ভারতকে প্রথম হারের স্বাদ দিল ইংল্যান্ড

ভারতের দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা উপমহাদেশ। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের সেমি-ফাইনালের স্বপ্ন টিকিয়ে রাখতে ভারতের জয় চেয়েছিল সবাই। কিন্তু সবাইকে হতাশ করেছে দুই বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ইংল্যান্ডের কাছে ৩১ রানে হেরে গেছে দলটি। আসরের প্রথম হার দেখল দলটি। তাতে সেমির স্বপ্ন চওড়া হয়েছে ইংলিশদের। শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেলেই নিশ্চিত হবে শেষ চার। না জিতলেও অন্যদলগুলোর ফলাফলের মারপ্যাঁচে টিকে থাকছে আশা। অন্যদিকে এ ম্যাচে হারায় সেমি-ফাইনালের টিকেটের অপেক্ষা বাড়ল ভারতের।
ছবি: রয়টার্স

ভারতের দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা উপমহাদেশ। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের সেমি-ফাইনালের স্বপ্ন টিকিয়ে রাখতে ভারতের জয় চেয়েছিল সবাই। কিন্তু সবাইকে হতাশ করেছে দুই বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ইংল্যান্ডের কাছে ৩১ রানে হেরে গেছে দলটি। আসরের প্রথম হার দেখল দলটি। তাতে সেমির স্বপ্ন চওড়া হয়েছে ইংলিশদের। শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেলেই নিশ্চিত হবে শেষ চার। না জিতলেও অন্যদলগুলোর ফলাফলের মারপ্যাঁচে টিকে থাকছে আশা। অন্যদিকে এ ম্যাচে হারায় সেমি-ফাইনালের টিকেটের অপেক্ষা বাড়ল ভারতের।

৮ ম্যাচে শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ১০। পাকিস্তানকে টপকে ফের পয়েন্ট তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এলো দলটি। ৭ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারত। তাদের ম্যাচ রয়েছে আরও দুটি। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলবে তারা। আর ইংল্যান্ড নিজেদের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ডের।

ইংলিশদের ছুঁড়ে দেওয়া ৩৩৮ রানের বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি ভারতের। খালি হাতেই ফিরে যান ওপেনার লোকেশ রাহুল। তবে দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন আরেক ওপেনার রোহিত শর্মা। স্কোর বোর্ডে ১৩৮ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটসম্যান। এরপর অধিনায়ক বিদায় নিলে রিশাভ পান্তের সঙ্গে ৫২ রানের জুটি গড়েন রোহিত। তবে রানের গতি সে অর্থে বাড়াতে পারেননি।

রোহিতের বিদায়ের পর মাঠে নেমে কিছুটা আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে থাকেন হার্দিক পান্ডিয়া। ৩৩ বলে ৪টি চারের সাহায্যে ৪৫ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তবে অপর প্রান্তে কেউই রানের গতি বাড়াতে চেষ্টা না করলে বড় হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় ভারতকে। শেষ দিকে মহেন্দ্র সিং ধোনির উপর প্রত্যাশাটা পারদ উঁচুতে ছিল। কিন্তু তিনিও হতাশ করেছেন। ৩১ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন তিনি। ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩০৬ রান তুলে থামে ভারত।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১০২ রানের ইনিংস খেলেছেন রোহিত। ১০৯ বলে ১৫টি চারের সাহায্যে এ রান করেছেন তিনি। ৭৬ বলে ৭টি চারের সাহায্যে ৬৬ রানের ইনিংস খেলেছেন অধিনায়ক কোহলি। ইংল্যান্ডের পক্ষে ৫৫ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নিয়েছেন লিয়াম প্লাঙ্কেট। ২টি উইকেট পান ক্রিস ওকস।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগান। মাঠে নামার আগেই সুসংবাদ পায় দলটি। ইনজুরি কাটিয়ে একাদশে ফিরলেন জেসন রয়। শুধু ফিরলেনই না, ইংল্যান্ডের সুসময়ও যেন ফিরিয়ে আনলেন। বেয়ারস্টোর সঙ্গে দলকে এনে দিলেন উড়ন্ত সূচনা। ওপেনিং জুটিতেই আসে ১৬০ রান। অতিরিক্ত ফিল্ডার রবিন্দ্র জাদেজার দারুণ ক্যাচে ভাঙে ইংলিশদের ওপেনিং জুটি। লংঅনে দারুণ ক্যাচ ধরেছেন তিনি।

৫৭ বলে ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৬ রানের ইনিংস খেলেন রয়। তবে আউট হতে পারতেন আরও আগে। ১১তম ওভারের পঞ্চম বলে ভুলটা করে ফেললেন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি। হার্দিক পান্ডিয়ার করা সে বলে রয়ের গ্লাভস ছুঁয়ে গেল উইকেটরক্ষক মহেন্দ্র সিং ধোনির হাতে। আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আম্পায়ার দিলেন ওয়াইড। তবে রিপ্লেতে দেখা আউট ছিলেন রয়। রিভিউ নিলে ৪৯ রানেই ভাঙত ইংলিশদের ওপেনিং জুটি।

দ্বিতীয় উইকেটেও রুটকে নিয়ে দারুণ ব্যাট করেন বেয়ারস্টো। গড়েন ৪৫ রানের জুটি। বেয়ারস্টোকে বিদায় করে এ জুটি ভাঙতেই অধিনায়ক ইয়ন মরগানকেও দ্রুত আউট করে ভারত। এরপর চতুর্থ উইকেটে জো রুটের সঙ্গে হাল ধরেন স্টোকস। স্কোর বোর্ডে ৭০ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটসম্যান। এরপর এ জুটি ভাঙলে এক প্রান্তে ঝড় তুলে স্কোর বড় করতে থাকেন স্টোকস।

শেষ ওভারে জাসপ্রিত বুমরাহর বলে আউট হওয়ার আগে ৫৫ বলে ৭৯ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন স্টোকস। এ রান করতে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন তিনি। তবে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১১১ রানের ইনিংস খেলেছেন বেয়ারস্টো। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটা তার অষ্টম সেঞ্চুরি হলেও বিশ্বকাপে প্রথম। চার ছক্কার ফুলঝুরি ছুটিয়ে ৯০ বলেই সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন তিনি। নিজের ইনিংসটি ১০টি চার ও ৬টি ছক্কায় সাজান তিনি। ভারতের পক্ষে ৬৯ রানের খরচায় ৫টি উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ শামি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩৩৭/৭ (রয় ৬৬, বেয়ারস্টো ১১১, রুট ৪৪, মরগান ১, স্টোকস ৭৯, বাটলার ২০, ওকস ৭, প্লাঙ্কেট ১*, আর্চার ০*; শামি ৫/৬৯, বুমরাহ ১/৪৪, চাহাল ০/৮৮, পান্ডিয়া ০/৬০, কুলদিপ ১/৭২)।

ভারত: ৫০ ওভারে ৩০৬/৫ (রাহুল ০, রোহিত ১০২, কোহলি ৬৬, পান্ত ৩২, পান্ডিয়া ৪৫, ধোনি ৪২*, কেদার ১২*; ওকস ১০-৩-৫৮-২, আর্চার ০/৪৫, প্লাঙ্কেট ৩/৫৫, উড ০/৭৩, রশিদ ০/৪০, স্টোকস ০/৩৪)।

ফলাফল: ইংল্যান্ড ৩১ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ:  জনি বেয়ারস্টো (ভারত)।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

8h ago