আমেরিকা-চীন বাণিজ্য যুদ্ধে লাভের সম্ভাবনা বাংলাদেশের

US China Trade War
স্টার ফাইল ছবি

চীন-যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্য যুদ্ধে লাভবান হতে পারে বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান ও দক্ষিণ কোরিয়া।

চীনে তৈরি পণ্যের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপ করা বাড়তি শুল্ক এড়াতে দেশটি থেকে আমদানি কমিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো এখন দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর দিকে ঝুঁকছে। ফলে চীনের হারানো বাজার ধরার সুযোগ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য।

গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে চীন থেকে ১২ শতাংশ কম পণ্য আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে ভিয়েতনাম থেকে আমদানি বেড়েছে ৩৬ শতাংশ, বাংলাদেশ থেকে ১৪ শতাংশ, তাইওয়ান থেকে ২৩ শতাংশ ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ১২ শতাংশ।

আমদানি শুল্ক বাড়ানোয় বেসবল ক্যাপ, ব্যাগ, মোটরসাইকেলের মতো চীনা পণ্য আমেরিকানদের জন্য ব্যয়বহুল হয়েছে। এগুলো ছাড়াও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও ইলেকট্রনিক পণ্য, যেমন- ওয়াশিং মেশিন, ডিশ ওয়াশার, হেয়ার ড্রায়ার, ওয়াটার ফিল্টার ইত্যাদির ওপরও ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে বাড়তি শুল্ক।

গত মে মাসে চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা এসেছিল ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে। ২০০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয় এমন বেশ কিছু পণ্যের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করেছিলেন ট্রাম্প। শুল্ক বাড়ানোর যুক্তি হিসেবে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যে চীন তার অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে।

সেই সঙ্গে স্মার্টফোন, খেলনা, ফুটওয়্যার ও মাছের মতো পণ্যের ক্ষেত্রেও আমদানি শুল্ক বাড়ানোর হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। অবশ্য গত সপ্তাহে জাপানে জি-২০ সম্মেলনে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর বাড়তি শুল্ক স্থগিত করার ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক এখন ‘ঠিক রাস্তাতেই’ আছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণার পর মে মাসে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের এক জরিপে দেখা যায়, বাড়তির শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ৪০ শতাংশ কোম্পানি চীন থেকে তাদের কারখানা সরিয়ে নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে। আর ইতিমধ্যে যারা চীন ছেড়েছে তাদের এক চতুর্থাংশই পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে গিয়েছে। মাত্র ছয় শতাংশ কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা সরিয়ে নিয়ে গেছে।

যদিও ট্রাম্প শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার আগে থেকেই বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান চীন ছাড়তে শুরু করেছিলো। এর কারণ, চীনে সস্তা শ্রম আর সেভাবে সহজলভ্য নয়। বরং চীনের চেয়ে অনেক কম খরচে পাশের দেশগুলো থেকে পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। এ কারণেই ভিয়েতনাম থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। তাইওয়ান ও দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের ইলেক্ট্রনিক্স বাজারের চাহিদা পূরণ করছে।

অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারে কর্তৃত্ব বজায় রাখতে চীন ও আমেরিকার যে আলোচনা-সমঝোতার চেষ্টা আর কথার যুদ্ধ চলছে, তাতে লাভবান হচ্ছে বাংলাদেশসহ চারটি এশীয় দেশ।

তবে, মুক্তবাজার অর্থনীতির এই বিশ্বে ওয়াশিংটন বা বেইজিং কেউই যে সহজে কর্তৃত্ব ছাড়বে না তা পরিষ্কার।

Comments

The Daily Star  | English

Govt dissolves NBR as per IMF proposal

An ordinance published last night disbands NBR and creates two new divisions

3h ago