নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়েই সেমিতে ইংল্যান্ড
প্রথম পাঁচ ম্যাচে চারটি জয়। তাতে মনে হয়েছিল সহজেই সেমি-ফাইনালের টিকেট পেয়ে যাবে ইংল্যান্ড। কিন্তু এরপর শ্রীলঙ্কা ও ভারতের কাছে হেরে ঘরের মাঠেই দর্শক হওয়ার শঙ্কায় পড়ে দলটি। তবে সে শঙ্কা উড়িয়ে টানা দুই ম্যাচ জিতে সেমি-ফাইনালের টিকেট কেটেছে ইংলিশরা। এদিন নিউজিল্যান্ডকে ১১৯ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে দলটি।
নিজেদের ইনিংসের শুরুটা যেভাবে শুরু করেছিল ইংল্যান্ড, সেভাবে শেষ করতে পারেনি। তাতে রানের পাহাড় গড়ার সম্ভাবনা জাগিয়েও করতে পারেনি। ৩১ ওভারে ২০০ করার পর শেষে ১৯ ওভারে রান আসে মাত্র ১০৫। তবে তারপরও ৩০৬ রানের লক্ষ্য দ্বার করায় দলটি। সে লক্ষ্য তাড়ায় ১৮৬ রানেই গুটিয়ে গেছে ইংল্যান্ড।
নিউজিল্যান্ডের হারে কার্যত শেষ হয়ে গেছে পাকিস্তানের সেমি-ফাইনাল স্বপ্নও। কারণ শেষ ম্যাচে তাদের বিশাল ব্যবধানে হারাতে বাংলাদেশকে। যা প্রায় অসম্ভব। রান রেটের ফেরে নিউজিল্যান্ডের সেমি-ফাইনাল অনেকটাই নিশ্চিত। আগে ব্যাট করে ৩৫০ করলে বাংলাদেশকে ৩১১ রানে হারাতে হবে পাকিস্তানকে।
এদিন শুরুতেই ইংলিশ বোলারদের তোপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। দলীয় ১৪ রানেই শেষ দুই ওপেনার। এরপর তৃতীয় উইকেটে ৪৭ রানের জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়েছিলেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ও রস টেইলর। কিন্তু ৮ রানের ব্যবধানে এ দুই উইকেট হারালে বড় চাপে পড়ে যায় দলটি। টম লাথামের সঙ্গে জেমস নিশামের ৫৪ রানের জুটি গড়েছিলেন জেমস নিশাম। কিন্তু এ জুটি ভাঙতেই আবার ৫ রানের ব্যবধানে জোড়া উইকেট হারায় দলটি। আর তাতেই এক প্রকার পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যায় দলটির।
সপ্তম উইকেটে অবশ্য লাথামের সঙ্গে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন মিচেল স্যান্টনার। ৩৬ রানের জুটি গড়েছিলেন তারা। কিন্তু এ জুটি ভাঙতেই মূলত শেষ হয়ে যায় কিউইদের ইনিংস। শেষ চার উইকেট হারায় তারা ২২ রানে। ফলে ১৮৬ রানে অলআউট হয়ে যায় দলটি।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন লাথাম। ৬৫ বলে ৫টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। এছাড়া টেইলর ২৮ ও উইলিয়ামসন ২৭ রান করেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে ৩৪ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নিয়েছেন মার্ক উড।
এদিন টসটা জিতেছিল ইংল্যান্ডই। ব্যাটিং স্বর্গে আগে ব্যাট করতেই নামে তারা। শুরুটাও দুর্দান্ত। দুই ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টোর ব্যাটে চড়ে পায় উড়ন্ত সূচনা। ওপেনিং জুটিতে আসে ১২৩ রান। এরপর এ জুটি ভাঙলেও দ্বিতীয় উইকেটে জো রুটের সঙ্গে বেয়ারস্টোর ৭১ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় দলটি। ৩০ ওভার শেষে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রান করে ফেলে দলটি। কিন্তু এরপরই হতাশার গল্প।
দুই পেসার ম্যাট হেনরি ও ট্রেন্ট বোল্টের বোলিং তোপে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দলটি। ফলে শেষ ২০ ওভারে রান আসে মাত্র ১১১। মরগান ছাড়া আর কোন ব্যাটসম্যানই দায়িত্ব নিতে পারেননি। ফলে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩০৫ রান।
দারুণ ব্যাটিংয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন বেয়ারস্টো। ৯৯ বলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১০৬ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ১৫টি চার ও ১টি ছক্কায় নিজের ইনিংসটি সাজান এ ওপেনার। আরেক ওপেনার জেসন রয়ের ব্যাট থেকে আসে ৬০ রান। ৬১ বলে ৮টি চারের সাহায্যে এ রান করেন রয়। এছাড়া ৪২ রান করেন অধিনায়ক ইয়ন মরগান। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন বোল্ট, হেনরি ও জেমস নিশাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩০৫/৮ (রয় ৬০, বেয়ারস্টো ১০৬, রুট ২৪, বাটলার ১১, মরগান ৪২, স্টোকস ১১, ওকস ৪, প্লাঙ্কেট ১৫*, রশিদ ১৬, আর্চার ১*; স্যান্টনার ১/৬৫, বোল্ট ২/৫৬, সাউদি ১/৭০, হেনরি ২/৫৪, গ্রান্ডহোম ০/১১, নিশাম ২/৪১)।
নিউজিল্যান্ড: ৪৫ ওভারে ১৮৬ (গাপটিল ৮, নিকোলস ০, উইলিয়ামসন ২৭, টেইলর ২৮, লাথাম ৫৭, নিশাম ১৯, গ্রান্ডহোম ৩, স্যান্টনার ১২, সাউদি ৭*, হেনরি ৭, বোল্ট ৪; ওকস ১/৪৪, আর্চার ১/১৭, প্লাঙ্কেট ১/২৮, উড ৩/৩৪, রুট ০/১৫, রশিদ ১/৩০, স্টোকস ১/১০)।
ফলাফল: ইংল্যান্ড ১১৯ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: জনি বেয়ারস্টো (ইংল্যান্ড)।
Comments