আ. লীগ জনগণকে অবহেলা করে দেশ পরিচালনা করে না: প্রধানমন্ত্রী

PM
১২ জুলাই ২০১৯, গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের জনগণকে অবহেলা করে দেশ পরিচালনা করে না বরং মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছে এবং সুখ দুঃখে সবসময় জনগণের পাশে থেকেছে।

তিনি বলেন, “আমরা মানুষকে অবহেলা করে কখনও দেশ পরিচালনা করিনি। মানুষের সুখ দুঃখের সঙ্গি হয়ে বিপদে তাদের পাশে দাঁড়ানো আর মানুষের কল্যাণে এবং উন্নয়নে কাজ করেছে।”

তিনি বলেন, “এই নীতি নিয়েই আমরা কাজ করি বলেই আজকে দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।”

উন্নয়নের এই ধারাটা যেন বজায় থাকে সেজন্য সকলকে একযোগে কাজ করে যাওয়ার ও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা গতকাল (১২ জুলাই) বিকেলে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের সভাপতিত্বকালে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “কাজেই আমরা এটাই চাইব যে, আমাদের এই রাজনৈতিক দল, যে দল জনগণের কথা বলার মধ্যদিয়ে গড়ে উঠেছিল। আর যে দলটিকে সুসংঘটিত করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। সেই স্বাধীনতার সুফল প্রত্যেক মানুষের ঘরে পৌঁছাবো।”

তিনি বলেন, “মানুষের জীবন-মান উন্নত হবে, এই বাংলাদেশের একটি মানুষও দরিদ্র, গৃহহারা থাকবে না, বিনা চিকিৎসায় কষ্ট পাবে না এবং সার্বিকভাবে এই দেশ হবে একটা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “হ্যাঁ আমরা খুব বড় বড় দেশের মত দৃশ্যত উন্নয়ন হয়তো করতে পারবো না। কিন্তু আমাদের প্রতিটি মানুষই তার জীবনটাকে অর্থবহ করবে, দারিদ্রের হাত থেকে মুক্তি পাবে, সুন্দরভাবে বাঁচতে পারবে, তাদের জীবনের লক্ষ্যগুলো অন্তত পূরণ হবে। সেইভাবে আমাদের দেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে চাই। যেটা জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল।”

তিনি এ সময় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের বিয়োগান্তক ঘটনা স্মরণ করে বলেন, “জাতির পিতা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে যেভাবে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তাতে তিনি জীবিত থাকলে আর ৫/৬ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নত হত। কিন্তু, ঘাতকরা তা হতে দেয়নি।”

তিনি বলেন, “তারা জাতির পিতাকে সপরিবারে কেবল হত্যাই করেনি দেশের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ধূলিসাৎ করে দেশের অগ্রগতির সব পথ রুদ্ধ করে দিতে চেয়েছিল। কারণ জাতির পিতার হত্যাকারীরা কোনদিন এ দেশের স্বাধীনতাতেই বিশ্বাসী ছিল না। তাইতো তারা ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে।”

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশ আবার বিশ্বে তার হৃত গৌরব ফিরে পেয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা ধাপে ধাপে এগিয়ে এ পর্যন্ত এসেছি। একটি লক্ষ্য স্থির করে নিয়মের মধ্য দিয়ে ধাপে ধাপে যে সব কিছুই অর্জন করা সম্ভব সেটা আমরা প্রমাণ করেছি।”

তিনি বলেন, “গত ১০ বছরে আমরা উন্নয়নের গতিধারা ধীরে ধীরে এগিয়ে নিয়ে এসেছি বলেই হোঁচট খাই নাই বা পিছিয়ে যাই নাই। বা হঠাৎ করে আমরা বড় লাফ (জাম্প) করতে যাইনি। যে কারণে টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়েছে বাংলাদেশ।”

শেখ হাসিনা দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, “আমরা বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়তে চাই। সে পরিকল্পনাও আমাদের রয়েছে।”

তিনি এ সময় দলের উপদেষ্টাদের দলের ‘থিংক ট্যাংক’ আখ্যায়িত করে তাদেরকে আরো সক্রিয় হবার আহ্বান জানান।

দেশব্যাপী অতি বর্ষণ চলতে থাকায় তার সরকার পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে এবং যেকোন প্রয়োজনে তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং মোকাবেলায় তার সরকারের প্রস্তুতি ও সাফল্য তুলে ধরেন।

এ সময় ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সে সময় সরকারের কোনরূপ পদক্ষেপ গ্রহণের আগেই বিরোধী দলে থাকা আওয়ামী লীগ দুর্গত জনগণের পাশে এসে দাঁড়ায়।”

তখনকার সরকার প্রধান হিসেবে খালেদা জিয়ার ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষয়-ক্ষতির কথা তিনি (শেখ হাসিনা) সংসদে তুলে ধরলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী (খালেদা জিয়া) বলেন, “ঘূর্ণিঝড়ে যত মানুষ মারা যাওয়ার কথা ছিল, তত মানুষ মারা যায় নাই।”

শেখ হাসিনা প্রশ্ন করেন, “কত মানুষ মারা গেলে আপনার তত মানুষ হবে।”

“এত বড় যে ঝড় বয়ে গেল, যেন তারা জানেই না, মানুষকে এ ধরনের অবহেলা আওয়ামী লীগ করে না,” যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী এ দিনও কেবল বিরোধিতার স্বার্থে বিরোধিতাকারী দেশের উন্নয়ন চোখে না পড়া বিশেষ স্বার্থান্বেষী মহলের তীব্র সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, “এদের কোন কিছুই ভাল লাগে না। দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বজায় থাকুক এটা তারা চায় না। গণতন্ত্র থাকলে তাদের যেন দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। কারণ অস্বাভাবিক অবস্থা বিদ্যমান থাকলেই তাদের যেন দামটা বাড়ে।”

Comments

The Daily Star  | English

Depositors leave troubled banks for stronger rivals

Depositors, in times of financial uncertainty, usually move their money away from troubled banks to institutions with stronger balance sheets. That is exactly what unfolded in 2024, when 11 banks collectively lost Tk 23,700 crore in deposits.

9h ago