কারো ঘর পুড়ছে, আমি আলু পোড়া দিয়ে খাবো- ওই চিন্তা আমার নাই: প্রধানমন্ত্রী

আজ (৮ জুলাই) গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে আমেরিকা-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ ও চীনের কাছ থেকে নেওয়া ঋণ-বিষয়ক এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের পররাষ্ট্রনীতি কিন্তু খুব পরিষ্কার। সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়। আপনারা লক্ষ্য করে থাকবেন- আমরা সরকারে আসার পর থেকে সেটা কিন্তু সম্পূর্ণভাবে মেনে চলছি। সবার সাথে আমাদের ভালো বন্ধুত্ব।”
৮ জুলাই ২০১৯, রাজধানীর গণভবনে চীন সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

আজ (৮ জুলাই) গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে আমেরিকা-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ ও চীনের কাছ থেকে নেওয়া ঋণ-বিষয়ক এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের পররাষ্ট্রনীতি কিন্তু খুব পরিষ্কার। সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়। আপনারা লক্ষ্য করে থাকবেন- আমরা সরকারে আসার পর থেকে সেটা কিন্তু সম্পূর্ণভাবে মেনে চলছি। সবার সাথে আমাদের ভালো বন্ধুত্ব।”

তিনি আরো বলেন, “কার সাথে কার কী যুদ্ধ, কার সাথে কার কী মনোমালিন্য, কার সাথে কী ঠুকাঠুকি- ওটা তো আমার দেখার দায়িত্ব না। আমার দেখার দায়িত্ব যে আমার দেশের উন্নয়নে কে আমাকে সহযোগিতা করছে, কে অবদান রাখছে বা কার সাথে আমার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। এমনকী, আপনারা এটাও দেখেন যে মিয়ানমারের এতো বড় একটা ঝামেলা আমাদের কাঁধে পাঠালো। আমরা কিন্তু, মিয়ানমারের সঙ্গে ঝগড়া করতে যাইনি। বরং আমরা আলোচনা চালিয়ে গেছি। এখনো আমরা আলোচনা চালচ্ছি বা কথা বলছি।”

“আমি একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই চলতে চাই,” উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এক সময় সবচেয়ে বড় বন্ধু ছিলো আমেরিকা আর চীন। এখন আবার আমেরিকা আর চীনের সাথে বাণিজ্যযুদ্ধ। আমাদের চেষ্টা থাকবে কে, কী করলো- সেটা দেখা না। আমরা কতোটুকু আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি করতে পারি। আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। আর সেই সুযোগটা আমরা কোথা থেকে পাবো- আমার সেটাই বিবেচ্য বিষয়। আর সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কিন্তু আমরা কাজ করি।”

“এখন কারো ঘর পুড়ছে দেখে আমি আলু পোড়া দিয়ে খাবো- ওই চিন্তা কিন্তু আমার নাই। আমার নিজের দেশের নীতি নির্ধারণে আমরা চলবো,” যোগ করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “আরেকটা হচ্ছে যে- একটা কথা আছে ‘ডেথ ট্র্যাপ’- ঋণ দিয়ে…। এ ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সতর্ক। আমাদের কিন্তু বৈদেশিক ঋণের বোঝাটা খুব বেশি না। আমাদের জিডিপির মাত্র ১৪ ভাগ হলো আমাদের ঋণ। এবং সেটাও আমরা সময় মতো পরিশোধ করে যাই। আজ পর্যন্ত আমরা এখানে কোনোদিন ব্যর্থ হইনি। কাজেই আমরা যা নেই তা হিসেব করে নেই। আমাদের যে বাজেট- এই বাজেটের ৯৯ ভাগ আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে করি। আমাদের যে বার্ষিক উন্নয়ন বাজেট তার ৯০ ভাগই আমরা আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করি।”

পদ্মাসেতুর প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পদ্মাসেতু কিন্তু আমাদের টাকায় আমরা করে যাচ্ছি। হ্যাঁ, চীনের কন্সট্রাকশন কোম্পানি পদ্মাসেতুটা তৈরি করে দিচ্ছে। আমরা কিন্তু পেমেন্ট দিচ্ছি। আমাদের বিভিন্ন প্রকল্প বিভিন্নভাবে বাস্তবায়ন করছি। বিভিন্ন দেশ আমাদেরকে যেভাবে সহযোগিতা করছে সেটা আমরা নিচ্ছি। কিন্তু, নেওয়ার সময় এ বিষয়টায় আমরা সবসময় সতর্ক থাকি… আমাদের বাজেটের ডেফিসিট কিন্তু এই ১০টা বছর ৫ শতাংশের কমই হয়। আমরা এ ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্ক। ওই সতর্ক অবস্থায় দেশকে কিন্তু আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।”

“আজকে ৫ লক্ষ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট আপনাদের দিতে পেরেছি। আর ২ লক্ষ ২ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট এর ভেতরে। আমাদের জিডিপি আজকে ৮ দশমিক ১ ভাগ। বিশ্বে বাংলাদেশ একটি দেশ যে তার জিডিপি ৮ দশমিক ১ ভাগে উন্নীত করতে পারছে। নিজের ভালোটা দেখতে পারেন না কেনো? নিজের ভালোটা একটু বলেন- মানুষে শুনুক। চীনের প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত বললেন।”

“আমাদের দেশে কিছু লোক আছে তাদের তো কোনো কিছুই ভালো লাগে না। তারা ভালো না লাগার বেরামে ভুগছেন। ওটার কি বিহিত আছে আমি জানি না। তাদের কোনোটাই ভালো লাগে না,” যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

14h ago