ধ্বংসস্তূপ থেকে দলকে বাঁচিয়েও থাকল মুশফিকের আক্ষেপ

আরও একবার ব্যর্থ তামিম ইকবাল, ব্যর্থ সৌম্য সরকারও। মিডল অর্ডারে আবারও ম্রিয়মাণ মোহাম্মদ মিঠুন আর মাহমুদউল্লাহ। সবার নিস্তেজ হয়ে কুঁকড়ে মরার দিনে বুক চিতিয়ে থাকলেন কেবল মুশফিকুর রহিম। শেষ দিকে মেহেদী হাসান মিরাজকে সঙ্গী পেয়ে দলকে বাঁচালেন বিব্রতকর পরিস্থিতির হাত থেকে। শেষ পর্যন্ত খেলে গেলেন, দলকে পাইয়ে দিলেন লড়াইয়ের পূঁজি। কিন্তু তার নিজের থেকে গেল দুই রানের জন্য সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ।
Mushfiqur Rahim
ছবি: এএফপি

আরও একবার ব্যর্থ তামিম ইকবাল, ব্যর্থ সৌম্য সরকারও। মিডল অর্ডারে আবারও ম্রিয়মাণ মোহাম্মদ মিঠুন আর মাহমুদউল্লাহ। সবার নিস্তেজ হয়ে কুঁকড়ে মরার দিনে বুক চিতিয়ে থাকলেন কেবল মুশফিকুর রহিম। শেষ দিকে মেহেদী হাসান মিরাজকে সঙ্গী পেয়ে দলকে বাঁচালেন বিব্রতকর পরিস্থিতির হাত থেকে। শেষ পর্যন্ত খেলে গেলেন, দলকে পাইয়ে দিলেন লড়াইয়ের পূঁজি। কিন্তু তার নিজের থেকে গেল দুই রানের জন্য সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে পিছিয়ে বাঁচা-মরার ম্যাচে অর্ধেক পথ পড় সুখবর দিতে পারছে না বাংলাদেশ। আগে ব্যাটিং নিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে যে করতে পারে  ৮ উইকেটে ২৩৮ রান। মাঝারি এই পূঁজি আনতে মুশফিক একাই করেছেন ৯৮ রান। 

দলের বিপদে অনেকদিন মনে রাখার মতই এক ইনিংস খেলেছেন মুশফিক। বিপদ দেখে রয়েসয়ে খেলেছেন, থিতু হয়ে সচল করেছেন রানের চাকা। শেষ দিকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছেন দ্রুত০ রান বাড়ানোর। তবে তার ব্যাটিং বাদ দিলে আরও একবার হতাশার গল্পই লিখেছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। 

আগের দিন না হয় টস হেরে পরে ব্যাটিং পাওয়ার অজুহাত করা যেত। এদিন তাও না। টস জিতে নিজেদের চাওয়া মতোই ব্যাটিং পেলেন তামিম। অথচ কি বিবর্ণ শুরুটাই না করলেন তারা। বিশ্বকাপে টানা ব্যর্থতার ধারা শ্রীলঙ্কা সফরে নেতৃত্ব পাওয়ার পরও কাটাতে পারেননি তামিম। তার সঙ্গী সৌম্যেরই একই দশা।

প্রথম দশ ওভার ক্রিজ আঁকড়ে থেকে রান বাড়াবেন এমন চিন্তা থেকে শুরুতে বুঝেশোনে ব্যাট চালাচ্ছিলেন। সৌম্য অবশ্য আগ্রাসী হতে গিয়েছিলেন। কিন্তু রাউন্ড দ্যা উইকেটে এসে বল করা নুয়ান প্রদীপের ফুলটসটাই মিস করে এলবিডব্লিও তিনি।

কোন প্রক্রিয়ায় খেললে সফল হবেন তা হয়ত বুঝে পাচ্ছেন না তামিম। মাঝে মাঝে মারার অ্যাপ্রোচ দেখালেও এদিনও থাকলেন খোলস বন্দি। স্ট্রাইক রোটেট করতে তার চিরকালেরই সমস্যা, বাউন্ডারি না পাওয়াতেই তাই বাড়ল চাপ। সেই চাপ করাল ভুল। ইশুরু উদানার অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল খামাখা স্টাম্পে টেনে বোল্ড হলেন। ৩১ বল খুইয়ে রান তখন মোটে ১৯। ডট বলের পুরনো রোগ থেকে নিস্তার মিলল না তার। এবার বোল্ড হয়ে একটা বিব্রতকর রেকর্ডও সঙ্গী হয়েছে তামিমের। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ৩১ বার যে বোল্ড হলেন তিনি, ছাড়িয়ে গেলেন ৩০ বার বোল্ড হওয়া মাশরাফিকে।

ওয়ানডাউনে প্রস্তুতি ম্যাচে ভরসা যোগানো মোহাম্মদ মিঠুন মূল ম্যাচের পার্থক্য বুঝিয়েছেন এই ম্যাচেও। আকিলা ধনঞ্জয়ার বলে সহজ ক্যাচ উঠিয়ে বিদায়। আকিলার শিকার মাহমুদউল্লাহও। তার অফ স্পিনে কাট করতে গিয়ে ৬ রান করা মাহমুদউল্লাহর অফ স্টাম্প গেল। বাংলাদেশের দিনটি যে কেমন হতে যাচ্ছে ততক্ষণে পরিষ্কার যেন তাও।

মুশফিক আগের ম্যাচের ছন্দটাই ধরে রেখেছিলেন বলে রক্ষা। সাব্বির রহমান, মোসাদ্দেক হোসেনের সঙ্গে জুটি না জমলেও মিরাজকে এদিন পেয়ে গেলেন। সপ্তম উইকেটে দুজনের ৮২ বলে ৮৪ রানের জুটিতে বাংলাদেশ পেরুতে পারল দুশোর গণ্ডি। ৪৯ বলে ৪৩ রান করে মিরাজের আউটে ভাঙে জুটি। 

মুশফিক অবশ্য একদম শেষ অবধি ব্যাট করেছেন। ৭১ বলে করেছিলেন ফিফটি। পরে অপরাজিত থাকেন ১১০ বলে অপরাজিত থাকেন ৯৮ রানে। ইনিংসের শেষ ওভারের পঞ্চম বলে দলের কথা ভেবেই এক রান নিয়েছিলেন। তাতে খেলা হয়নি শেষ বল। একটুর জন্য পাননি নিজের অষ্টম সেঞ্চুরি।

এর আগে চারে নেমে উইকেট পড়া দেখে এক পাশ ধরে রাখায় মন দিতে হয়েছিল মুশফিককে। ঝুঁকি নেওয়ার জো নেই। দলের রানরেট তাই পড়ে গেল। অন্তত লড়াই করার একটা পূঁজি পেতে ওটাই জুতসই ছিল। সেই অ্যাপ্রোচে এগিয়ে মুশফিক দলকে রাখেন পথে। তাতে যে রান এসেছে তা শক্ত না হলেও লড়াই তো করাই যায়। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ:  ৫০ ওভারে ২৩৮/৮  (তামিম ১৯,  সৌম্য ১১, মিঠুন ১২, মুশফিক ৯৮*,  মাহমুদউল্লাহ ৬, সাব্বির ১১, মোসাদ্দেক ১৩, মিরাজ ৪৩ , তাইজুল ৩, মোস্তাফিজ,; ধনঞ্জয়া ০/৩৯,  প্রদীপ ২/৫৩, উদানা ২/৫৮, কুমারা ০/৪২, আকিলা ২/৩৯)

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago