‘ভুল দল নির্বাচন প্রক্রিয়ার’ শিকার রাহি!

মাশরাফি মর্তুজার মতে, বলে কয়ে দুই দিকে বল স্যুয়িং করাতে পারেন না-কি বাংলাদেশের একজনই মাত্র পেসার। আর এই সামর্থ্যের কারণেই এবার বিশ্বকাপের দলে চমক হয়ে জায়গা পেয়েছিলেন আবু জায়েদ রাহি। অথচ এখন এই পেসারের স্যুয়িং মুন্সিয়ানা হুট করে গায়েব হয়ে গেল কি-না, এই প্রশ্নেরই জোগাড়! কারণ রাহি দলে এলেন, আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে সুযোগ পেয়ে ৫ উইকেটও নিলেন, এরপর তো বিশ্বকাপে কেবল বেঞ্চ গরম করেছেন। শ্রীলঙ্কা সফরে তাও জুটলো না! এবার দলেই নেই তিনি, এমনকি দুইজনের চোটেও বিবেচনায় আসেননি। তাকে দলে নেওয়া এবং বাদ দেওয়া দুটো নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।
Abu jayed Rahi
ছবি: AFP

মাশরাফি মর্তুজার মতে, বলে কয়ে দুই দিকে বল স্যুয়িং করাতে পারেন না-কি বাংলাদেশের একজনই মাত্র পেসার। আর এই সামর্থ্যের কারণেই এবার বিশ্বকাপের দলে চমক হয়ে জায়গা পেয়েছিলেন আবু জায়েদ রাহি। অথচ এখন এই পেসারের স্যুয়িং মুন্সিয়ানা হুট করে গায়েব হয়ে গেল কি-না, এই প্রশ্নেরই জোগাড়! কারণ রাহি দলে এলেন, আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে সুযোগ পেয়ে ৫ উইকেটও নিলেন, এরপর তো বিশ্বকাপে কেবল বেঞ্চ গরম করেছেন। শ্রীলঙ্কা সফরে তাও জুটলো না! এবার দলেই নেই তিনি, এমনকি দুইজনের চোটেও বিবেচনায় আসেননি। তাকে দলে নেওয়া এবং বাদ দেওয়া দুটো নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।

প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন রাহির বাদ পড়ায় কন্ডিশনের দায় দিয়েছেন। তবে সাবেক দুই অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু আর আমিনুল ইসলাম বুলবুলের মতে দুর্ভাগ্য আর অন্যায়ের শিকার ডানহাতি এই পেসার। তাকে হুট করে বিশ্বকাপ দলে নেওয়া, আবার না খেলিয়ে বাদ দেওয়ার পেছনে কোনো যৌক্তিক ভাবনাও খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। এমনকি প্রশ্ন তুলেছেন দল নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়েও। 

বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে দুটি ওয়ানডে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন রাহি। তার একটিতে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে পেয়ে যান ৫ উইকেট (৫৮ রানে ৫ উইকেট)। ওটাই তার খেলা সর্বশেষ ওয়ানডে। ভাবুন, বাংলাদেশের কোনো পেসার ৫ উইকেট পাওয়ার পর থেকে আর কোনো ম্যাচ খেলারই সুযোগ পাচ্ছে না, বাদ পড়ছে একেবারে দল থেকেই!

শ্রীলঙ্কা সফরের ১৪ জনের দলে তাকে শুরু থেকেই রাখা হয়নি। উপমহাদেশে খেলা বলে হয়তো অতিরিক্ত পেসার না নেওয়ার যুক্তি ছিল। নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটেও জায়গা পাননি তিনি। মাশরাফির চোটে দলে নেওয়া হয়েছে অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজাকে। চোটে পড়ে ছিটকে যান পেস অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনও, তার বদলে দলে আসেন তাসকিন আহমেদ। 

পর্যাপ্ত না খেলিয়েই একজন পেসারকে বাদ দেওয়ার কারণ কি? প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল দ্য ডেইলি স্টারকে দিলেন সেই ব্যাখ্যা, ‘কন্ডিশনের কারণে রাহিকে রাখা যায়নি। ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে যেহেতু বল স্যুয়িং হয়, সেকারণে তাকে নেওয়া হয়েছিল। শ্রীলঙ্কায় তো খেলা হবে উপমহাদেশের কন্ডিশনে। আর মূলত তো তাসকিন চোটে পড়ায় তাকে বিশ্বকাপে নেওয়া হয়েছিল। এখন যেহেতু তাসকিন ফিট আর সিরিজ হচ্ছে শ্রীলঙ্কায় (উপমহাদেশে), তাই তাকে রাখা হয়নি। ভারতে তাসকিন বেশ ভালো বল করেছে, ছন্দে আছে।’

প্রধান নির্বাচকের এই ভাবনার সঙ্গে একমত নন সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তার মতে বল কেবল ইংল্যান্ডে নয়, মুন্সিয়ানা জানলে স্যুয়িং করানো যায় শ্রীলঙ্কাতেও, ‘ও (রাহি) ত্রিদেশীয় সিরিজে ৫ উইকেট নিয়েছে। সে প্রমাণ করেছে সে যোগ্য খেলোয়াড়। তারপর থেকে একটা ম্যাচেও বিশ্বকাপে তাকে দেখলাম না। এর দুটো কারণ হতে পারে। এক, আমাদের নির্বাচন ভুল ছিল, সেটা নির্বাচকদের স্বীকার করে নেওয়া উচিত। আরেকটা হচ্ছে, ওর সঙ্গে অন্যায় বা অবিচার করা হয়েছে।’

বাংলাদেশের প্রথম বিশ্বকাপের অধিনায়ক প্রশ্ন তুলেছেন দল নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়েও, ‘নির্বাচকটা আসলে কে। আমরা বলি দুই নির্বাচক। কিন্তু শুনি যে দলের ম্যানেজার- তিনিও নির্বাচক, কোচ নির্বাচক, আবার মাঝে মাঝে শোনা যায় বোর্ড সভাপতিও নির্বাচক। একটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটা দল নির্বাচন করা হয়। এই প্রক্রিয়ার যে ভুল সেটা আবার প্রমাণ হলো। কারণ যেটা করা হয়েছে রাহির সঙ্গে, সেটা আমরা না করলেও পারতাম।’

সাবেক অধিনায়ক গাজী আশরাফ বিষয়টা দেখছেন অন্য চোখে। তার মতে যদি নেটে তার (রাহির) বোলিংয়ে কোনো ঘাটতি থাকে, সেই ব্যাখ্যা দেওয়া হয়, তাহলে হয়তো কারণটা মেনে নেওয়ার মতো। কিন্তু শ্রীলঙ্কা সিরিজে বাদ দেওয়া নয়, বিশ্বকাপে রাহিকে না খেলানোটাই বেশি দুর্ভাগ্যজনক লিপুর কাছে, ‘আমি বলব, ৫ উইকেট পাওয়ার পরও ৮ ম্যাচে সুযোগ না পাওয়াই বেশি প্রশ্নের জন্ম দেয়। আমি মনে করি, এই সিরিজে বাদ পড়ার চেয়ে বিশ্বকাপে সুযোগ না পাওয়াটা তার জন্য বেশি দুর্ভাগ্যজনক।’

কেবল রাহির জন্য নয়, একজন পেসারকে দলে নেওয়া বা বাদ দেওয়ার পেছনে যৌক্তিক চিন্তার ছাপ দেখতে না পেয়ে বরং হতাশ লিপু, ‘এটা তাদের (নির্বাচকদের) আগের জাজমেন্টকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক আসলে। একটা খেলোয়াড়কে না খেলিয়ে বিশ্বকাপে রাখা এবং পরে যদি বাদ দিয়ে দেওয়া হয়।’

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

8h ago