ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অভিজ্ঞতা

যুক্তরাষ্ট্রের পাইলটবিহীনো আরকিউ-ফোরএ গ্লোবাল হক গোয়েন্দা ড্রোন ভূপাতিত করেছে ইরান। ছবি: ইউএস এয়ারফোর্স ভায়া রয়টার্স

ইরানের শক্তিমত্তা নিয়ে শক্রভাবাপন্ন প্রতিবেশী উপসাগরীয় দেশগুলোর সম্যক ধারণা থাকলেও সুদূর আটলান্টিকের পশ্চিমপারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের হয়তো সাধারণ ধারণাও ছিলো না। তবে গত ২০ জুন অর্থনৈতিকভাবে অনেকটা কাবু মধ্যপ্রাচ্যের খনিজসম্পদ সমৃদ্ধ দেশটি মহাপরাক্রমশালী যুক্তরাষ্ট্রের ১১০ মিলিয়ন ডলারের ড্রোন ২২ হাজার ফুট ওপর থেকে ভূপাতিত করার পর যেনো একটু নড়ে-চড়ে বসেছে পেন্টাগন।

আজ (২৫ জুন) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে যুদ্ধবিশ্লেষক নিক প্যাটন ওয়ালশ বলেন, এই প্রথম কেনো দেশ পেন্টাগনের আরকিউ-ফোরএ গ্লোবাল হক গোয়েন্দা ড্রোনকে ভূপাতিত করার সক্ষমতা দেখালো।

এর মাধ্যমে ইরানের সামরিক সক্ষমতা এক ঝলক অভিজ্ঞতা পেয়েছে দেশটির শত্রু-মিত্র সবাই।

জেন্স ডিফেন্স উইকলির মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা সম্পাদক জেরেমি বিনি ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে মন্তব্য করেন, “ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো কার্যকর রয়েছে।”

তিনি সিএনএন-কে বলেন, “ড্রোন ভূপাতিত করার মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যে ইরানিরা যে খাতে বিনিয়োগ করেন সেটিকে আমলে নিতে হবে। আমরা ইরানের ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সম্পর্কে জানি। কিন্তু, শক্রদের জন্যে ইরানের আকাশ যে কতোটা অভেদ্য এবার তারই একটি প্রমাণ পাওয়া গেলো।”

এ বিষয়ে বিনির বক্তব্য, ইরান যে বিশালাকায় ড্রোনকে ভূপাতিত করেছে তা “খুব একটা কঠিন কিছু ছিলো না।” তিনি মনে করেন, “কয়েক বছর আগে এমনটি ঘটলে হয়তো অনেকেই অবাক হতেন। কিন্তু, ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা যে কতোটা উন্নত হয়েছে তা এই নতুন অভিযানের মাধ্যমে প্রমাণিত হলো।”

এ কথা সবাই জানেন যে প্রচলিত যুদ্ধে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ইরানকে পরাজিত করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু, অপ্রচলিত যুদ্ধে ইরানের ‘প্রজ্ঞা’ যেকেনো ‘সহজ কাজকে’ কঠিন করে দিতে পারে।

ইরানের বিপ্লবী গার্ড (আইআরজিসি) জানিয়েছে, তারা ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য তৃতীয় প্রজন্মের ‘খোরদাদ’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। এটি প্রথম উন্মোচন করা হয় ২০১৪ সালে। তখন বলা হয়, ক্ষেপণাস্ত্রটির রেঞ্জ ৭৫ কিলোমিটার। আকাশে ৩০ কিলোমিটার উচ্চতার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম এটি।

জেন্স ডিফেন্স উইকলি মনে করে, একটি গাড়িতে বসিয়ে ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়েছে ৭০ কিলোমিটার দূর থেকে। ইরানের কোহি মোবারক শহরের কাছে কোনো সামরিক অবকাঠামো ছিলো না। তবে সংক্ষেপে বলতে গেলে ফলাফল যা হয়েছে তা হলো: ইরানের হাতের মুঠোয় এসে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা ড্রোন।

এর আগেও ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত প্রযুক্তির আরেকটি ড্রোন এসেছিলো ইরানের নাগালের মধ্যে। সে বছর আরকিউ-১৭০ নামের স্টিলথ ড্রোনটিকে ভূপাতিত করে ইসলামি বিপ্লবের দেশটি। সেই ড্রোনটির ধ্বংসাবশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ইরান নিজেদের ড্রোন তৈরি করে। পরে তা প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাজারেও ছাড়া হয়।

সেই স্টিলথ ড্রোনের চেয়ে আরও উন্নত প্রযুক্তির গ্লোবাল হক মার্কিন নৌবাহিনীতে যোগ দেয় আজ থেকে ১৩ বছর আগে। কিন্তু, ইরান যে এরইমধ্যে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাকে আরও কয়েকধাপ এগিয়ে নিয়েছে তার প্রমাণ মিললো গেলো সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন ধ্বংসের মধ্য দিয়ে।

Comments

The Daily Star  | English

How Chattogram built its economic legacy

Picture a crowded harbour where the salty seabreeze carries whispers of far-off lands, where merchants of all creed and caste haggle over silks and spices, and where towering ships of all varieties – Chinese junks, Arab dhows, and Portuguese carracks – sway gently in the waters of the Bay of Bengal.

13h ago