লৌহজংয়ের খড়িয়ায় ভাঙছে পদ্মা

লৌহজংয়ের খড়িয়া গ্রামে পদ্মার ভাঙন। ছবি: স্টার

তিন দিনের ব্যবধানে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের খড়িয়া গ্রামের ১০টি পরিবারের ভিটেমাটি পদ্মা গর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে আরও অন্তত ২০টি পরিবার ও স্থানীয় মসজিদ।

গত শুক্র ও শনিবার ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে লোকজনকে বাড়িঘর সরিয়ে নিতে হিমশিম খেতে দেখা গেছে। ভাঙনের শিকার কুমারভোগ ইউপি সদস্য জাকির হোসেন জানান, গত দুই দিনে অন্তত ৬০ হাত জায়গা নদীতে গেছে। ভাঙনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছয়টি ঘর সরিয়ে নিতে আমাদের ভীষণ কষ্ট করতে হচ্ছে।

জাকির হোসেনের প্রতিবেশী জিন্নত আলী, সুজন শেখ ও রিমা আক্তারও একই রকমের দুর্ভোগের কথা বলেন। একই গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য রফিজউদ্দিন জানান, নদীর পাড়ে মাসের পর মাস ভারী জাহাজ ও ট্রলার ভিড়ানোর কারণে ভাঙনের মাত্রা বেড়েছে। কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি জাহাজ ভিড়ানোর বিনিময়ে পয়সা নিয়েছেন।

গত শতকের নব্বই দশকে টানা ১০ বছর পদ্মার ভাঙনে তেউটিয়া ও ধাইদা  ইউনিয়ন দুটির অধিকাংশ এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়। এরপর দুই দশক ভাঙন বন্ধ থাকে। বছর পাঁচেক আগে খড়িয়া থেকে আধা কিলোমিটার দূরত্বে বালু ফেলে শিমুলিয়া ঘাট তৈরি করা হয়। পদ্মার এই বাঁক পরিবর্তন হওয়ায় স্রোত এসে খড়িয়া গ্রামে সরাসরি আঘাত করে। তাই প্রতি বছর বর্ষাকালে নদীতে লৌহজংয়ের কোথাও না ভাঙলেও খড়িয়া ভেঙেই চলেছে।

নদীগর্ভে বিলিন হওয়ার মুখে বসতভিটা। সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে ঘর। ছবি: স্টার

ভিটেমাটি নদী ভাঙনের মুখে থাকা মাহবুব হোসেন বলেন, আমরা ত্রাণ কিংবা আর্থিক সহযোগিতা চাই না। সরকারের কাছে একটাই দাবি - নদী শাসন করে আমাদের ভিটেমাটি রক্ষা করা হোক। একই গ্রামের বাসিন্দা ফেরদৌস আলম খান বলেন, খড়িয়া গ্রাম থেকে এক কিলোমিটার দূরত্বে পদ্মা সেতুর নদী শাসনের কাজ চলছে। সেতুর হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের সঙ্গে সামান্য কিছু খরচ করে নদী শাসনের কাজ করলে এই এলাকাটা রক্ষা পেত। বেঁচে যেত আমাদের বাপদাদার ভিটেবাড়িসহ হাজারো এলাকাবাসী।

ইউএনও মোহাম্মদ কাবিরুল ইসলাম খান জানান, খড়িয়ার ভাঙন সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। এলাকাটি ইতিমধ্যেই পদ্মা সেতুর নদী শাসনের আওতায় রয়েছে। ভাঙনরোধে আগামী অর্থবছরে কাজ শুরু হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Baitul Mukarram to host five Eid jamaats

Prayer times: 7am, 8am, 9am, 10am, 10:45am

15m ago