বিশ্বকাপের পরও খেলা চালিয়ে যাবেন মাশরাফি
এটাই যে শেষ বিশ্বকাপ তা আগেই জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। কিন্তু অবসরের কথা স্পষ্ট করে বলেননি। কিন্তু বয়সটা ৩৫ পেরিয়ে ৩৬ এর কাছাকাছি হওয়ায় অনেকের মনে কৌতূহল ছিল বিশ্বকাপের পর আদৌ তিনি খেলবেন কি না। সে কৌতূহল মিটিয়েছেন অধিনায়ক। বিশ্বকাপের পরও খেলা চালিয়ে যাবেন বলেই জানিয়েছেন ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো ও দেশের জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোকে।
গত তিন বছরে বাংলাদেশে বল হাতে দেশের সেরা পারফর্মারই ছিলেন মাশরাফি। বিশ্বকাপের আগেও দারুণ ছন্দে ছিলেন। কিন্তু বিশ্বকাপটা সে অর্থে খুব ভালো যাচ্ছে না তার। ৬ ম্যাচ খেলে উইকেট পেয়েছেন মাত্র ১টি। দুই হাঁটুতে সাত অস্ত্রোপচার হওয়ায় ফিটনেসে ঘাটতি প্রায় ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই। তাই নিয়েই সংগ্রাম করে খেলাটা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেটা আরও কিছুদিন চালিয়ে যাওয়ার কথাই বললেন অধিনায়ক, ‘এখনই খেলা ছাড়ছি না। আমি আরও খেলব। বোর্ড থেকে কোনো নির্দেশনা এলে আলাদা কথা। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার আপাতত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার চিন্তা নেই।’
স্ত্রী সুমনা হক খুব বেশি ক্রিকেট প্রেমী নন। তবুও ছেলে সাহেল মুর্তজা ও মেয়ে হুমাইরা মুর্তজাকে নিয়ে চলে এসেছেন ইংল্যান্ডে। ভাই মোরসালিন মুর্তজাও এসেছেন। এসেছেন বাবা গোলাম মুর্তজাও। তাতে গুঞ্জন চলছে, মাশরাফির ক্যারিয়ারের ইতি দেখতেই কি পরিবারের সবাই এসেছেন ইংল্যান্ডে? সে প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন অধিনায়ক, ‘বিশ্বকাপ আর খেলব না, এটা তো বলেই দিয়েছি। সে জন্যই চেয়েছি পরিবারের সবাই আসুক, খেলা দেখুক।’
বয়সটা যখন প্রায় ৩৬, তাই আলোচনা হচ্ছে, পেসার হয়ে এ বয়সে আর কতটুকু পারবেন। ২০০১ সালে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় মাশরাফির। এরপর প্রায় ১৮ বছর পেরিয়ে গেছে। এক সময়ের দ্রুততম পেসার বার বার ইনজুরিতে পড়ে হারিয়েছেন আগের গতি। চোট-আঘাতকে নিত্যসঙ্গী করে এগিয়েছেন। ইনজুরিতে বাদ পড়লে দ্বিগুণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে ফিরেছেন প্রতিবার। চলতি বিশ্বকাপেও খেলছেন হ্যামস্ট্রিংয়ের ইনজুরি নিয়ে। কিন্তু এ মুহূর্তে খেলা ছাড়ার ইচ্ছা নেই বলেই জানালেন অধিনায়ক। কারণটাও ব্যাখ্যা দিয়েছেন যুক্তিসঙ্গত ভাবেই, ‘আমি আরও খেলব, এটা ঠিক। আর বিশ্বকাপের মধ্যে ও রকম কিছু করতেও চাই না। তাতে পুরো দলের মনোযোগ নষ্ট হয়ে যাবে। খেলোয়াড়েরা যা-ই করবে, বলবে, ওরা এটা আমার জন্য করছে বা করতে চায়। এটা চাচ্ছি না। আমি চাই বিশ্বকাপটা সবাই নিজের মতো করে খেলুক। এখানে অন্য কিছু না আসুক।’
এদিকে মাশরাফি কতদিন খেলবেন তা তার উপরই ছেড়ে দিয়েছে বিসিবি। বিশ্বকাপের পরও তিনি খেলতে চাইলে তার সিদ্ধান্তে সম্মান জানবে বলেই জানিয়েছেন মিডিয়া কমিটির প্রধান ও বিসিবির পরিচালক জালাল ইউনুস, ‘মাশরাফির অবসরের ব্যাপারে বোর্ড কিছু বলবে না। সে এখনো আমাদের নেতা। ও যদি মনে করে খেলা চালিয়ে যাবে, তো খেলতে পারে। আবার ও যদি অবসর নিতে চায়, সেটাতেও বোর্ড বাধা দেবে না।’
Comments