আফগানিস্তানকে হারিয়ে চারে উঠে এলো পাকিস্তান
বোলারদের সৌজন্যে ম্যাচটা দারুণ জমিয়ে দিয়েছিল আফগানিস্তান। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারলো না দলটি। অভিজ্ঞতার কাছেই হেরে যায় তারা। শেষ দিকে স্নায়ুচাপ সামলে দারুণ এক ম্যাচ জিতে নিয়েছে পাকিস্তান। তাতে দারুণভাবে টিকে রইল শেষ চারের আশা। আফগানিস্তানকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে দলটি।
এ জয়ে সেরা চারে উঠে এলো পাকিস্তান। ৮ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ৯ পয়েন্ট। ৭ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট তুলে নেওয়া ইংল্যান্ড নেমে এলো এক ধাপ নিচে। ৭ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে নেমে গেল বাংলাদেশ। অন্যদিকে টানা অষ্টম ম্যাচে হারল আফগানিস্তান। বিশ্বকাপে টানা হারের রেকর্ডও এটি। পাকিস্তানের আর একটি ম্যাচ বাকী। ৫ জুলাই শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলবে দলটি।
লক্ষ্য তাড়ায় অবশ্য শুরুটা ভালো হয়নি পাকিস্তানের। রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরে যান ফখর জামান। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ইমাম-উল-হককে নিয়ে দলের হাল ধরেন বাবর আজম। দ্বিতীয় উইকেট যোগ করেন ৭২ রান। দারুণ সেট হওয়া এ দুই ব্যাটসম্যানকেই ফেরান মোহাম্মদ নবি। শুধু তাই নয়, এরপর বাকী বলাররাও চেপে ধরেন পাকিস্তানকে। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে দলীয় ১৫৬ রানে ৬টি উইকেট তুলে নেয় আফগানরা। সঙ্গে রানের গতিতেও লাগাম দেয় দলটি।
তবে সপ্তম উইকেটে সাদাব খানকে নিয়ে দলের হাল ধরেন ইমাদ ওয়াসিম। ৫০ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে পাকিস্তানকে আবার ম্যাচে ফেরান তারা। দারুণ এক থ্রোতে সাদাবকে রানআউট করে এ জুটি অধিনায়ক গুলবাদিন। যদিও আগের ওভারেই ১৮ রান দিয়ে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
তবে সাদাবের আউটে খুব বড় ক্ষতি হয়নি পাকিস্তানের। ওয়াহাব রিয়াজকে নিয়ে বাকী কাজ শেষ করেছেন ইমাদ। ২ বল বাকী থাকতেই দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি। দারুণ ব্যাটিং করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৪৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ৫৪ বলে ৫টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। এছাড়া বাবর ৪৫ ও ইমাম ৩৬ রান করেন। আফগানিস্তানের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন মুজিব ও নবি।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার রহমত শাহ ও অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব হাত খুলে ব্যাট করতে থাকেন। তবে পরিবর্তিত বোলার হিসেবে বল হাতে নিয়েই আফগানদের চাপে ফেলে দেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। প্রথম ওভারেই দুটি উইকেট নেন। এরপর ইকরাম আলি খিলকে নিয়ে দলের হাল ধরার চেষ্টায় থাকা রহমতকে ফেরান ইমাদ ওয়াসিম। দলীয় ৫৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন বেশ চাপে পড়ে যায় আফগানিস্তান।
তবে চতুর্থ উইকেটে ইকরামের সঙ্গে ইনিংস মেরামতের কাজে নামেন সাবেক অধিনায়ক আসগর আফগান। গড়েন ৬৪ রানের জুটি। আসগরকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন সাদাব খান। স্কোর বোর্ডে ৪ রান যোগ হতে ইকরামকেও ফেরান ইমাদ। ফলে আবার চাপে যায় আফগানিস্তান। এরপর মোহাম্মদ নবি ও নজিবুল্লাহ জাদরান দলের হাল ধরেন। ৪২ রানের জুটি গড়েন। নবিকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন ওয়াহাব রিয়াজ। এক প্রান্ত ধরে চেষ্টা চালাতে চেয়েছিলেন নজিবুল্লাহ। তবে আফ্রিদির তোপে থামেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ২২৭ রান তোলে দলটি।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪২ রান করে করেন নজিবুল্লাহ ও আসগর। এছাড়া ৩৫ রান করেন রহমত। পাকিস্তানের পক্ষে এদিনও দুর্দান্ত বোলিং করেছেন শাহিন। এদিনও ৪টি উইকেট তুলে নিয়েছেন এ পেসার। খরচ করেছেন ৪৭ রান। এছাড়া ২টি করে উইকেট নিয়েছেন ওয়াহাব ও ইমাদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ৫০ ওভারে ২২৭/৯ (রহমত ৩৫, গুলবাদিন ১৫, হাশমতউল্লাহ ০, ইকরাম ২৪, আসগর ৪২, নবি ১৬, নজিবুল্লাহ ৪২, সামিউল্লাহ ১৯, রশিদ ৮, হামিদ ১, মুজিব ৭; ইমাদ ২/৪৮, আমির ০/৪৮, আফ্রিদি ৪/৪৭, হাফিজ ০/১০, ওয়াহাব ২/২৯, সাদাব ১/৪৪)।
পাকিস্তান: ৪৯.৪ ওভারে ২৩০/৭ (ফখর ০, ইমাম ৩৬, বাবর ৪৫, হাফিজ ১৯, হারিস ২৭, সরফরাজ ১৮, ইমাদ ৪৯*, শাদাব ১১, ওয়াহাব ১৫*; মুজিব ২/৩৪, হামিদ ০/১৩, গুলবাদিন ০/৭৩, নবি ২/২৩, রশিদ ১/৫০, সামিউল্লাহ ০/৩২)।
ফলাফল: পাকিস্তান ৩ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ইমাদ ওয়াসিম (পাকিস্তান)।
Comments