ্বকাপে ১ হাজার রান থেকে ৩৫ রান দূরে সাকিব

- ওয়ানডেতে ৪ হাজার রান থেকে ৮০ রান দূরে মাহমুদউল্লাহ

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka College, City College students clash at Science Lab; traffic halted

A clash broke out between the students of Dhaka College and City College in the capital's Science Laboratory area today

19m ago