রিজার্ভ ডেতে গেল ভারত-নিউজিল্যান্ডের বাকি খেলা

স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও কোন সুখবর মেলেনি। আবহাওয়ার উন্নতি না হওয়ায় কাটঅফ টাইমের খানিক আগে তাই ভারত-নিউজিল্যান্ডের সেমিফাইনাল ম্যাচ রিজার্ভ ডেতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও কোন সুখবর মেলেনি। আবহাওয়ার উন্নতি না হওয়ায় কাটঅফ টাইমের খানিক আগে তাই ভারত-নিউজিল্যান্ডের সেমিফাইনাল ম্যাচ রিজার্ভ ডেতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৬.১ ওভারে ৬ উইকেটে ২১১ রান করে নিউজিল্যান্ড। এরপরই নামে বৃষ্টি। মাঝে দু’একবার বৃষ্টির ঝাপটা কমে এলেও খেলার হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে ছিল কাটঅফ টাইম। কিন্তু ৬ ২৫ মিনিটে দুই আম্পায়ার রিচার্ড কেটেলবরো আর রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ মাঠ পর্যবেক্ষণ করে খেলা হওয়ার মতো পরিস্থিতি দেখতে পাননি। তাই ফাইনালে উঠার লড়াই রিজার্ভ ডেতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তারা। বুধবার রিজার্ভ ডেতে সকাল সাড়ে ১০টায় আবার শুরু হবে খেলা। এদিন ঠিক যেখানে থেমেছিল সেখান থেকেই চলবে বাকি খেলা।

বৃষ্টি বাগড়ার আগে  নিউজিল্যান্ডকে কোণঠাসা করে রেখেছিল ভারতীয় বোলাররা।  মন্থর উইকেট ও ভারতীয় বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের বিপরীতে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ও অভিজ্ঞ রস টেইলর ছাড়া কেউই লড়াই করতে পারেননি।

একদম শুরু থেকেই তোপের মুখে পড়ে নিউজিল্যান্ড। ভুবনেশ্বর কুমারের করা ইনিংসের প্রথম বলেই জোরালো আবেদন। তাতে অবশ্য সাড়া দেননি আম্পায়ার। পরে রিভিউ নিয়েও সফল হয়নি ভারত। বেঁচে যান ওপেনার মার্টিন গাপটিল।

ইনিংসের প্রথম দুটি ওভার মেডেন তুলে নেন ভুবনেশ্বর ও জাসপ্রিত বুমরাহ। রানের খাতা খুলতে কিউইদের অপেক্ষা করতে হয় ১৭তম বল পর্যন্ত। চতুর্থ ওভারে গাপটিলের উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। ১৪ বল খেলে ১ রান করেন আসর জুড়ে রানখরায় থাকা এই ডানহাতি বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান। বুমরাহর বলে দ্বিতীয় স্লিপে দারুণ ক্যাচ নেন ভারতের দলনেতা বিরাট কোহলি।

এরপর থেকে শুরু হয় কিউইদের অতি সাবধানী ব্যাটিং। প্রথম পাওয়ার প্লের দশ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে মাত্র ২৭ রান তোলে তারা। বাউন্ডারি আসে মোটে দুটি। চলতি বিশ্বকাপে প্রথম দশ ওভারে এটাই সবচেয়ে কম রানের রেকর্ড। আগের রেকর্ড ছিল ভারতের দখলে। এজবাস্টনে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দশ ওভারে ২৮ রান তুলেছিল দলটি।

দ্বিতীয় ও তৃতীয় উইকেটে দুটি ভালো জুটি পায় কিউইরা। কিন্তু রানের গতি তোলার হার বাড়েনি। শুরুতে ভুবনেশ্বর-বুমরাহর আঁটসাঁট বোলিংয়ের পর ইনিংসের মাঝে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন রবীন্দ্র জাদেজা। তাই উইকেট হাতে থাকলেও চালিয়ে খেলতে পারেননি নিকোলস-উইলিয়ামসন-টেইলররা।

হেনরি নিকোলসকে নিয়ে ৮৯ বলে ৬৮ রানের জুটি গড়ার পর অধিনায়ক উইলিয়ামসন ১০২ বলে ৬৫ রান যোগ করেন অভিজ্ঞ টেইলরের সঙ্গে। নিকোলস করেন ৫১ বলে ২৮ রান। জাদেজার বল তার ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে আঘাত করে স্টাম্পে।

উইলিয়ামসন তুলে নেন আসরে নিজের দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি (সেঞ্চুরি রয়েছে দুটি)। ছয়টি চারের সাহায্যে করেন ৯৫ বলে ৬৭ রান। এই ইনিংস খেলার পথে চলতি আসরের ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে পাঁচশো রান ছুঁয়ে ফেলেন তিনি। পয়েন্টে জাদেজার হাতে ক্যাচ বানিয়ে উইলিয়ামসনের উইকেটটি নেন যুজবেন্দ্র চাহাল।

মারকুটে জিমি নিশাম ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ঝড় তুলতে পারলে নিউজিল্যান্ডের কচ্ছপ গতির রান রেট কিছুটা বাড়তে পারত। কিন্তু কেউই থিতু হতে পারেননি। নিশাম ১৮ বলে ১২ রান করে শিকার হন হার্দিক পান্ডিয়ার। ডি গ্র্যান্ডহোমের ১০ বলে ১৬ রানের সম্ভাবনাময় ইনিংসের ইতি টানেন ভুবনেশ্বর।

উইলিয়ামসনের বিদায়ের পর লড়াইটা তাই একাই চালান টেইলর। ৭৩ বলে ফিফটি তুলে নেওয়ার পর হাত খুলতে শুরু করেন তিনি। ফলে ৪২তম ওভারে গিয়ে প্রথমবারের মতো কিউইদের রান রেট চার ছুঁয়ে ফেলে! বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে টেইলরের রান ছিল ৮৫ বলে ৬৭। অপর প্রান্তে টম ল্যাথাম ছিলেন ৩ রানে। ইনিংসের শেষ ৬.১ ওভারে আসে ৫৬ রান।

এ ম্যাচের আগে চলতি বিশ্বকাপের আরও পাঁচটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে। সবগুলোতেই জিতেছিল প্রথমে ব্যাটিং করা দল। তবে ম্যাচগুলোতে দেখা গিয়েছিল রান উৎসব। আগে ব্যাট করে সর্বোচ্চ ৩৯৭ রান করেছিল স্বাগতিক ইংল্যান্ড, সর্বনিম্ন ২৬৮ স্কোর ভারতের। তবে এদিন খেলা হচ্ছে নতুন উইকেটে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউজিল্যান্ড: ২১১/৫ (৪৬.১ ওভারে) (গাপটিল ১, নিকোলস ২৮, উইলিয়ামসন ৬৭, টেইলর ,৬৭*, নিশাম ১২, ডি গ্র্যান্ডহোম ১৬, ল্যাথাম ৩*; ভুবনেশ্বর ১/৩০, বুমরাহ ১/২৫, হার্দিক ১/৫৫, জাদেজা ১/৩৪, চাহাল ১/৬৩)।

(বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত)

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago